Monday, December 8, 2025

❄️উত্তুরে হাওয়ায় শীতের দখল, কলকাতায় নামল পারদ—রাজ্যের একাধিক জেলায় ঘন কুয়াশার সতর্কতা

Share

উত্তুরে হাওয়ায় শীতের দখল!

উত্তুরে হাওয়ার প্রবল প্রবেশে শীত এ বছর জাঁকিয়ে বসেছে পশ্চিমবঙ্গে। আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতি দেখে স্পষ্ট, শীতের দাপট আপাতত আরও কয়েক দিন অটুট থাকবে। অন্য দিকে, বঙ্গোপসাগরে নতুন কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত না তৈরি হওয়ায় শীতপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। ফলে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে নীচেই রয়েছে।

শনিবার মরসুমের প্রথম বড় শীত নেমেছিল শহরে। সে দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছুঁয়েছিল প্রায় ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মরসুমের সর্বনিম্ন হিসেবেই ধরা হচ্ছে। রবিবার সেই তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছিল ১৫.২ ডিগ্রি। সোমবার ভোরে ফের নামল পারদ—তাপমাত্রা দাঁড়াল প্রায় ১৫ ডিগ্রিতে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ১.৬ ডিগ্রি কম। এর পাশাপাশি রবিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস—এটিও স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ডিগ্রির বেশি কম।

🌤️ রাজ্যের আবহাওয়া: কুয়াশায় ঢেকে যাবে বহু জেলা

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, গোটা রাজ্যেই আপাতত শুষ্ক ও বৃষ্টিহীন আবহাওয়া বজায় থাকবে। তবে উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় ঘন কুয়াশার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মানচিত্রে যে জেলাগুলিতে কুয়াশার প্রভাব বেশি দেখা যেতে পারে, সেগুলি হল—

  • দার্জিলিং
  • জলপাইগুড়ি
  • কালিম্পং
  • আলিপুরদুয়ার
  • উত্তর দিনাজপুর
  • দক্ষিণ দিনাজপুর
  • মালদহ

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই সব জেলায় সোমবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশার ঘনত্ব এতটাই বেশি থাকবে যে দৃশ্যমানতা নেমে আসতে পারে প্রায় ২০০ মিটারে। সাধারণত দৃশ্যমানতা থাকে ৯০০ মিটার বা তারও বেশি। ফলে কুয়াশাচ্ছন্ন এই অবস্থায় রাস্তায় যান চলাচলে সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে ভোরের দিকে। ট্রেন চলাচলেও দেরি বা গতি কমানোর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

❄️ শীতের আমেজ থাকবে আরও কয়েক দিন

উত্তর ও দক্ষিণ—দুই বঙ্গে আগামী এক সপ্তাহ তাপমাত্রার কোনও বড়সড় পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। রাতের তাপমাত্রা মোটামুটি একই থাকবে। দিনের তাপমাত্রায় সামান্য উঠানামা দেখা গেলেও তা বড় কোনও প্রভাব ফেলবে না। অন্য দিকে, শুকনো হাওয়া অব্যাহত থাকায় শীতের অনুভূতি আরও বাড়বে।

শহর কলকাতা থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত—সব জায়গাতেই শীতের উপস্থিতি এখন স্পষ্ট। সকালের দিকে পাতাজোড়া কুয়াশা, দুপুরের দিকে মৃদু রোদ এবং সন্ধ্যার পরই ঠান্ডা হাওয়া—সব মিলিয়ে ডিসেম্বরের প্রথম দিকেই রাজ্যবাসী উপভোগ করছেন প্রকৃত শীতের আমেজ।

🌬️ কেন বেড়েছে ঠান্ডার তেজ?

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে—

  • হিমালয়ের পাদদেশে ঠান্ডা বাতাসের প্রবাহ শক্তিশালী হয়েছে।
  • উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা শুষ্ক হাওয়া অবাধে দক্ষিণবঙ্গের দিকে ঢুকছে।
  • সমুদ্রের ওপর তেমন কোনও সক্রিয় আবহাওয়া ব্যবস্থা তৈরি হয়নি।

এই তিনটি কারণেই তাপমাত্রা টানা কমতে শুরু করেছে।

🧥 রাজ্যবাসীর জন্য পরামর্শ

  • ভোর ও রাতের দিকে বেরোতে হলে উষ্ণ পোশাক অবশ্যই ব্যবহার করুন।
  • কুয়াশার সময় গাড়ি চালালে হেডলাইট নয়, ফগ লাইট ব্যবহার করুন।
  • বৃদ্ধ, শিশু এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

Read more

Local News