Friday, February 7, 2025

৫০-এ পুষ্পা, ১০০-এ বাহুবলী! মেলবোর্নে নীতীশের অনন্য উদযাপন

Share

মেলবোর্নে নীতীশের অনন্য উদযাপন

নীতীশ কুমার রেড্ডি ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য মেলবোর্নের মাঠে শুধুই স্বস্তি নয়, নিয়ে এলেন বিনোদনের এক অন্য মাত্রা। তাঁর ব্যাটে ঝলসে উঠল লড়াকু মনোভাব, আর তাঁর উদযাপনে ধরা পড়ল দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার জনপ্রিয় চরিত্রের চিহ্ন। অর্ধশতরান আর শতরানের পর মাঠে যে উদযাপন তিনি করলেন, তা দেখে মনে হচ্ছিল, মেলবোর্নের ২২ গজে যেন অল্লু অর্জুনের পুষ্পা আর প্রভাসের বাহুবলী একসঙ্গে হাজির হয়েছেন।

নীতীশের এই ব্যতিক্রমী উদযাপন এখন ভাইরাল। তাঁর পুষ্পা-স্টাইল অর্ধশতরানের উদযাপন এবং বাহুবলী-স্টাইল শতরানের উদযাপনের ভিডিয়োগুলো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্সের দল হয়তো এই উদযাপনের পুরো অর্থ বুঝতে পারেনি, তবে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে গর্ব এবং বিনোদনের মুহূর্ত।

পুষ্পা থেকে বাহুবলী: উদযাপনে ভরপুর নীতীশের ইনিংস

মেলবোর্ন টেস্টে ভারতীয় দল যখন চাপে ছিল, তখন ২১ বছর বয়সী নীতীশের ব্যাটিং দলকে স্বস্তি এনে দেয়। তিনি অপরাজিত থাকেন ১০৫ রান করে। ১৭৬ বলের এই ইনিংসে ছিল ১০টি চার এবং ১টি ছক্কা। শুধু রান করাই নয়, নীতীশের ইনিংস ছিল অত্যন্ত বিচক্ষণ। বলের মেজাজ বুঝে খেলা, কখনও রক্ষণাত্মক মনোভাব, আবার কখনও আক্রমণাত্মক শট—সব কিছুতেই ছিল ভারসাম্য।

অর্ধশতরান করার পর নীতীশের পুষ্পা-স্টাইল উদযাপন যেন বুঝিয়ে দিল, তিনি সহজে হার মানবেন না। দক্ষিণী সিনেমা “পুষ্পা”-র প্রধান চরিত্র অল্লু অর্জুনের মুদ্রা ব্যবহার করে তিনি বার্তা দিলেন—ভয় পাওয়ানো যাবে না তাঁকে। ভারতীয় সাজঘরে যখন টানটান উত্তেজনা, তখন এই উদযাপন যেন এক প্রেরণার বার্তা।

তবে নীতীশ এখানেই থেমে থাকেননি। শতরান করার পর তিনি “বাহুবলী”-র প্রভাসের মুদ্রায় উদযাপন করেন। বাহুবলীর সেই দৃশ্যের কথা মনে করিয়ে দিলেন, যেখানে সাহস এবং শক্তির প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন প্রভাস। মেলবোর্নে নীতীশের এই উদযাপন যেন ভারতীয় ক্রিকেটের লড়াকু মানসিকতার এক প্রতীক।

মেলবোর্নে দুই নায়কের ছায়া

নীতীশ কুমার রেড্ডি শুধু ক্রিকেটারই নন, তিনি দক্ষিণী সিনেমার বড় ভক্ত। যখনই সময় পান, তিনি সিনেমা দেখেন। তাই “পুষ্পা” আর “বাহুবলী”-র জনপ্রিয় মুদ্রাগুলোর অর্থ তাঁর অজানা নয়। এই দুই চরিত্রের মতোই সাহসী এবং আত্মবিশ্বাসী মনোভাব নিয়ে তিনি লড়াই চালিয়েছেন মেলবোর্নের মাঠে।

তৃতীয় দিনের খেলার শেষে যখন ভারতীয় দল কিছুটা হলেও স্বস্তিতে, তখন নীতীশের এই লড়াই আর উদযাপন শুধু দলের নয়, ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মুখেও হাসি ফুটিয়েছে। তাঁর উদযাপনের ধরন বুঝিয়ে দিয়েছে, ভারতীয় দল শুধু টিকে থাকার জন্য নয়, জেতার জন্য লড়াই করছে।

উদযাপন থেকে শিক্ষা

নীতীশের উদযাপন শুধু মজার নয়, তা ছিল এক বার্তাও। অস্ট্রেলিয়ার জোরে বোলিং আক্রমণ, চাপের মুহূর্ত—সব কিছুর মধ্যেও আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা এবং প্রতিপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া যে ভারত সহজে ছেড়ে দেবে না। মেলবোর্নের মাঠে নীতীশ কেবল রান করেই দলকে সাহায্য করেননি, তাঁর উদযাপন দিয়ে দলের মনোবলও বাড়িয়েছেন।

প্যাট কামিন্সদের হয়তো এখন উপলব্ধি হচ্ছে, নীতীশ কুমারের এই জোড়া উদযাপনের অর্থ কী। ভারতের এই তরুণ অলরাউন্ডার বুঝিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার মতোই ভারতীয় ক্রিকেটের গল্পেও এখন সাহস, লড়াই এবং নাটকীয়তার ছাপ রয়েছে।

উপসংহার

নীতীশ কুমার রেড্ডির এই ইনিংস এবং উদযাপন এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে ভারতীয় ক্রিকেটে। দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার অনুপ্রেরণা থেকে মাঠের কঠিন লড়াই—সব মিলিয়ে নীতীশের এই পারফরম্যান্স শুধু ক্রিকেট নয়, পুরো ভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনের জন্যই এক বড় উদাহরণ। মেলবোর্নের মাঠে পুষ্পা আর বাহুবলীর উপস্থিতি, নীতীশের ব্যাটে এবং মনের জোরে, ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে।

Read more

Local News