কানাডার হনুমান মন্দিরে হামলা
সম্প্রতি কানাডার অন্টারিওর ব্র্যাম্পটন শহরে একটি হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা দেশের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অভিযোগ উঠেছে, উন্মত্ত খালিস্তানিরা মন্দিরে ঢুকে দর্শনার্থীদের উপরে হামলা চালিয়েছে। হামলার ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কিছু ব্যক্তি খলিস্তানি পতাকা নিয়ে সেখানে প্রবেশ করে উপস্থিত লোকজনের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
হামলার চিত্র
ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি হাতে খলিস্তানি পতাকা নিয়ে লাঠি দিয়ে মন্দিরের লোকজনকে মারধর করছে, এবং অন্যান্য কয়েকজনও লাঠি নিয়ে হামলা চালাচ্ছে। হামলার সময় মহিলাদের চিৎকার শোনা গেছে, যা পরিস্থিতির অমানবিক দিককে ফুটিয়ে তোলে। এই ঘটনার পরে ব্র্যাম্পটনের সেই মন্দিরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কানাডা সরকারের প্রতিক্রিয়া
এখনো পর্যন্ত কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘটনার বিষয়ে কোন মন্তব্য করা হয়নি, এবং ভারত সরকারেরও কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। কিন্তু এই ধরনের ঘটনার ফলে প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি বাড়ছে। বিশেষ করে, কানাডার মতো একটি দেশে যেখানে ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলা হয়, সেখানে এই ধরনের হামলা মানানসই নয়।
হামলার স্থান
যেখানে এই হামলা ঘটেছে, সেখানে ৫৫ ফুট উচ্চতার একটি হনুমান মূর্তি রয়েছে। মন্দিরের পুরোহিত সম্প্রতি বলেছিলেন যে, মন্দিরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে এবং রাতেও নজরদারি রাখা হবে। তবে তিনি আরো জানিয়েছেন, কিছু লোক হনুমান মূর্তি তৈরির বিরোধিতা করেছে।
ধর্মীয় সম্প্রীতির সংকট
পুরোহিত জানিয়েছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় হিন্দুধর্মকে নিশানা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে পুরসভা ও স্থানীয় নিয়ম অনুযায়ী।” এটি একটি সামাজিক বিষয়, যা প্রমাণ করে যে স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতি এবং সম্প্রীতির সংকট রয়েছে।
অতীতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি
ব্র্যাম্পটনে এই হামলা প্রথম নয়। ফেব্রুয়ারিতে, সেখানকার এক রাম মন্দিরে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল এবং ভারতবিরোধী স্লোগান তোলা হয়েছিল। এই ঘটনার ফলে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে এবং তারা নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন।
ভবিষ্যতের জন্য সতর্কতা
কানাডার সমাজে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে টানাপোড়েন বাড়তে পারে। সরকারের উচিত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। মন্দিরগুলোকে সুরক্ষিত রাখা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিৎ।
ট্রুডোর প্রতিক্রিয়া
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এখনও এই ঘটনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি, কিন্তু দেশের স্বাভাবিক সামাজিক শান্তি বজায় রাখার জন্য তার সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করা কানাডার অন্যতম মৌলিক নীতির একটি, এবং সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যে, সবার বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা এবং নিরাপত্তা রয়েছে।
এই হামলার ঘটনাটি শুধুমাত্র ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নয়, বরং একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে দেখা উচিত। কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়কে উচিত একটি স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশে তাদের ধর্ম পালন করতে দেওয়া।