রাজ কুন্দ্রার বাড়িতে ইডি
বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টির স্বামী এবং মুম্বইয়ের ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রার নাম ২০২১ সালে পর্নোগ্রাফি কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর পর থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে। সেই মামলায় তিনি দুই মাস জেলে কাটানোর পর জামিনে মুক্তি পেলেও বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি। এবার আবারও ইডি তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে।
তদন্তের পটভূমি
২০২১ সালের জুন মাসে মুম্বই পুলিশের অপরাধদমন শাখা পর্নোগ্রাফি তৈরি এবং তা বিক্রির অভিযোগে রাজ কুন্দ্রাকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ ছিল, ‘হটশট’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অশ্লীল ছবি এবং ভিডিও তৈরি করে তা বিক্রি করতেন রাজ। এই অ্যাপটি রাজের সংস্থা পরিচালিত ছিল এবং এর মাধ্যমে তৈরি পর্নোগ্রাফি ভিডিওগুলো বিদেশ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে বলে তদন্তে উঠে আসে।
মুম্বই পুলিশ জানায়, এই অ্যাপ থেকে বহু অশ্লীল কনটেন্ট উদ্ধার হয়েছে, যা বিভিন্ন সার্ভার থেকে সরানো হয়েছিল। এরপর গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপল প্ল্যাটফর্ম থেকে অ্যাপটি সরিয়ে ফেলা হয়।
ইডির অভিযানের কারণ
পর্নোগ্রাফির পাশাপাশি রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ এবং বিটকয়েন দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, এই চক্রের মাধ্যমে প্রচুর অবৈধ অর্থ উপার্জন করেছিলেন রাজ। চলতি বছরের শুরুতে ইডি তাঁর এবং শিল্পার ৯৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। অভিযোগ ছিল, বিটকয়েন দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে এই সম্পত্তি কেনা হয়েছে।
সম্প্রতি ইডি ফের সক্রিয় হয়ে পর্নোগ্রাফি এবং আর্থিক তছরুপের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। শুক্রবার রাজ কুন্দ্রার বাড়ি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে ইডি। অভিযোগ, এই চক্রের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের উৎস এবং ব্যবহারের পথ খুঁজতেই এই তল্লাশি।
রাজ কুন্দ্রার আইনি লড়াই
২০২১ সালে গ্রেফতারের পর থেকেই রাজ কুন্দ্রা নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন। তাঁর আইনজীবী আদালতে জানান, পর্নোগ্রাফি নয়, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কনটেন্ট তৈরি করাই ছিল তাঁর ব্যবসা। যদিও মুম্বই পুলিশ তাঁকে পর্নোগ্রাফি কেলেঙ্কারির মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করে।
জেলে থাকার দুই মাস পর জামিন পেলেও রাজ কুন্দ্রা এই মামলা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাননি। আর্থিক তছরুপ এবং পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত নতুন তথ্য সামনে আসায় তদন্তকারী সংস্থা তাঁর উপর নজরদারি চালিয়ে আসছে।
নতুন করে বিতর্ক
রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং নতুন করে ইডির তল্লাশি বলিউডের অন্দরে এবং শিল্পা শেট্টির পরিবারের জন্য বড় ধাক্কা। যদিও শিল্পা বরাবরই এই বিতর্ক থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন এবং প্রকাশ্যে এ বিষয়ে তেমন কিছু মন্তব্য করেননি।
এই ঘটনা শুধু রাজ কুন্দ্রার নয়, বরং বলিউডে বেআইনি কার্যকলাপ এবং আর্থিক তছরুপের বিষয়গুলিকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। ইডির এই তল্লাশি পর্নোগ্রাফি চক্র এবং আর্থিক দুর্নীতির গভীর সম্পর্কের বিষয়টি উন্মোচনে কতটা সফল হবে, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে দেশ।
শেষ কথা
রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে নতুন করে ইডির তল্লাশি প্রমাণ করে, এই মামলার নিষ্পত্তি এখনো অনেক দূরে। কেন্দ্রীয় সংস্থার সক্রিয়তা ইঙ্গিত দিচ্ছে, পর্নোগ্রাফি চক্র এবং আর্থিক তছরুপের মতো গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে আরো নতুন তথ্য সামনে আসতে পারে।

