🔶 দিল্লি বিস্ফোরণ তদন্তে বড় সাফল্য: উমরের প্রধান সহযোগী আমিরকে গ্রেফতার করল এনআইএ

দিল্লি বিস্ফোরণ তদন্তে বড় সাফল্য!

দিল্লির লালকেল্লা বিস্ফোরণকাণ্ডে তদন্তের ষষ্ঠ দিনে অবশেষে বড় সাফল্য পেল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। ঘটনার মূল সন্দেহভাজন উমর উন-নবির অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী আমির রাশিদ আলিকে গ্রেফতার করেছে তারা। রবিবার দিল্লি থেকেই তাকে আটক করা হয়েছে। এনআইএ জানায়, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত সাদা রঙের হুন্ডাই আই২০ গাড়িটি জোগাড় করা, তা উমরের হাতে তুলে দেওয়া, এমনকি দেশজুড়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের পরিকল্পনাতেও সক্রিয় ভূমিকা ছিল আমিরের।

গাড়ির মালিকানা নিয়ে তদন্ত শুরু হতেই স্পষ্ট হয়, বহুবার হাতবদলের পর গাড়িটির শেষ রেজিস্ট্রেশন ছিল এই আমিরের নামেই। হরিয়ানার এক ব্যক্তির কাছ থেকে গাড়িটি কিনে সরাসরি উমরের হাতে তুলে দেন তিনি। তদন্তকারীরা মনে করছেন, বিস্ফোরণকাণ্ডের অন্যতম মূল লজিস্টিক সাপোর্ট ছিল আমির।

কাশ্মীরের পাম্পোরের সম্বুরা এলাকার বাসিন্দা এই আমির। তদন্তে উঠে এসেছে, উমরের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করে বিস্ফোরণের গোটা নীলনকশা তৈরি করেছিল তারা। ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক উমর এবং আমির মিলে কয়েক মাস ধরেই একটি বড়সড় নাশকতার পরিকল্পনা করছিল বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। এনআইএ জানায়, গাড়িটির ডিএনএ ও ফরেন্সিক পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে— বিস্ফোরণের সময় গাড়িতে ছিলেন উমরই। পাশাপাশি তার আরেকটি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

এখনও পর্যন্ত তদন্তকারীরা ৭৩ জন সাক্ষীর বয়ান সংগ্রহ করেছেন। দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের সঙ্গে যৌথ তদন্ত চলছে। ঘটনার পরে গোটা দিল্লি জুড়ে ৩৪টি বেওয়ারিশ গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ এবং বিভিন্ন চেকপোস্টে জারি রয়েছে কড়া নজরদারি ও তল্লাশি।

বিস্ফোরণে ব্যবহৃত গাড়িটির যাত্রাপথ তদন্তে মেলে নানা তথ্য। ২০১৪ সালে গুরুগ্রামের নাদিম নামে এক ব্যক্তি শোরুম থেকে গাড়িটি কেনেন। পরে তিনি তা বিক্রি করেন মহম্মদ সলমনের কাছে। সলমন সেটি বিক্রি করেন ওখলার বাসিন্দা দেবেন্দ্রকে, আর দেবেন্দ্র গাড়িটি ফরিদাবাদের অমিত পটেলের হাতে তুলে দেন। অমিতের কাছ থেকে ২৯ অক্টোবর গাড়িটি কেনেন আমির— এবং এই ক্রয়-বিক্রয়ের শিকড় ধরেই পুলিশ পৌঁছয় বিস্ফোরণচক্রের কেন্দ্রে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে বিস্ফোরণকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিন চিকিৎসককে এনআইএ আটক করলেও পরে তাঁদের নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মুক্তি দেওয়া হয়। দিনাজপুরের নিশারকেও ছাড়া হয়। মূলত তদন্তের কেন্দ্রবিন্দু এখন উমর এবং তার ঘনিষ্ঠদের দিকে সরে এসেছে। গত বছর থেকেই ‘আত্মঘাতী বোমারু’ খুঁজতে মরিয়া হয়ে ওঠা এই চক্র দেশের বিভিন্ন শহরে নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল বলেও উঠে এসেছে জিজ্ঞাসাবাদে।

এনআইএ-র দাবি, আমিরকে জেরা করলেই উমর উন-নবির অবস্থান, বিস্ফোরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য, এবং বড়সড় নাশকতা পরিকল্পনার পিছনের মূল মস্তিষ্ক সম্পর্কে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে। দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় এই গ্রেফতারি তাই তদন্তে এক বড় মোড় এনে দিল বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা।