শাওয়ারের নীচে যুগল স্নানের ইচ্ছে
স্নানঘরের কাচঘেরা শাওয়ারের নীচে প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানোর পরিকল্পনা অনেকেরই থাকতে পারে। কিন্তু সেই রোমান্টিক মুহূর্তে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে জল, বিশেষ করে তার তাপমাত্রা। সম্প্রতি এই বিষয়টি নিয়ে সমাজমাধ্যমে শুরু হয়েছে চর্চা। বেশির ভাগ পুরুষ জানিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গিনীরা গরম জলে স্নান করতে পছন্দ করেন। তবে সেই গরম জল অনেকের কাছে সহ্যের বাইরে।
স্নানের জলে দ্বন্দ্বের কারণ
পুরুষদের অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গিনীদের পছন্দের জলের তাপমাত্রা এতটাই বেশি যে, তা শরীরে ছেঁকা দেওয়ার মতো লাগে। মজা করে একজন নেটপ্রভাবী, মিকা, জানান, “আমার স্ত্রী সারার স্নানের জলের তাপমাত্রা এমন, যাতে একটা গোটা টার্কিও সেদ্ধ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু সারার এতে কোনো অস্বস্তি হয় না, বরং আরাম লাগে। এই কারণেই আমরা কখনো একসঙ্গে স্নান করি না।”
চিকিৎসকদের বিশ্লেষণ
এই বিষয়টি শুধু মজার নয়, এর নেপথ্যে রয়েছে শারীরবৃত্তীয় কারণ। চিকিৎসকরা বলছেন, মহিলারা সাধারণত গরম জলে স্নান করতে পছন্দ করেন, যা তাঁদের শরীরের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার একটি অংশ। লন্ডনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের চিকিৎসক সরমদ মাজ়হার জানিয়েছেন, মহিলাদের শরীর পুরুষদের তুলনায় তাপমাত্রার প্রতি বেশি সংবেদনশীল।
ঋতুচক্র ও তাপমাত্রার সংবেদনশীলতা
চিকিৎসকদের মতে, মহিলাদের শরীরের সংবেদনশীলতা ঋতুচক্রের বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। ডিম্বস্ফোটনের সময় শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে এবং হাত-পায়ে রক্তসঞ্চালনও বেড়ে যায়। এই পর্যায়ে ঠান্ডা সহ্য করার ক্ষমতা কম থাকে। আবার ঋতুচক্র শেষ হওয়ার পরে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
পুরুষ-মহিলাদের তাপমাত্রার পার্থক্য
পুরুষদের শরীরের তাপমাত্রা মহিলাদের তুলনায় কম সংবেদনশীল। তাই তাঁরা ঠান্ডা বা স্বাভাবিক জলে স্নান করতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। অন্যদিকে, মহিলাদের ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন হরমোনের প্রভাব এবং শরীরের ভেতরের উত্তাপ বেশি হওয়ায় গরম জলে স্নান তাঁদের জন্য আরামদায়ক।
স্নানের জল: মজার একটি সামাজিক আলোচনা
স্নানের জলের তাপমাত্রা নিয়ে যুগলের মধ্যে তর্ক নতুন কিছু নয়। তবে এটি এমন একটি বিষয় যা যুগলদের হাস্যরসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে রসিকতার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও উঠে এসেছে। অনেকে বলছেন, সমাধান হিসেবে পালাক্রমে স্নান করার উপায় বেছে নেওয়া যেতে পারে।
স্নানের সময় জলের তাপমাত্রা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুধু মজার বিষয় নয়, এটি আমাদের শরীরের ভিন্ন চাহিদার প্রতিফলন। তাই সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ছোটখাটো বিষয়গুলো নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করাই ভালো। একে অপরের পছন্দের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সমাধান খুঁজে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

