🎬 “২৫ বার গান পাঠিয়েছেন! শর্মিলার নিষ্ঠা দেখলে মাথা নত হয়ে আসে” — সুমন ঘোষের কথায় উঠে এল এক ‘পুরাতন’ অধ্যায়

সুমন ঘোষের কথায় উঠে এল এক ‘পুরাতন’ অধ্যায়!

কলকাতায় ফিরে এসেছেন পরিচালক সুমন ঘোষ। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের ডাকেই এবার আমেরিকা থেকে উড়ে এসেছেন তিনি। Jet lag-কে তোয়াক্কা না করে, আনন্দবাজারের সঙ্গে আড্ডায় মজলেন। আড্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন শর্মিলা ঠাকুর। বয়স আশির কোঠায়, তবু তাঁর কাজের প্রতি নিষ্ঠা আর শিল্পীসুলভ সংবেদনশীলতায় এখনও তাক লাগান সবার।

সুমনের মুখেই শোনা গেল এক অনন্য অভিজ্ঞতা— “‘পুরাতন’ ছবিতে শর্মিলাদি গান গেয়েছেন। চিত্রনাট্যে ছিল যে, রবীন্দ্রসঙ্গীতটা ওঁর গলাতেই চাই। প্রথমে বললেন, ‘আমি তো গান গাই না’। তারপর রাজি হয়ে গেলেন। কিন্তু বিশ্বাস করবেন না, ২৫ বার গানটা রেকর্ড করে আমাকে পাঠিয়েছেন হোয়াটসঅ্যাপে— শুধুমাত্র জানার জন্য ঠিক গাইছেন কি না! এমন নিষ্ঠা ক’জনের আছে?”

এই ধরনের নিবেদন আজকের দিনে বিরল। আর সেখানেই শর্মিলার মতো বর্ষীয়ান অভিনেতাদের আলাদা করে চেনা যায় বলে মনে করেন সুমন।

“আজকের অনেকেই প্রস্তুতির ধার ধারেন না”

‘কাবুলিওয়ালা’ করার সময় পুরো ছ’মাস প্রস্তুতি নিয়েছিলেন সুমন ও তাঁর টিম। কিন্তু এখন অনেকেই না বুঝেই একটার পর একটা সিনেমায় কাজ করে চলেন। “এর জন্য ওদের দোষ দিতে পারি না,” বলেন সুমন, “কারণ এখন এমনটাই হয়ে গিয়েছে।” অথচ ‘পুরাতন’-এর জন্য শর্মিলাদি বাড়িতে বসে উল বোনা শিখেছিলেন, কারণ তাঁর চরিত্রে সেই অভ্যেসটা জরুরি ছিল।

“শর্মিলার মতো কাজের প্রতি শ্রদ্ধা আর কোথায়?”

শর্মিলা ঠাকুর ‘চুপকে চুপকে’-কে ‘ন্যাকা’ ছবি বলেন! নিজের অভিনয়কে নিয়ে এই আত্মসমালোচনা দেখে সুমন বলেন, “আমরা এখন ইগোর জগতে বাস করছি। সমালোচনা কেউ নিতে চান না।” তাঁর মতে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বা অমর্ত্য সেনের মতো মানুষেরা কখনও নিজেদের স্তবগান করেননি। “পরিচালক হিসাবে নিজের সীমাবদ্ধতা জানা খুব দরকার,” বলেন সুমন, “আমি জানি আমি ৫ কোটি টাকার সিনেমা বানাতে পারব না, তাই সেটা নিয়ে কোনও লজ্জা নেই।”

শর্মিলা বললেন, “এই ছবিটাই হয়তো আমার শেষ বাংলা ছবি”

এটা শুনে সুমনের মন খারাপ হয়ে যায়। কারণ তিনি মনে করেন, শর্মিলার মতো প্রতিভা যতবার সম্ভব পর্দায় আসা উচিত। “ওঁর অভিনয় তো আমাদের সম্পদ,” বলেন তিনি।

ঋতুপর্ণাকে নিয়ে?

ঋতুপর্ণা সম্পর্কে সুমন বলেন, “সত্যি বলতে, ওকে কখনও কারও সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু বলতে শুনিনি। এত বড় সুপারস্টার হয়েও মাটির মানুষ। ওর দর্শন হল, কাউকে ঠেলে নামানো নয়, বরং নিজে উপরে ওঠা।”

এই মুহূর্তে যখন বাংলা সিনেমা দর্শক খুঁজছে, শর্মিলা-ঋতুপর্ণার জুটি নিয়ে ‘পুরাতন’ হয়তো এক নতুন দিশা দেখাতে পারে। তবে সিনেমার বাইরেও শর্মিলার মতো অভিনেত্রীর মানবিক, পরিশ্রমী, বিনম্র রূপ— সেটাই বার বার প্রেরণা হয়ে রইল সুমনের কাছে।

পুরুষের ত্বকে ক্যানসারের ঝুঁকি ৫০% বেশি! সানস্ক্রিন মাখছেন ঠিকঠাক?