🚗 ‘বিস্ফোরণের আগে ১২ দিন ফরিদাবাদে লুকোনো গাড়ি!’ — কনট প্লেস থেকে ময়ূর বিহার পর্যন্ত ঘুরেছে সন্দেহজনক আই২০

🚗 ‘বিস্ফোরণের আগে ১২ দিন ফরিদাবাদে লুকোনো গাড়ি!’

দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই সামনে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীদের দাবি, যে সাদা রঙের হুন্ডাই আই২০ গাড়িটি বিস্ফোরণের সময় ঘটনাস্থলে ছিল, সেটি দিল্লি পৌঁছানোর আগে টানা ১২ দিন ফরিদাবাদের এক মেডিক্যাল কলেজে পার্ক করা ছিল।

এই গাড়ির গতিবিধি ঘিরে এখন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির কৌতূহল তুঙ্গে। কারণ, বিস্ফোরণের আগে গাড়িটিকে দেখা গিয়েছে দিল্লির কনট প্লেস এবং ময়ূর বিহার— দুই জনবহুল এলাকায়।

🕵️‍♂️ ফরিদাবাদের মেডিক্যাল কলেজে ১২ দিন গাড়ি

তদন্তকারীদের এক সূত্রে জানা গেছে, ২৯ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত গাড়িটি পার্ক করা ছিল ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্ মেডিক্যাল কলেজের ক্যাম্পাসে। আশ্চর্যের বিষয়, ওই সময় কলেজেরই দুই চিকিৎসকের গাড়িও সেখানে ছিল— একটির মালিক ধৃত মুজাম্মিল আহমেদ, অন্যটির নিবন্ধন ছিল মহিলা চিকিৎসক শাহিন শহিদ-এর নামে।

গাড়িটির মালিকানায় এই দুই চিকিৎসকের যোগসূত্রই এখন তদন্তের মূল কেন্দ্রবিন্দু। পুলিশের অনুমান, এই গাড়িটি থেকেই পরে লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

🧩 দিল্লির রাস্তায় ‘রেকি’-র ইঙ্গিত?

তদন্তকারীদের দাবি, ফরিদাবাদ থেকে দিল্লিতে ঢোকার পর গাড়িটিকে একাধিক জায়গায় দেখা গিয়েছে।
সোমবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ কনট প্লেসের একটি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে গাড়িটি। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে সেটি ময়ূর বিহার অঞ্চলেও দেখা যায়।

এতেই সন্দেহ আরও গাঢ়— বিস্ফোরণের আগে গাড়িটি কি রাজধানীর জনবহুল এলাকাগুলির রেকি করছিল? শুধু লালকেল্লা নয়, অন্য কোনও জায়গায়ও কি হামলার ছক ছিল?

তদন্তকারীরা বলছেন, এখন পর্যন্ত আত্মঘাতী হামলার প্রমাণ মেলেনি, তবে গোটা ঘটনাটি সুনিয়ন্ত্রিত ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

⏱️ দিল্লিতে ঢোকার সম্পূর্ণ টাইমলাইন হাতে পুলিশের

একটি সূত্র জানায়, সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় গাড়িটিকে দেখা যায় ফরিদাবাদের এশিয়ান হাসপাতালের সামনে।
সকাল ৮টা ১৩ মিনিটে এটি বদরপুর টোলবুথ পেরিয়ে দিল্লিতে ঢোকে। এরপর সকাল ৮টা ২০ মিনিট নাগাদ ওখলার মোদী মিলের সামনে একটি পেট্রল পাম্পের সিসিটিভিতেও ধরা পড়ে সেই আই২০।

তদন্তকারীদের ধারণা, গাড়িটি চালাচ্ছিলেন উমর নবি— যিনি পেশায় চিকিৎসক এবং এই মামলার মূল সন্দেহভাজন।

🧬 ডিএনএ পরীক্ষায় উমরের পরিচয় নিশ্চিত করার চেষ্টা

বিস্ফোরণে উমর নবি নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হলেও, বিষয়টি নিশ্চিত করতে তাঁর মায়ের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
সেই নমুনা মিলিয়ে দেখা হবে আই২০ গাড়ির চালকের দেহাবশেষ থেকে পাওয়া ডিএনএর সঙ্গে।

এক তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান,

“রিপোর্ট এলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে, বিস্ফোরণের সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন উমর নবি কি না।”

যদি তা সত্যি হয়, তাহলে শাহিন ও মুজাম্মিলের পাশাপাশি উমরের যোগই এই বিস্ফোরণচক্রের মূল সূত্র হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

🧨 ‘বড় ষড়যন্ত্র’ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই বলেছেন,

“দিল্লি বিস্ফোরণের নেপথ্যে একটি গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।”

এরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে এনআইএ, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো এবং ডিআরআই-কে যৌথ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

🏁 শেষকথা: ২২ গজ নয়, ২২ দিন ধরে ‘রহস্যের গাড়ি’

দিল্লির হাই-সিকিউরিটি অঞ্চলে বিস্ফোরণের ঘটনাটি এখন রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
একটি গাড়ি ১২ দিন ধরে ফরিদাবাদের মেডিক্যাল কলেজে রাখা ছিল, তারপর ঘুরেছে দিল্লির হৃদয়ে— অথচ কেউ কিছু টের পায়নি!