মহাশূন্য থেকে আসবে অদৃশ্য শক্তিশেল
চিনের সামরিক উন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ করেছে তাদের সদ্য উন্মোচিত ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান। ১২ নভেম্বর ২০২৪ থেকে গুয়াংডং প্রদেশে আয়োজিত ঝুহাই এয়ার শো-তে প্রকাশ্যে আসে এই অত্যাধুনিক বিমান। যুদ্ধবিমানটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘শ্বেত সম্রাট’ বা হোয়াইট এম্পারার। এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন অফ চায়না (এভিআইসি) নির্মিত এই বিমানটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মহাকাশ থেকে সরাসরি আক্রমণ চালানোর ক্ষমতা।
কী বিশেষত্ব এই বিমানের?
‘শ্বেত সম্রাট’ মহাকাশ ও পৃথিবীর মধ্যকার সীমানা ভেদ করে আক্রমণ চালাতে সক্ষম। এর নকশায় ব্যবহার করা হয়েছে ‘ইন্টিগ্রেটেড স্পেস এয়ার ফাইটার’ প্রযুক্তি, যা একে একাধারে উচ্চগতি সম্পন্ন ও কার্যক্ষম করে তুলেছে। ককপিটে রয়েছে অত্যাধুনিক অ্যাভিয়োনিক্স ব্যবস্থা। সুপারসনিক গতির এই বিমান লেসার অস্ত্র এবং মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে এমন ভাবে আক্রমণ করতে পারে যা খালি চোখে বা রাডারে ধরা পড়া প্রায় অসম্ভব।
ঝুহাই এয়ার শো-তে প্রদর্শন
ঝুহাই এয়ার শো-তে প্রদর্শিত এই বিমানের মডেলটি প্রোটোটাইপ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ভবিষ্যতে আরও উন্নত প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে কার্যকর হতে পারে। এরই মধ্যে চিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস দাবি করেছে যে, ‘বাইদি’ নামে পরিচিত এই বিমান মহাকাশে গিয়ে নিখুঁতভাবে আক্রমণ চালাতে সক্ষম।
প্রতিযোগিতায় আমেরিকা
এখনও পর্যন্ত বিশ্বের অন্য কোনো দেশের হাতে ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই ‘বি-২১ রাইডার’ এবং ‘এসআর-৭২ ব্ল্যাকস্টার’ নামে দুটি উন্নত প্রযুক্তির বিমান নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। লকহিড মার্টিনের তৈরি এই বিমানগুলি শব্দের চেয়ে ছ’গুণ বেশি গতিতে চলতে সক্ষম।
ভারতের অবস্থান
ভারতের হাতে এমন কোনো যুদ্ধবিমান না থাকলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অস্ত্রাগারে উপস্থিত কৃত্রিম উপগ্রহ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে মহাশূন্যে শ্বেত সম্রাটকে ধ্বংস করা সম্ভব।
প্রশ্ন উঠছে কার্যকারিতা নিয়ে
যদিও অনেক বিশেষজ্ঞ বেজিংয়ের এই দাবি নিয়ে সন্দিহান। মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে আক্রমণ চালানোর ক্ষমতা রয়েছে এমন প্রমাণ এখনও দেখানো হয়নি। ফলে শ্বেত সম্রাটের কার্যকারিতা পুরোপুরি পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
চিনের এই ধরনের উন্নয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। তবে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এই প্রতিযোগিতা বিশ্ব রাজনীতির মানচিত্রে এক নতুন অধ্যায় সূচিত করবে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

