পুরুষ সঙ্গীর চাপদাড়ি
একটি পুরুষের চাপদাড়ি অনেক সময়ই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। দূর থেকে দেখতে মনমুগ্ধকর মনে হলেও, সেই দাড়ির স্পর্শ যখন ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে আপনার ত্বকের সংস্পর্শে আসে, তখনই অনেক নারী তার ক্ষতিকর প্রভাব অনুভব করেন। একটি সাধারণ চাপদাড়ি, যেটি একসময় চমৎকার মনে হত, তা হঠাৎ করে ত্বকের অস্বস্তি ও জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। সঙ্গীর গাল, গলা, কিংবা ঠোঁটের চারপাশে দাড়ির খোঁচায় যে সমস্যা হতে পারে, তা অনেকেই জানেন না। ত্বকের এমন সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয় ‘বিয়ার্ড বার্ন’।
বিয়ার্ড বার্ন একটি সাধারণ সমস্যা হলেও অনেক সময় এটি অস্বস্তি ও ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ত্বকের একটি অংশ রক্তবর্ণ হয়ে ফুলে যেতে পারে, এবং অনেক সময় ক্ষতস্থানে জ্বালা বা চুলকানির অনুভূতি হয়। তবে, বিয়ার্ড বার্ন কি আসলেই অ্যালার্জি? চিকিৎসকদের মতে, এটি অ্যালার্জি নয়, বরং একটি ত্বকের সমস্যা যা দাড়ির সংস্পর্শে আসার কারণে ঘটে। দিল্লির চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ড. ভিনু জিন্দাল জানিয়েছেন, “এটি আসলে একটি ধরনের ডার্মাটাইটিস, যা ত্বক ও দাড়ির সংস্পর্শে আসে।” এমনকি, দাড়ির খোঁচা কেবল চুম্বনেই নয়, সাধারণভাবে গালের সংস্পর্শেও হতে পারে।
বিয়ার্ড বার্নের ফলে ত্বকে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রথমত, দাড়ির খোঁচায় ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে এবং সেখানে ছোট ছোট দানা বেরোতে শুরু করতে পারে। দ্বিতীয়ত, এই অংশের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে পড়ে এবং অনেক সময় খোসাও ওঠে। তৃতীয়ত, ত্বক চুলকাতে পারে, যা অত্যন্ত অস্বস্তিকর।
এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টির পর সাধারণত ঘরোয়া টোটকায় এর সমাধান করা যায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, কিছু ঘরোয়া উপাদান এই সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ঘরোয়া টোটকা
১) অ্যালো ভেরা: অ্যালো ভেরার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে, যা ত্বককে শান্ত করে।
২) বরফ বা ঠান্ডা জল: ক্ষতস্থানে বরফ বা ঠান্ডা জলের সেঁক দিলে লালচে ভাব ও জ্বালা কমে। এটি ত্বকের অস্বস্তি দূর করে।
৩) নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল: এই তেলগুলো ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে। এগুলো ত্বকের উপকারিতা বাড়ায় এবং অস্বস্তি কমায়।
৪) মধু: মধুর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল উপাদান ক্ষতস্থানে প্রলেপ দেওয়ার জন্য উপকারী। এটি সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে।
৫) ওটমিল: স্নানের জলে ওটমিল মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এটি ত্বকের প্রদাহ কমিয়ে দেয় এবং লালচে ভাব ও ফোলা ভাব সারাতে সাহায্য করে।
যদিও এই ঘরোয়া উপাদানগুলি অনেক ক্ষেত্রেই কার্যকরী, তবে যদি সমস্যা গুরুতর হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উত্তম। বিয়ার্ড বার্ন একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এটি কোনওভাবে উপেক্ষা করা উচিত নয়। ত্বককে রক্ষা করতে এবং সুস্থ রাখতে সময়মতো ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

