🔥 ব্রিসবেনে আগুন ঝরানো লড়াই: আর্চারের খোঁচায় তেতে উঠলেন স্মিথ, ছক্কা-চারে দিলেন জবাব

ব্রিসবেনে আগুন ঝরানো লড়াই!

ব্রিসবেন টেস্টের চতুর্থ দিনে অ্যাশেজ় যে উত্তাপ ছড়াবে, তা আগে কেউ ভাবেনি। প্রথম টেস্টে দুই দলের ক্রিকেটারদের স্লেজিং প্রায় দেখা যায়নি। কিন্তু ব্রিসবেনে পরিস্থিতি একেবারে বদলে গেল। ম্যাচ শেষ হওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে কথার লড়াই শুরু হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ এবং ইংল্যান্ডের গতিতারকা জফ্রা আর্চারের মধ্যে। আর্চারের তির্যক মন্তব্যে স্মিথও চুপ থাকেননি। মুখে যেমন উত্তর দিয়েছেন, তার চেয়েও জোরালো জবাব দিয়েছেন ব্যাট হাতে—চার ও ছয় মেরে।

আর্চারের বাউন্সার, স্মিথের পাল্টা উত্তর

অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে যখন লক্ষ্য তাড়া করছে, তখনই উত্তেজনার মুহূর্ত তৈরি হয়। আর্চারের এক ওভারের প্রথম বলেই স্টাইলিশ চারে সীমানা ভেদ করেন স্মিথ। তার পরের বল ছিল তীব্র বাউন্সার। স্মিথ বলটি ধরতে পারেননি। আর সেই সুযোগেই আর্চার মন্তব্য ছুড়ে দেন—
“কিসের এত তাড়া? স্কোরবোর্ড তো দ্রুত রান চাইছে না। তবে এত হিট মারছ কেন?”

এই কথায় স্মিথ ঝিমিয়ে যাননি। সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা খোঁচা দেন—
“তোমার কিছুই কাজে না লাগলে তখনই তো জোরে বল করতে শুরু করো, চ্যাম্পিয়ন!”

স্মিথের উত্তর আরও ক্ষেপে তুলেছিল ইংরেজ দলকে। একই ওভারে বেন স্টোকসের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন জেক ওয়েদারাল্ড। আম্পায়ার সইফুদ্দৌলা এসে দু’পক্ষকে শান্ত করেন।

ব্যাটই শেষ কথা: ছয়-চারে স্মিথের জবাব

মুখের কথায় থেমে থাকেননি অজি অধিনায়ক। আর্চারের তৃতীয় বলটিকে বাউন্ডারিতে পাঠালেন। আর চতুর্থ বলে বিশাল ছয়! আর্চার হতবাক। সেই ওভারের পর আর্চারকে আর বল করানো হয়নি।

এর পরের ওভারেও গাস অ্যাটকিনসনের বলে ছয় মারেন স্মিথ। মাত্র ৯ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থেকে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের পথে পৌঁছে দেন তিনি। আগে কখনও এত দ্রুত, এত আগ্রাসী স্মিথকে দেখা যায়নি বলেও দাবি ক্রিকেটবিশেষজ্ঞদের।

ছয় বছর আগের পুরনো স্মৃতি—আবার সামনে?

ক্রিকেটপ্রেমীরা জানেন, প্রায় ছয় বছর আগে আর্চারের একটি বাউন্সার স্মিথের মাথায় লাগে। সে আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে পরের টেস্টে খেলতে পারেননি স্মিথ। সেই স্মৃতি মনে করে অনেকে ভাবছিলেন, দু’জনের মধ্যে কি আবার পুরনো উত্তেজনা সামনে এলো?

কিন্তু ম্যাচশেষে প্রেস কনফারেন্সে স্মিথ হাসতে হাসতেই বললেন—
“ওর সঙ্গে আমার কোনো অতীত আছে নাকি? আমি তো কিছুই মনে করতে পারছি না!”

অস্ট্রেলিয়া চাপে নয়, চালকে খেলে

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্য ছিল স্মিথকে উত্তেজিত করে ভুল করানো। কিন্তু স্মিথ বরাবরের মতো চাপকে শক্তিতে রূপান্তরিত করেন। দ্রুত রান না লাগলেও তিনি আত্মবিশ্বাসী শট নিয়েই আর্চারের বিরুদ্ধে পাল্টা ঘুঁষি মারেন।

ম্যাচের পর স্মিথ আর বাড়তি কিছু বলতে চাননি।
“ও খুব গতিতে বল করছিল। ঠিক কী বলেছিল, মনে নেই। আমিও কী বলেছি মনে নেই। এগুলো নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই। এখানেই শেষ করি,”—এভাবেই বিতর্ক থামিয়ে দেন তিনি।