মণিপুরে ১০ মাসের শিশুর মৃতদেহে
মণিপুরে সম্প্রতি ঘটেছে একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা, যেখানে এক পরিবারের ছ’জনের দেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সামনে এসেছে। এর মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি ছিল ১০ মাসের এক শিশু, যার দেহ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। শিশু এবং তার পরিবারের সদস্যদের দেহে যেভাবে অত্যাচার করা হয়েছে, তা দেখে শিউরে উঠছে অনেকেই।
এই ঘটনা শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর প্রকাশ্যে আসে। নিহতদের মধ্যে ছিল ১০ মাসের শিশুটি, আট বছর বয়সি একটি শিশু, এবং ৩১ বছরের এক মহিলা। পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী, ১০ মাসের শিশুটির দুটি চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছিল এবং তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন ছিল। এছাড়া, শিশুটির গলায় এমন আঘাত ছিল যে, তার মাথা দেহ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
এছাড়া, আট বছর বয়সি শিশুটির দেহে একাধিক গুলির ক্ষত ছিল এবং ৩১ বছর বয়সি মহিলার মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার মাথার এক পাশ ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল, এবং তার শরীরেও গুলির একাধিক ক্ষত ছিল।
এই ঘটনার পেছনে কুকি জঙ্গি গোষ্ঠীর হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। জিরিবাম জেলার এক মেইতেই পরিবারের ছ’জনকে অপহরণ করে নৃশংসভাবে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। অসম সীমানার কাছে এই পরিবারটি অপহৃত হয়েছিল এবং পরে তাদের দেহ নদীতে ভেসে আসে। স্থানীয়রা দাবি করেছিলেন, ওই দেহগুলি ওই পরিবারের সদস্যদের, যার মধ্যে একটি শিশু এবং একটি বৃদ্ধার দেহ ছিল।
এখন, পুলিশের হাতে এই পরিবারের তিন জনের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এসেছে, আর বাকিরা এখনও তদন্তের আওতায়। পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, মণিপুরে এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়ে যায় এবং রাজ্যের নানা স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়। ইম্ফল শহরে শাস্তির দাবিতে আন্দোলনকারীরা রাস্তায় নেমে আসে। এর পাশাপাশি, রাজ্যের বেশ কিছু বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালানো হয় এবং মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পৈতৃক বাড়িতে হামলার চেষ্টা হয়।
এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। কার্ফু জারি করা হয়েছে, এবং মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক এবং জনগণ ন্যায়বিচারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে। তদন্ত চলছে এবং পুলিশ আশা করছে দ্রুত অপরাধীদের ধরতে পারবে।

