শীতে ঘন দই না জমার ঝামেলা শেষ!

শীত নামতেই দই জমাতে সমস্যায় পড়েন প্রায় সব বাড়িতেই। দিনভর চেষ্টা করেও দেখা যায়— দই একেবারে জলঝরা, কখনও আবার রাতভর রেখেও জমে না। আসলে শীতের অতিরিক্ত ঠান্ডা দুধের উষ্ণতা দ্রুত কমিয়ে দেয়, যার ফলে দইয়ের দম্বল বা কালচার সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে না। গরমকালে যেখানে পাঁচ-ছ’ঘণ্টায় টাইট দই পাওয়া যায়, সেখানে শীতে সময় লাগে প্রায় দ্বিগুণ। তাই ঘরোয়া কিছু পরীক্ষিত কৌশল শিখে নিলে শীতেও সহজে দই জমবে— তাও বেশ ঘন।

নিচে দেওয়া হল কিছু কার্যকরী উপায়— সাবেকি থেকে আধুনিক, যেটি সুবিধাজনক, সেটিই বেছে নিন।

১. ক্যাসারোলে দই পাতার পুরনো কিন্তু সবচেয়ে ফলপ্রসূ পদ্ধতি

দই জমাতে সবচেয়ে বড় বাধা হল— তাপমাত্রা ধরে না রাখা। ক্যাসারোল সেই সমস্যাই দূর করে।

• প্রথমে কাচের বা মাটির পাত্রে দুধ ও দইয়ের দম্বল মিশিয়ে নিন।
• আলাদা করে ক্যাসারোলের মধ্যে গরম জল ঢেলে দিন।
• তার ভিতরে দইয়ের পাত্রটি রেখে ঢাকনা লাগিয়ে দিন।

ক্যাসারোল দীর্ঘক্ষণ উষ্ণতা ধরে রাখে, ফলে শীতেও ৬–৭ ঘণ্টায় দই জমে যায়।

২. দইকে দ্রুত ঘন করতে গুঁড়ো দুধের জাদু

দইকে ঘন এবং ক্রিমি করার এটি একটি সহজ, নির্ভরযোগ্য উপায়।

• দুধ গরম করে সামান্য ঠান্ডা হলে এক–দু’চামচ গুঁড়ো দুধ মিশিয়ে নিন।
• এখন দইয়ের সাজ যোগ করে ভালভাবে নেড়ে ঢেকে রাখুন।
• ক্যাসারোলে বা মোটা কাপড়ে জড়িয়ে রাখলে আরও দ্রুত জমবে।

গুঁড়ো দুধ দইয়ের দৃঢ়তা বাড়িয়ে দেয় এবং জল ঝরার সম্ভাবনা কমায়।

৩. চমকে যাওয়ার মতো কার্যকর— কাঁচালঙ্কার টোটকা

দই জমাতে কাঁচালঙ্কা ব্যবহারের কথা অনেকেই শোনেননি। কিন্তু এটি দারুণ কার্যকর, বিশেষ করে শীতকালে।

• দুধে দম্বল দেওয়ার পর ধোয়া ও শুকনো ডাঁটিসহ একটি কাঁচালঙ্কা পাত্রে ফেলে দিন।
• লঙ্কার ডাঁটিতে থাকা প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া দই জমতে সাহায্য করে।
• পাত্রটিকে কাপড়ে জড়িয়ে রাখলে উষ্ণতা বজায় থাকে।

কাছাকাছি সময়ে দই বেশ ঘন হয়ে আসে।

৪. দই-জমানোর বৈদ্যুতিক যন্ত্র— আধুনিক পদ্ধতির সহজ সমাধান

বাজারে এখন এমন বিশেষ ইলেকট্রিক ডিভাইস পাওয়া যায় যা দই জমানোর জন্য তৈরি।

• যন্ত্রটির স্টিলের পাত্রে দুধ ও দইয়ের সাজ দিয়ে প্লাগ অন করুন।
• ৫–৬ ঘণ্টায় দই জমবে।

তবে অনেকে অভিযোগ করেন— এতেও মাঝে মাঝে দই জল ছাড়ে। তাই দুধের সঠিক তাপমাত্রা রাখা জরুরি।

৫. মাইক্রোওভেনে দই পাতার কৌশল

যাঁদের ক্যাসারোল নেই, তাঁরা মাইক্রোওভেন ব্যবহার করতে পারেন।

• দই পেতে পাত্রটিকে মাইক্রোওভেনের ভিতরে রাতভর রেখে দিন।
• চাইলে আগে এক মিনিট মাইক্রোওভেন গরম করে নিয়ে তাপ ধরে রাখা যায়।

এভাবে সকালে বেশ জমাট দই পাওয়া যায়।

শেষ কথা

শীতে দই পাতার আসল রহস্য হল— উষ্ণতা ধরে রাখা। আপনি ক্যাসারোল ব্যবহার করুন, কাঁচালঙ্কা দিন, গুঁড়ো দুধ মেশান— সব পদ্ধতির লক্ষ্য একটাই। সঠিক তাপমাত্রা বজায় থাকলে দই অবশ্যই জমবে, আর জমবে দইয়ের মতোই ঘন!

আপনি চাইলে চাইলে আমি দই পাতার জন্য আদর্শ দুধের তাপমাত্রা বা ঝরঝরে দই ঠিক করার টিপসও দিয়ে দিতে পারি।