🧠🦷 দাঁতের জীবাণুই কী চিহ্নিত করবে অটিজ়ম? গবেষণায় চমকপ্রদ সাফল্যের দাবি!

দাঁতের জীবাণুই কী চিহ্নিত করবে অটিজ়ম?

অটিজ়ম—একটি জটিল স্নায়বিক অবস্থার নাম, যার লক্ষণ ও নির্ণয় এতটাই সূক্ষ্ম ও বিভ্রান্তিকর যে বহু ক্ষেত্রেই তা দেরিতে ধরা পড়ে। অনেক সময় বাবা-মায়েরাও শিশুর ব্যতিক্রমী আচরণকে ‘স্বাভাবিকের বাইরে’ ভেবে গুরুত্ব দেন না। ফলে সঠিক সময়ে চিকিৎসার সুযোগও হাতছাড়া হয়। কিন্তু এবার এই চিরাচরিত ধারা ভাঙার সম্ভাবনা তৈরি করেছে এক নতুন গবেষণা।

হংকং ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা দাবি করেছেন, মুখে থাকা কিছু নির্দিষ্ট ব্যাক্টেরিয়া বিশ্লেষণ করলেই জানা সম্ভব, কোনও শিশু অটিজ়মে আক্রান্ত কি না। অর্থাৎ দাঁতের ভিতরে থাকা জীবাণু এবার সাহায্য করতে পারে শিশুদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে।

অটিজ়ম নির্ণয়ে বিপ্লব: ‘মাইক্রোবায়োম বায়োমার্কার’ প্রযুক্তি

হংকং ও আমেরিকার যৌথ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, অটিস্টিক শিশুদের মুখে থাকা ১১টি বিশেষ ব্যাক্টেরিয়ার প্রজাতি অন্য শিশুদের থেকে আলাদা। এই ব্যাক্টেরিয়াগুলির উপস্থিতি থেকেই নির্ধারণ করা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট শিশু অটিজ়মে আক্রান্ত কি না।

এই পদ্ধতির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাইক্রোবায়োম বায়োমার্কার’। এই নতুন প্রযুক্তি দিয়ে বর্তমানে ৮১ শতাংশ পর্যন্ত নির্ভুল অটিজ়ম নির্ণয় করা সম্ভব বলে দাবি করছেন গবেষকেরা। ইতিমধ্যেই হংকংয়ে ৪৯ জন অটিস্টিক শিশুর মধ্যে এই পরীক্ষার সফল প্রয়োগ করা হয়েছে।

দাঁতের পরীক্ষাই হতে পারে ভবিষ্যতের ডায়াগনস্টিক চাবিকাঠি?

গবেষকদের মতে, যেহেতু অটিজ়ম আক্রান্ত শিশুদের শুধু মানসিক নয়, শারীরিক নানা সমস্যা দেখা যায়— যেমন পেটের সমস্যা, ঘন ঘন রোগভোগ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার দুর্বলতা—তাই এই উপসর্গগুলির সঙ্গে যুক্ত জীবাণুর উপস্থিতি থেকেই রোগ ধরা সম্ভব।

তাঁরা বলছেন, শিশুদের নিয়মিত দাঁতের পরীক্ষা করলেই ভবিষ্যতে এমন অনেক রোগেরই প্রাথমিক ধাক্কা আটকানো যাবে। শুধু দাঁত নয়, মুখের ভিতরের ব্যাক্টেরিয়া যে স্নায়বিক সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে, সেই দিকটিই এবার সামনে তুলে ধরেছেন গবেষকেরা।

এখনও চিকিৎসা নেই, কিন্তু আগেভাগে ধরা পড়লেই বড় লাভ

বর্তমানে অটিজ়মের কোনও স্থায়ী চিকিৎসা নেই। তবে প্রাথমিক অবস্থায় রোগ ধরা পড়লে বিশেষ থেরাপির মাধ্যমে শিশুকে স্বাভাবিক জীবনের দিকে ফেরানো যায় অনেকটাই। যেমন:

• অকুপেশনাল থেরাপি
• স্পিচ থেরাপি
• স্পেশ্যাল এডুকেটর লার্নিং থেরাপি

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ভবিষ্যতে এই নতুন ব্যাক্টেরিয়া-ভিত্তিক পরীক্ষার মাধ্যমে অটিজ়ম নির্ধারণের পথ অনেকটাই সহজ হয়ে উঠবে। এর ফলে শিশুদের চিকিৎসার গতি যেমন বাড়বে, তেমনই অভিভাবকদের সচেতনতাও।

শেষ কথা:

অটিজ়মকে যতটা মানসিক সমস্যা ভাবা হয়, বিষয়টি তার চেয়েও বেশি জটিল ও গভীর। এই গবেষণা যদি বাস্তব প্রয়োগেও সফল হয়, তাহলে দাঁতের ভিতরে লুকিয়ে থাকা জীবাণুই হয়ে উঠতে পারে স্নায়ুবিক বিকাশগত সমস্যার প্রাথমিক সংকেতদাতা। শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে এক নতুন আশার আলো।

চিন বাদে সব দেশের উপর শুল্কনীতি স্থগিত, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বিশ্ববাজারে ফিরল স্বস্তি