🔶 বিয়ের পর নারীর অবস্থান কঠিন, পুরুষের ক্ষেত্রে সহজ? অনুরাধার অকপট স্বীকারোক্তি ও টলিউড বাস্তবতা 🔶

বিয়ের পর নারীর অবস্থান কঠিন, পুরুষের ক্ষেত্রে সহজ? অনুরাধার অকপট স্বীকারোক্তি !

অর্জুন দত্তের নতুন ছবি ‘ডিপ ফ্রিজ’-এ আবীর চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করছেন অনুরাধা মুখোপাধ্যায়। ছবিতে তিনি আবীরের দ্বিতীয় স্ত্রী। এই প্রথমবার বড়পর্দায় জুটি বাঁধলেন দু’জন। চরিত্রের পরিসর ও সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নিজের ব্যক্তিগত ভাবনাও স্পষ্ট করে জানালেন অনুরাধা।

তিনি বলেন, প্রথম পক্ষের স্ত্রীর চরিত্র যেমন লেখা, তাতে তাঁকে দ্বিতীয় স্ত্রী ছাড়া আর কিছু হওয়ার সুযোগ ছিল না। তবে বাস্তবে যদি এমন পরিস্থিতি আসে? অনুরাধার উত্তর— “সবটাই নির্ভর করবে পরিস্থিতির উপর। তবু মনে মনে প্রথম স্ত্রী হওয়াকেই গুরুত্ব দেব।”

এর সঙ্গে যোগ করলেন সমাজ-বাস্তবতার এক তীক্ষ্ণ উপলব্ধি—
“ডিভোর্সি পুরুষকে পরিবারগুলো গ্রহণ করে। এমনকি সন্তান থাকলেও। কিন্তু বিবাহবিচ্ছিন্ন নারী? তাঁকে মেনে নিতে চায় না সমাজ। সন্তান থাকলে তো কথাই নেই!”

অনুরাধার অভিজ্ঞতায়, দ্বিতীয়বার বিয়ে করা বেশিরভাগ নারীর পথই কঠিন, আনন্দময় পরিণতি খুব কম দেখা যায়। তাঁর মতে, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিই এই সমস্যার মূল।

জাতীয় পুরস্কার—সুযোগ না অলঙ্কার?

২১ নভেম্বর মুক্তি পেতে চলেছে ‘ডিপ ফ্রিজ’, যা ইতিমধ্যেই জাতীয় সম্মানে সম্মানিত। এই সম্মান তাঁর কেরিয়ারে সাহায্য করবে? প্রশ্ন শুনে অনুরাধার সোজাসাপ্টা জবাব—
“আমি যদি দক্ষিণ ভারতে কাজ করতাম, নিশ্চিত বলতে পারতাম সুযোগ বাড়বে। কিন্তু কলকাতায় জাতীয় পুরস্কারের প্রভাব খুব একটা দেখা যায় না।”

তাঁর কণ্ঠে স্পষ্ট হতাশা— বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিভার মূল্যায়ন বহু সময়েই পুরস্কারের তুলনায় ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা বাণিজ্যিক ভাবনার উপর নির্ভরশীল।

আবীরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য—’কাটা দাগ’ কি অনুঘটক?

ছবিতে আবীরের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ দৃশ্য রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছিল— আবীরের গালে থাকা কাটা দাগ কি তাঁকে অভিনয়ে আরও আকর্ষিত করেছিল? শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন অনুরাধা।
তারপর বলেন—
“আবীরদা এতটাই ভদ্র, মাটির মানুষ এবং রসবোধসম্পন্ন— ওনার দাগ দেখার দরকার হয়নি! এমন মানুষকে মেয়েরা ভালোবাসবে, স্বাভাবিক।”

এই প্রথম টলিউডের প্রথম সারির নায়কের সঙ্গে কাজ করে তিনি যেমন উত্তেজিত তেমনই কৃতজ্ঞ। তাঁর কথায়, আবীর এমন পরিবেশ তৈরি করেন যেখানে নতুন অভিনেত্রীরাও স্বচ্ছন্দে অভিনয় করতে পারেন।

বাণিজ্যিক ছবি বনাম অন্যধারা—অনুরাধার অবস্থান

অনুরাধা সাধারণত অন্যধারার চরিত্রে পরিচিত— ‘নীহারিকা’, ‘সোয়েটার’, ‘গুলদস্তা’— সবই তাঁর অভিনয়পটুতা ফুটিয়ে তুলেছে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি কি বাণিজ্যিক ছবির জন্য নন?

তিনি কোয়েল মল্লিকের একটি মন্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন—
“আলিয়া ভট্ট যেমন ‘উড়তা পঞ্জাব’ ও ‘রকি অউর রানি’-তে একসঙ্গে অভিনয় করতে পারেন, তাহলে বাংলা নায়িকারা সব ধারায় কাজ করবেন না কেন?”

তিনি পরিষ্কার জানান— তাঁকে কোন ধারায় দেখা যাবে তা পরিচালক-প্রযোজকের সিদ্ধান্ত। তিনি সব ধরনের ছবিতেই স্বচ্ছন্দ, দরকার হলে ‘মশালা’ ছবিতেও গান গাইবেন, গাছের ডাল ধরে!
তবে বর্তমান দর্শকই এমন ছবি দেখেন না— তাই সুযোগ পাওয়া কম।

নিজেকে ‘নায়িকা’ হিসেবে নয়, ‘অভিনেত্রী’ হিসেবে পরিচিত করতে চান তিনি।