💔 “রোজ কাঁদতাম, ইরা না থাকলে হয়তো আজ আমি থাকতাম না…” — বিজয় বর্মার অজানা অন্ধকার অধ্যায়

ইরা না থাকলে হয়তো আজ আমি থাকতাম না

বিজয় বর্মা— পর্দায় যিনি আত্মবিশ্বাসী, সাবলীল, ছিমছাম অথচ গভীর অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত। কিন্তু পর্দার আড়ালে লুকিয়ে ছিল এক ভয়াবহ ভাঙনের গল্প, ক্লান্তি, একাকিত্ব আর মানসিক লড়াইয়ের নিরব অধ্যায়। সেই সময় তাঁকে আগলে রেখেছিলেন আমির খানের মেয়ে ইরা খান।

নিজেই সেই কঠিন সময়ের কথা শেয়ার করেছেন অভিনেতা, রিয়া চক্রবর্তীর পডকাস্টে।

🛋️ সোফা থেকে ওঠার শক্তিটুকুও ছিল না…

করোনার লকডাউন। মুম্বইয়ের ফ্ল্যাটে একা বিজয়।

দরজা বন্ধ। চারপাশ নিস্তব্ধ। শ্যুটিং নেই, ব্যস্ততা নেই, ভিড় নেই— শুধু নিজের চিন্তার শব্দ।

তিনি জানান, এমন সময় গেছে যখন—

• টানা ৩–৪ দিন সোফা থেকে ওঠার শক্তি ছিল না
• খাওয়ার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলতেন
• ফোন হাতে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতেন
• প্রতিদিন অকারণে কাঁদতেন
• নিজেকে দোষারোপ করতেন
• মনে হত, পরিবার ছেড়ে নিজের ক্যারিয়ার বেছে নেওয়া কি ভুল ছিল?

“আমি কি খুব স্বার্থপর? পরিবারকে কষ্ট দিচ্ছি না তো?” —এই চিন্তা তাকে ভিতর থেকে কুরে কুরে খাচ্ছিল।

📞 একাকিত্ব, অপরাধবোধ আর অবসাদের ঢেউ

বাড়ি থেকে দূরে থাকার কষ্ট ও একাকিত্ব একসময় তাঁর মনের দেয়াল ভেঙে দেয়।

বন্ধুদের সঙ্গে জুম কলে হাসি-ঠাট্টা হলেও, কল শেষ হলেই ঘরটা আবার নিঃসঙ্গতায় ভরে উঠত।
বারান্দায় দাঁড়ানো, ফোনে কিছুক্ষণ কথা বলা— এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল দিন।

নিজের মানসিক অবস্থার নাম ‘ডিপ্রেশন’— এটাও শুরুতে বুঝতে পারেননি তিনি।

তবে একজন ঠিক বুঝে ফেলেছিলেন।

🌸 “তুমি ডিপ্রেশনে, সাহায্য নাও” — বলেছিলেন ইরা

‘দহাড়’ সিরিজ়ে সহ-অভিনয় সূত্রেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে ইরা ও বিজয়ের। বিজয়ের অবস্থার হঠাৎ পরিবর্তন চোখ এড়ায়নি ইরার। তিনিই প্রথম বলেন—

“তুমি ভালো নেই। মনোবিদের সাহায্য নাও। এটা জরুরি।”

শুরুতে রাজি হননি বিজয়। দ্বিধা, লজ্জা, ভয়— সব মিলেছিল।
কিন্তু যখন বুঝলেন আর একা সামলানো সম্ভব নয়, তখন মন খুললেন থেরাপিস্টের কাছে।

ওষুধের পরামর্শ দেওয়া হলেও, বিজয় বেছে নেন যোগ ও মাইন্ডফুলনেস।
তিনি বলেন—

“যোগ ম্যাটে শুয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাঁদতাম।
সেই সময় ইরা পাশে ছিল। কথা বলত, বোঝাত, সামলাত।”

ইরাই তাঁকে বুঝিয়েছিলেন—
“অনেক কষ্ট মানুষ ছোটবেলায় গিলে ফেলে, ভিতরে চেপে রাখে। সময়মতো না বেরোলে, একদিন তা ভেঙে দেয়।”

❤️‍🩹 ইরার বন্ধুত্ব বদলে দিয়েছিল পথ

বিজয়ের কথায়,

“ইরা না থাকলে আজকের আমাকে হয়তো আপনারা দেখতেন না।”

ওই সময়টা শুধু মানসিক ভাঙনের ছিল না—
ছিল নিজেকে নতুন করে চিনে নেওয়ার, সুস্থতার পথে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়ার, এবং জীবনের অগ্রাধিকার নতুন করে সাজানোর।

🌟 আজ তিনি আবার পর্দায় দীপ্তিমান

যে মানুষটা একসময় সোফা ছেড়ে উঠতে পারতেন না—

আজ তিনিই একের পর এক শক্তিশালী চরিত্রে দর্শকমনে জায়গা করে নিচ্ছেন।
হাসেন, কাজ করেন, বাঁচেন… তবে এখন নিজেকে যত্ন করতেও জানেন।

✨ শেষ কথা

বিজয় বর্মার এই গল্প শুধু একজন তারকার নয়—
এটা প্রতিটি মানুষের গল্প, যে ভিতরে লড়াই করে, বাইরে হাসে।