Thursday, February 13, 2025

চড় মেরেছিলেন ম্যাচের আগে, বুকে টেনে নিলেন ম্যাচের পর, পলের বিরুদ্ধে আবেগে ভাসলেন মাইক টাইসন

Share

মাইক টাইসন

মাইক টাইসন, ৫৮ বছর বয়সী বক্সিং লিজেন্ড, রিংয়ে এখনও আগের মতোই ভয়ঙ্কর। তবে তার ব্যক্তিগত জীবনে একাধিক বিতর্ক এবং আবেগঘন মুহূর্তের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকালে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) টাইসন এবং জেক পলের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়, যা ছিল বিশ্ব বক্সিংয়ের অন্যতম উত্তেজনাপূর্ণ সাক্ষাৎ। বয়সের পার্থক্য ছিল ৩১ বছর, কারণ পল তখন ২৭, আর টাইসন ৫৮। কিন্তু টাইসন যে এখনও রিংয়ে লৌহমানব, তার প্রমাণ তিনি এই ম্যাচের আগে এবং পরেও দিয়েছেন।

শুক্রবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে টাইসন এবং পলের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। সেখানে এক মহিলা সাংবাদিক টাইসনকে প্রশ্ন করেন, “আপনি যদি হেরে যান, তাহলে কী হবে?” এর উত্তরে টাইসন সাংবাদিকের দিকে কটমট করে তাকিয়ে হঠাৎ পলকে চড় মেরে দেন। তার পরেই বলেছিলেন, “কথা শেষ।” এর মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন, তিনি কখনও বিরক্ত হলে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। টাইসনের এই আক্রমণাত্মক মনোভাব নতুন কিছু নয়; কারণ ১৯৯৭ সালে তিনি ম্যাচ চলাকালীন প্রতিদ্বন্দ্বী ইভান্ডার হোলিফিল্ডের কান কামড়ে ছিঁড়ে দিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় তাঁকে ম্যাচ থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল।

টাইসন ১৯৮৫ সালে পেশাদার বক্সিং শুরু করেছিলেন। তার কেরিয়ার প্রায় ৩৯ বছর দীর্ঘ। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। মাত্র ২০ বছর ৪ মাস ২২ দিন বয়সে তিনি হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছিলেন, যা এখনও বক্সিং ইতিহাসে একটি রেকর্ড। টাইসনের ক্যারিয়ারের মোট ৫৮টি পেশাদার ম্যাচের মধ্যে ৫০টি ম্যাচে তিনি জয়ী হয়েছেন, তার মধ্যে ৪৪টি নকআউটে। প্রথম ১৯টি ম্যাচেই তিনি নকআউট করে জিতেছিলেন, যার মধ্যে ১২টি ম্যাচ প্রথম রাউন্ডে।

তবে টাইসনের জীবন সবসময় প্রশান্তিতে ছিল না। ১৯৯২ সালে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর ছ’বছরের কারাবাস হয়েছিল তাঁর। কারাগার থেকে ফিরে তিনি আবার বক্সিংয়ে ফিরেন, এবং ২০০৫ সালে অবসর নেন। তবে বিতর্ক তাকে ছাড়েনি। ২০২২ সালে বিমানে এক সহযাত্রীকে মেরে আলোচনায় আসেন তিনি। ওই সহযাত্রী মত্ত অবস্থায় টাইসনকে উত্ত্যক্ত করছিলেন এবং জল ছুঁড়েছিলেন, ফলে টাইসন রেগে গিয়ে তাকে মারধর করেন।

শনিবারের ম্যাচে যদিও টাইসন জয়লাভ করতে পারেননি, জিতেছিলেন ২৭ বছরের তরুণ জেক পল। তবে, পলের বিরুদ্ধে তার আবেগের প্রকাশ এবং প্রাক্তন চ্যাম্পিয়নের সেই আগের মতো আক্রমণাত্মক মনোভাব আজও ক্রীড়াজগতের আলোচনায় রয়ে গেছে। টাইসনের এই আবেগঘন মুহূর্তগুলো, তার জীবনের উত্তেজনা এবং বিতর্ক, এখনও এক অমোঘ দাগ রেখে গেছে বক্সিং ইতিহাসে।

Read more

Local News