Sunday, February 23, 2025

ধৃত বাংলাদেশি নাগরিকের সাথে জঙ্গি-যোগ? ধোঁয়াশা কাটেনি

Share

ধৃত বাংলাদেশি নাগরিকের

কলকাতায় সম্প্রতি একটি বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়ে শহরে অবস্থান করছিলেন। তার গ্রেফতারির পর শুরু হয়েছে এক রহস্যজনক তদন্ত, যার মধ্যে রয়েছে জঙ্গি-যোগের সম্ভাবনা। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) এখন এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে, কিন্তু গ্রেফতারির পরও অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি।

সূত্রের খবর, কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে তাদের কাছে একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছে। তবে গ্রেফতারির পর দুই দিন পেরিয়ে গেলেও, এই ব্যক্তি কেন ভুয়ো নাম ও পরিচয় দিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে অবস্থান করছিলেন, তা স্পষ্ট হয়নি। সেইসাথে, তার জঙ্গি-যোগের সম্ভাবনা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ধৃতের নাম সেলিম মাতব্বর এবং তিনি বাংলাদেশের মাদারিপুরের বাসিন্দা। তার গ্রেফতারির পর, পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি)-র সক্রিয় সদস্য। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে গণ্ডগোলের জেরে তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করেছিলেন। তবে সেলিম ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিলেন কীভাবে? পুলিশ সূত্রের দাবি, ২০২৩ সালে নদিয়া দিয়ে এ দেশে প্রবেশ করেছিলেন সেলিম, যেখানে তিনি হাবড়ার এক এজেন্টের মাধ্যমে কাঁটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের সুযোগ পান।

সেলিমের কাছে উদ্ধার হওয়া দুটি আধার কার্ডের মাধ্যমে পুলিশ তার ভারতীয় পরিচয়পত্রের ব্যাপারে আরও তথ্য পায়। প্রথমে তিনি নদিয়ার একটি ঠিকানায় আধার কার্ড তৈরি করেন এবং পরে রাজস্থানের একটি ঠিকানায় দ্বিতীয় আধার কার্ড তৈরি করেন। এরপর, ওই আধার কার্ডের ভিত্তিতে সেলিম ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেন এবং তার কাছ থেকে দিল্লির একটি ঠিকানায় বেশ কয়েকটি নথি উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশের মতে, সেলিম দাবি করেছেন যে তিনি ভারত ভ্রমণের উদ্দেশ্যে সমস্ত নথি তৈরি করেছিলেন, কিন্তু তার দীর্ঘদিন ধরে ভারতে অবস্থানের বিপুল খরচ কিভাবে পূরণ করলেন, তার কোনো স্পষ্ট উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি। পুলিশ এখন অনুসন্ধান করছে, সেলিমের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত কিনা এবং তার আসল উদ্দেশ্য কী ছিল।

এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের একটি শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, জঙ্গি-যোগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা দ্রুত এই ঘটনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করবে।

এখন পর্যন্ত, সেলিমের গ্রেফতারির পর যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে থেকে কিছু তথ্য বের হতে পারে। কলকাতা পুলিশ আশা করছে, ধৃতের মোবাইল ফোন উদ্ধার হলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে, যা তদন্তের গতি আরও ত্বরান্বিত করবে।

তবে, এই পুরো ঘটনা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে—সেলিমের সঙ্গে আর কে বা কারা জড়িত, এবং তার আসল উদ্দেশ্য কী ছিল? সেই উত্তরগুলোর জন্য এখনো অপেক্ষা করতে হবে, যখন তদন্ত আরও গভীর হবে।

Read more

Local News