Monday, December 1, 2025

রতন টাটার ১০ হাজার কোটির সম্পত্তি পেলেন কারা? ইচ্ছাপত্রে কি ছিল তাঁর সিদ্ধান্ত?

Share

রতন টাটার ১০ হাজার কোটির সম্পত্তি পেলেন কারা?

ভারতীয় শিল্পজগতের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র রতন টাটা ৯ অক্টোবর প্রয়াত হন। তাঁর মৃত্যুর পর সৃষ্টিশীল টাটা সাম্রাজ্যে এক বিশাল শূন্যতা দেখা দেয়। অপ্রসন্ন এবং অকৃতদার রতন টাটার কোনো উত্তরাধিকারী না থাকায়, তাঁর ব্যক্তিগত ১০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির ভবিষ্যৎ নিয়েও কৌতূহল সৃষ্টি হয়। রতনের সৎভাই নোয়েল টাটা তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়ে টাটা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হয়েছেন।

রতনের ইচ্ছাপত্রে কী ছিল?

রতন টাটা মৃত্যুর আগে নিজের সম্পত্তির বিষয়টি নির্দিষ্ট করার জন্য একটি উইল বা ইচ্ছাপত্র তৈরি করে যান। এই ইচ্ছাপত্রের মাধ্যমে জানা যায়, রতন টাটার এই বিপুল সম্পত্তি এবং অন্যান্য সম্পদ কাদের জন্য রেখে গিয়েছেন তিনি। এই উইল বাস্তবায়নের দায়িত্ব রতন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও পারিবারিক সদস্যদের উপর অর্পণ করেছেন।

প্রিয় পোষ্য টিটোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা

রতন টাটার জীবনে তাঁর পোষ্য কুকুর, জার্মান শেফার্ড টিটো, ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়। ইচ্ছাপত্রে টিটোর আজীবন যত্ন ও ভরণপোষণের জন্য আর্থিক ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কয়েক বছর আগে তাঁর আরেক পোষ্য মারা গেলে টিটোকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন রতন, এবং এই পোষ্য পরিণত হয় তাঁর ছায়াসঙ্গীতে।

সহকর্মী ও সহচরের জন্য দান

শুধু টিটোই নয়, বরং রতনের সহকারী, রাঁধুনি রাজন সাউ এবং পরিচারক সুব্বিয়া, যারা বছরের পর বছর ধরে তাঁর পাশে ছিলেন, তাঁদেরকেও ইচ্ছাপত্রে বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়েছে। টিটোর দেখভালের দায়িত্বভারও রাজন সাউয়ের উপর অর্পিত হয়েছে।

সহচর শান্তনু নাইডু ও তাঁর স্টার্টআপ

প্রয়াত শিল্পপতি রতনের জীবনের শেষ দিনগুলোতে শান্তনু নাইডু নামের এক সহচর ছিলেন তাঁর সবচেয়ে কাছের মানুষ। ইচ্ছাপত্রে শান্তনুর স্টার্টআপ ‘গুডফেলোজ’-এ টাটার অংশীদারিত্ব হস্তান্তর করা হয় এবং শান্তনুর উচ্চশিক্ষার খরচও রতন টাটার সম্পদ থেকে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

পরিবারের সদস্যদের জন্য সম্পত্তির অংশ

রতনের ভাই জিম্মি টাটার জন্যও সম্পত্তির একটি অংশ রেখে গিয়েছেন তিনি। তাঁর দুই সৎবোন, শিরিন এবং ডায়ানা, এই সম্পদের মধ্যে কিছু অংশ পাবেন। বাকি সম্পত্তি প্রধানত টাটা ফাউন্ডেশনের নামে রাখা হয়েছে, যা সমাজকল্যাণের কাজে ব্যবহৃত হবে।

রতন টাটার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ও দানপ্রীতি

জুহু এবং কোলাবায় অবস্থিত তাঁর মূল্যবান বাড়ি, স্থায়ী আমানত, টাটা সন্সের শেয়ারসহ একাধিক স্থাবর সম্পত্তি তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহের অংশ। তিনি নিজ হাতে টাটা গ্রুপের অধীনে মুম্বইয়ে ভারতের প্রথম পশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। এতে তাঁর সমাজকল্যাণে অঙ্গীকার এবং মানবতার প্রতি ভালবাসা প্রকাশ পায়।

ইচ্ছাপত্রের বাস্তবায়নকারী

রতন টাটার এই ইচ্ছাপত্রের বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁর সৎবোন শিরিন, ডায়ানা জিজিবয়, তাঁর আইনজীবী দারিয়াস খাম্বাটা এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু মেহলি মিস্ত্রির হাতে। মেহলি ছিলেন রতনের একান্ত ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন একজন ব্যক্তি।

রতন টাটা তাঁর জীবনে সমাজকল্যাণে অনেক কিছুই বিলিয়ে দিয়েছেন এবং তাঁর এই উদ্যোগ ভারতীয় ধনকুবেরদের কাছে একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।

Read more

Local News