Monday, December 1, 2025

মহাকুম্ভ ২০২৫: কুম্ভমেলায় মুসলিম দোকানদারদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিলেন সাধুসন্তরা

Share

মহাকুম্ভ ২০২৫

মহাকুম্ভ ২০২৫ এখনও অনেকটা দূরে, কিন্তু তার আগেই অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদের একটি শাখা স্পষ্ট বার্তা দিয়ে রেখেছে। এলাহাবাদে আগামী বছর মকর সংক্রান্তি থেকে শুরু হতে চলা মহাকুম্ভকে কেন্দ্র করে সাধুসন্তরা জানিয়েছেন, কোনো অহিন্দুকে খাবারের দোকান খুলতে দেওয়া হবে না। এই চেতাবনি দিয়েছেন নিরঞ্জনী আখাড়া গোষ্ঠীর সাধু স্বামী রবীন্দ্র পুরি। সম্প্রতি প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মুসলিমদের দোকান খোলা নিয়ে বিরোধিতা

মহাকুম্ভে মুসলিম বা অন্য কোনও অহিন্দুকে খাবারের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হবে না, এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাধুসন্তরা। স্বামী রবীন্দ্র পুরি এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “সরকারকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে মহাকুম্ভে কারা খাবার বিক্রি করবে। যদি অহিন্দুদের খাবারের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে সনাতন ধর্মের মানুষ চুপ করে থাকবে না। এই পরিস্থিতিতে নাগা সাধুরা তাদের শাস্তি দেবেন।”

এই হুঁশিয়ারি মূলত কুম্ভমেলার ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে রক্ষা করার জন্য দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বামী রবীন্দ্র পুরি। তিনি বলেন, “মহাকুম্ভ একটি বিশুদ্ধ ধর্মীয় এবং সনাতনী অনুষ্ঠান। এখানে অন্য কোনও ধর্মের লোকেদের দোকানদারির অনুমতি দিলে, তা আমাদের ধর্মীয় ঐতিহ্যের ওপর আঘাত হানবে।”

উত্তর প্রদেশ সরকারের ভূমিকা

প্রতি বছরের মতো মহাকুম্ভ উপলক্ষে বিশাল ব্যবস্থাপনা করে থাকে উত্তর প্রদেশ সরকার। কুম্ভমেলার সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে নিরাপত্তা, যানবাহন এবং অন্যান্য পরিষেবার আয়োজন করে থাকে। যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন সরকারও এবার মেলার নিরাপত্তা এবং অন্যান্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে ব্যস্ত। তবে, এ পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের বিতর্ক বা সমস্যা সৃষ্টি না হলেও, এবারের মহাকুম্ভের আগে সাধুসন্তদের এই নতুন দাবি পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সাধুসন্তদের এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিত

সাধুসন্তদের এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে অনেকেই বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন। কিছু ধর্মীয় নেতা মনে করেন, কুম্ভমেলা সর্বধর্মের মানুষের জন্য উন্মুক্ত হওয়া উচিত, কারণ এটি সারা পৃথিবী থেকে মানুষকে আকর্ষণ করে। তবে সাধুসন্তরা তাঁদের দাবিতে দৃঢ়। তাঁরা মনে করেন, কুম্ভমেলা হিন্দুদের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক, এবং এখানে অহিন্দুদের দোকানদারি সেই ঐতিহ্যের ওপর আঘাত হানবে।

কুম্ভমেলার গুরুত্ব

মহাকুম্ভমেলা ভারতের বৃহত্তম ধর্মীয় জমায়েত, যেখানে লক্ষ লক্ষ ভক্ত একত্রিত হয়ে স্নান করেন এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন। এটি প্রতি ১২ বছরে একবার অনুষ্ঠিত হয় এবং এর ঐতিহাসিক, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব অপরিসীম। মহাকুম্ভে সারা পৃথিবী থেকে ভক্ত এবং দর্শনার্থীরা সমবেত হন, যা ভারতীয় সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের এক অপূর্ব উদাহরণ।

এবারের মহাকুম্ভকে কেন্দ্র করে সাধুসন্তদের এই হুঁশিয়ারি পরিস্থিতিকে কতটা প্রভাবিত করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সরকারের ওপর এই বিষয়ে চাপ বাড়তে শুরু করেছে এবং মেলার আগে এই ইস্যু নিয়ে আরও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।

Read more

Local News