জুনিয়র ডাক্তারদের চিঠি
১৩ দিন ধরে ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলের সামনে অনশন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা এবং অন্যান্য ডাক্তাররা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রশ্ন তুললেন, কেন তিনি একবারও তাঁদের কাছে আসেননি এবং তাঁদের ১০ দফা দাবি পূরণের দিকে নজর দেননি।
সায়ন্তনী বলেন, “আমরা গত ১৩ দিন ধরে শুধুমাত্র জল খেয়ে আছি। ওআরএস বা গ্লুকোজও গ্রহণ করছি না। আমাদের কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কি একবারের জন্যও আমাদের কথা ভাবছেন না? আমরা দেখেছি, তিনি দুর্গাপুজোয় মেতে আছেন। উনি আমাদের প্রতি এত নিষ্ঠুর কেন?” তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ১০ মিনিটের সময় প্রয়োজন, কিন্তু তিনি সেই সময়ও দিচ্ছেন না। সাধারণ মানুষ আমাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কি একবারও শুকনো মুখের দিকে তাকাচ্ছেন?”
শনিবার সোদপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ‘ন্যায়যাত্রার’ ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সায়ন্তনী উল্লেখ করেন, “আমরা জানি, সাধারণ মানুষ আমাদের সমর্থন করবেন। কিন্তু আমরা মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া কী পাব? আমরা ১৩ দিন ধরে শুধুমাত্র জল খেয়ে বসে আছি।”
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি এবং সমর্থন জরুরি বলে দাবি করেছেন সায়ন্তনীরা। রবিবার ধর্মতলায় আরও বেশি মানুষের জমায়েত করার জন্য ডাক দিয়েছেন তাঁরা। সায়ন্তনী বলেন, “আপনারা এসে আমাদের পাশে দাঁড়ান। আমাদের শরীর ক্রমশ ভেঙে যাচ্ছে। আমরা ক্ষুব্ধ শুধু খিদে নয়, বিচার দাবিতে। আমাদের আন্দোলনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই, সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন। কিন্তু যিনি আমাদের পাশে থাকার কথা, তিনি আসছেন না।”
সায়ন্তনী এও জানান, “অনেকেই প্রশ্ন করছেন, আমরা আর কতদিন না খেয়ে থাকব। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকেও একই প্রশ্ন করতে চাই। আর কতদিন আমরা এই অবস্থায় থাকব? প্রত্যেক ফোঁটা চোখের জলের হিসাব দিতে হবে।”
অন্যদিকে, রুমেলিকা কুমার জানান, “৭০ দিন ধরে আন্দোলন চলছে এবং ১৩ দিন ধরে অনশন। যা হচ্ছে, তা হওয়ার কথা ছিল না। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীই দায়ী।”
উল্লেখ্য, ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় অনশন শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রথমে ছ’জন ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেছিলেন, পরে আরও এক জন যোগ দেন। বর্তমানে সাত জন অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন এবং উত্তরবঙ্গেও অনশনরত ডাক্তাররা রয়েছে। জল ছাড়া কিছুই খাচ্ছেন না এই ডাক্তাররা, এবং সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে স্বচ্ছতা বজায় রাখা হচ্ছে।