ইএসআই হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপণ
গত শুক্রবার ভোরে শিয়ালদহের ইএসআই হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হাসপাতালে ভর্তি ক্যানসার আক্রান্ত রোগী উত্তম বর্ধনের মৃত্যু একটি নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে এখন পুলিশ গভীর তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সংস্থার আধিকারিকদের ডেকে পাঠানো হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, অগ্নি নির্বাপণের কিছু নতুন কাজ চলছিল। তবে ছয় মাসের মধ্যে সেই কাজ শেষ করার কথা থাকলেও, এক বছর পরেও তা সম্পূর্ণ হয়নি। তদন্তকারীরা জানতে চাচ্ছেন, হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপণের জন্য আসলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
শুক্রবারের অগ্নিকাণ্ডে উত্তমের মৃত্যু নিয়ে তার পরিবার অভিযোগ করেছে যে, ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদিও তা অস্বীকার করেছিল। কিন্তু শনিবার উত্তমের দেহের ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মৃত্যুর ইঙ্গিত পাওয়া যায়, যেখানে ফুসফুসে কার্বনের উপস্থিতি ছিল। এর ভিত্তিতে উত্তমের মেয়ে মাম্পি বর্ধন অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, “আমার বাবার মৃত্যু যদি স্বাভাবিক হত, তাহলে ফুসফুসে কার্বন থাকত না। আমরা ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। পুলিশ বলেছে, দু-এক দিনের মধ্যে রিপোর্ট আমাদের হাতে আসবে।”
এই ঘটনায় শিয়ালদহের ইএসআই হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। নারকেলডাঙা থানার পুলিশ ইতিমধ্যে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে। হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডের তদন্তের জন্য ফরেন্সিক পরীক্ষা হয়েছে।
হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর কাজ ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল, তবে তা এখনও শেষ হয়নি। হাসপাতালের সুপার অদিতি দাস জানিয়েছিলেন, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সংস্থা ঠিকমতো কাজ করছে না বলে একাধিক বার অভিযোগ করেছেন তিনি।
পুলিশ বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণের কাগজপত্র খতিয়ে দেখছে এবং এর ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তদন্তকারী আধিকারিকরা বলছেন, “আমরা সব দিকগুলো খতিয়ে দেখছি এবং সকলের সঙ্গে কথা বলব।”
অন্যদিকে, হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন যে, যত দ্রুত সম্ভব পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে এবং সোমবার থেকে বহির্বিভাগের পরিষেবা আবার চালু করা হবে।