দীপাবলির দূষিত শহরের তালিকায় নয়াদিল্লি
দীপাবলি উদযাপনের ঠিক পরেই নয়াদিল্লি বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে। সুইজারল্যান্ডের সংস্থা ‘আইকিউএয়ার’ এর রিপোর্ট অনুযায়ী, দিল্লির বাতাসের গুণমান এতটাই খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে যে সকাল দশটায় দিল্লির আনন্দ বিহার স্টেশনে একিউআই (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) রেকর্ড ৩৮৮-এ পৌঁছেছিল। এই মান আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এবং জনস্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে।
দূষণের ভয়াবহতা কমানোর উদ্দেশ্যে দিল্লি সরকার আগে থেকেই বাজি ফাটানোয় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। কিন্তু তবুও অনেক বাসিন্দা দীপাবলিতে বাজি ফাটানোর বিষয়টি উপেক্ষা করেছেন। এর ফলেই দিল্লির বাতাসের মান দ্রুত অবনতি ঘটেছে। বর্তমানে দিল্লির বিভিন্ন অংশে একিউআই ৩৫০-এর ওপরে পৌঁছে গেছে—যেমন আয়া নগরে ৩৫২, জাহাঙ্গিরপুরিতে ৩৯০ এবং দ্বারকায় ৩৭৬।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের উচ্চ মাত্রার বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন ধরে এই ধরণের দূষণ শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর মধ্যে শীর্ষে নয়াদিল্লি
আইকিউএয়ারের তালিকায় দিল্লির পরে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, তৃতীয় স্থানে চিনের বেজিং, চতুর্থ স্থানে বাংলাদেশের ঢাকা এবং পঞ্চম স্থানে চিনের উহান। ভারতের আরও একটি শহর, মুম্বাই, এই তালিকার ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। এই পরিস্থিতি ভারতের বেশ কয়েকটি শহরে বায়ুদূষণের ভয়াবহতা প্রতিফলিত করছে।
দিল্লি সরকারের উদ্যোগ ও মন্ত্রীর বক্তব্য
দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রাই জনসাধারণের দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “নাগরিকরা দায়িত্বশীলভাবে দীপাবলি উদ্যাপন করেছেন, যার ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায়নি।” তবে তিনি স্বীকার করেন যে দিল্লির বাতাসের মান দীর্ঘদিন ধরেই “খুব খারাপ” ক্যাটেগরিতে রয়েছে। তবে এবারের দীপাবলিতে দূষণ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হলেও, তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি জানান, “দিল্লির বাসিন্দা ও সরকারি কর্মীদের সহযোগিতায় এই দূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে।”
তবে পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যায়, এই বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির মিল পাওয়া কঠিন। গত বছরের তুলনায় এই বছরের দীপাবলিতে দিল্লির গড় একিউআই ছিল অনেক বেশি। ২০২৩ সালের দীপাবলিতে দিল্লির গড় একিউআই ছিল ২১৮, যেখানে এবার তা পৌঁছেছে ৩২১-এ। ২০২২ সালে একিউআই ছিল ৩১২। অর্থাৎ দূষণ নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দিল্লির বাতাসের মানের অবনতি ঠেকানো সম্ভব হয়নি।

