৪০ ঘণ্টা পর অবশেষে তুরস্ক থেকে উড়ান!
লন্ডন থেকে মুম্বইগামী ভার্জিন আটলান্টিকের একটি ফ্লাইট ৪০ ঘণ্টারও বেশি সময় তুরস্কের দিয়ারবাকির বিমানবন্দরে আটকে থাকার পর অবশেষে মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দিল। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বিমান ছাড়তেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন বিমানের ২৫০ জন যাত্রী, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন ভারতীয়।
কেন আটকে গেল বিমান?
এই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির সূত্রপাত হয় যখন বিমানে থাকা একজন যাত্রী মাঝ আকাশে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। যাত্রীর শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করেই বিমানটি তড়িঘড়ি তুরস্কের দিয়ারবাকির বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে।
কিন্তু সমস্যা সেখানেই শেষ হয়নি। যাত্রীর চিকিৎসার পর যখন বিমানটি ফের উড়তে প্রস্তুতি নেয়, তখনই দেখা দেয় যান্ত্রিক ত্রুটি। একাধিকবার চেষ্টা করেও বিমানটিকে আকাশে ওড়ানো সম্ভব হয়নি। ফলে যাত্রীদের বিমান থেকে নামিয়ে এনে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে বলা হয়।
দীর্ঘ অপেক্ষায় দুর্ভোগ যাত্রীদের
শুরুতে যাত্রীরা ভেবেছিলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেলেও ফ্লাইট ছাড়ার কোনো খবর নেই! যাত্রীদের অভিযোগ, বিমান সংস্থা কোনো প্রকার সহায়তা করেনি।
- পর্যাপ্ত খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা করা হয়নি।
- কেবলমাত্র একটি শৌচাগার ছিল প্রায় ৩০০ যাত্রীর ব্যবহারের জন্য।
- প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে পর্যাপ্ত কম্বল সরবরাহ করা হয়নি।
- বিশ্রামের জন্য সঠিক কোনো জায়গা ছিল না—অনেকেই বাধ্য হয়ে বেঞ্চ কিংবা মেঝেতে রাত কাটান।
এই পরিস্থিতিতে বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ যাত্রীরা সমাজমাধ্যমে নিজেদের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন। অনেকেই ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে দেখা যায় বিমানবন্দরের মেঝেতে বসে কিংবা শুয়ে রয়েছেন যাত্রীরা। যদিও সেই ছবি ও ভিডিওগুলোর সত্যতা আনন্দবাজার ডট কম যাচাই করেনি।
বিমান সংস্থার প্রতিক্রিয়া
এত বড় ভোগান্তির পরও প্রথম দিকে বিমান সংস্থা যাত্রীদের যথাযথ সহযোগিতা করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পরে সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়, যাত্রীদের বিকল্প হোটেলের ব্যবস্থা করা হয়েছিল এবং যথাসম্ভব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছিল।
বিমান সংস্থার এক মুখপাত্র জানান, “আমরা এই পরিস্থিতির জন্য দুঃখিত। প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সমস্যাগুলি মেরামত করার পর, অবশেষে শুক্রবার বিকেল ৪টায় (তুরস্কের সময়) বিমানটি মুম্বইয়ের উদ্দেশে উড়েছে। আশা করা যাচ্ছে, শুক্রবার মধ্যরাতের আগেই এটি মুম্বইতে অবতরণ করবে।”
শেষমেশ স্বস্তি পেলেন যাত্রীরা
দীর্ঘ ৪০ ঘণ্টার ধৈর্যের পরীক্ষা শেষে, যখন বিমানটি তুরস্ক থেকে মুম্বইয়ের উদ্দেশে উড়াল দিল, তখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন সকল যাত্রী। তবে এই ঘটনা বিমান সংস্থার সেবা ও জরুরি পরিস্থিতিতে প্রস্তুতির মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
যাত্রীদের অনেকেই মনে করছেন, এমন পরিস্থিতিতে বিমান সংস্থার আরও দায়িত্ববান হওয়া উচিত ছিল। যথাযথ সাহায্য ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলে, হয়তো এত দীর্ঘ অপেক্ষা ও কষ্ট পেতে হতো না।
তবে শেষ পর্যন্ত নিরাপদে গন্তব্যে ফেরার সুযোগ পেয়ে সবাই খুশি। এখন দেখার বিষয়, ভবিষ্যতে বিমান সংস্থাগুলি এমন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়! ✈️
ট্রাম্পের ‘পাল্টা শুল্ক’ ঘোষণার অপেক্ষায় বিশ্ব, ভারতের চিন্তা বাড়ছে!