💠 টাকার পাহাড়ের লোভ উপেক্ষা! কেন ধারাবাহিক ভাবে মোটা অঙ্কের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছেন দীপিকা পাড়ুকোন?

কেন ধারাবাহিক ভাবে মোটা অঙ্কের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছেন দীপিকা পাড়ুকোন?

বলিউডে তিনি এখন প্রথম সারির তারকা। জনপ্রিয়তা, সৌন্দর্য, দক্ষতা—সব মিলিয়ে দীপিকা পাড়ুকোন আজ এমন এক জায়গায় পৌঁছেছেন যেখানে তাঁর নামেই ছবির সাফল্যের সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিন্তু ঠিক এমন সময়েই একের পর এক মোটা অঙ্কের অর্থের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পথ বেছে নিয়েছেন অভিনেত্রী। কেন? পর্দার আড়ালে কী এমন ঘটছে?

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দীপিকা নিজেই জানালেন তাঁর সিদ্ধান্তের মূল কারণ। তিনি বলেন, “টাকা সব নয়। কোনও কাজের মধ্যে যদি সততা না থাকে, যদি প্রকল্পের উদ্দেশ্য পরিষ্কার না হয়, তাহলে অনেক বড় অঙ্কের পারিশ্রমিকও আমাকে টানতে পারে না।”

গত কয়েক মাস ধরে তিনি একটি নতুন শর্ত রেখেছেন—প্রতিদিন সর্বোচ্চ আট ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না। মা হওয়ার পর থেকেই এই নিয়ম মেনে চলছেন তিনি। আর সেই নিয়মকে কেন্দ্র করেই বলিপাড়ায় শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। বহু ছবিকে ‘না’ বলতে হয়েছে তাঁকে, কারণ প্রযোজকেরা চেয়েছিলেন আরও দীর্ঘ সময় দিতে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর ঝুলিতে আসা বেশ কিছু বড় ছবির সুযোগ ক্রমেই হাতছাড়া হয়েছে।

অভিনেত্রী জানান, অনেক সময় মানুষ মনে করেন, শুধু মোটা পারিশ্রমিক দিলেই তাঁকে রাজি করানো যাবে। কিন্তু সেটা যে ভুল ধারণা, নতুন সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “অনেকেই মনে করেন টাকার অঙ্কটাই আসল প্রস্তাব। কিন্তু আমার কাছে কাজের সত্যতা সব সময়েই বেশি মূল্যবান।”

বাণিজ্যিক ভাবে কোনও ছবি খুব বড় হতে পারে, কিন্তু ছবির ভাবনা বা গল্প যদি তাঁর নীতির সঙ্গে খাপ খায় না, তাহলে সেই কাজ করতে তিনি আগ্রহ দেখান না। দীপিকার দাবি, কাজের সঙ্গে সততার সম্পর্কই তাঁকে চালিত করে। কারণ, তিনি চান তাঁর প্রতিটি কাজ নিজের জায়গায় সঠিক ও অর্থবহ হোক।

তিনি আরও বলেন, “দশ বছর পরে হয়তো আমি আজকের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলব। কিন্তু এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নিজের কাছে যে সিদ্ধান্ত ঠিক মনে হচ্ছে, সেটাই নিচ্ছি।”

সাম্প্রতিক সময়ে পরপর দু’টি বড় ছবির—‘স্পিরিট’ ও ‘কল্কি ২৮৯৮ এডি’—সিকুয়েল থেকে বাদ পড়েছেন তিনি। শিল্পমহলের মতে, তাঁর আট ঘণ্টার কাজের নিয়ম এবং গল্পের প্রতি তাঁর অতিরিক্ত সততার দাবি—এই দু’টি কারণই মূলত তাঁকে এই প্রকল্পগুলি থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে।

বর্তমানে দীপিকা ব্যস্ত রয়েছেন শাহরুখ খানের সঙ্গে তাঁর আগামী ছবি ‘কিং’-এর কাজে। এই ছবির শুটিং নিয়েই তিনি এখন সময় দিচ্ছেন নিয়মমাফিক। মা হওয়ার পরে কর্মজীবন, পরিবার এবং মানসিক সুস্থতার মধ্যে ভারসাম্য রাখাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি—এ কথাও জানিয়েছেন সাংবাদিকদের।

বলিউডে যেখানে অনেকেই টাকার টানে নিয়মহীন পরিশ্রমে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন, সেখানে দীপিকার এই অবস্থান নিঃসন্দেহে নজরকাড়া। তাঁর মতে, “কাজ করতে চাই মন থেকে, শরীর ভেঙে নয়।” তাই কোনও প্রকল্প যত বড়ই হোক না কেন—যদি তাঁর মূল্যবোধের সঙ্গে না মেলে, দীপিকা আজ আর সেই পথে হাঁটতে রাজি নন।