Monday, December 1, 2025

৩৬৯ দিন পর ‘শাপমুক্তি’ হার্দিকের! ওয়াংখেড়ে গর্জে উঠল, দিল্লিকে হারিয়ে প্লে-অফে মুম্বই

Share

৩৬৯ দিন পর ‘শাপমুক্তি’ হার্দিকের!

১৭ মে, ২০২৪। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে লখনউ সুপার জায়ান্টসের কাছে হেরে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল হার্দিক পাণ্ড্যাকে চোখে জল নিয়ে। সে সময় যেন সব কিছুই ভেঙে পড়েছিল তার কাঁধে। পুরনো দলে ফেরার পর অধিনায়কত্বও পেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু সেই মরশুমে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দুর্বল ছিল, প্লে-অফের স্বপ্ন টিকে ওঠেনি, আর সমর্থকদের ঘাড়েও ওঠে বিদ্রুপের বোঝা। পোস্টার উড়িয়ে তাকে কটাক্ষ করা হয়, রোহিত শর্মাকে অধিনায়কত্ব থেকে সরানোর দায়ও নিতে হয়।

কিন্তু ২১ মে, ২০২৫— ঠিক ৩৬৯ দিন পর সেই একই ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বদলে গেল গল্প। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ঘরের মাঠে দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে আইপিএলের প্লে-অফে পা দিল, আবারো স্বপ্ন দেখছে ট্রফি জেতার। আর এই সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় ভুমিকা পালন করেছেন অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ড্যে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে তাঁর নামে বিজয় শ্লোগান, গর্জে উঠল সমর্থকেরা। খেলা শেষে নিজের সমর্থকদের সামনে হাতজোড় করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন হার্দিক।

গত মরসুমের ব্যর্থতা ভুলে গিয়ে এবারের নিলামেই মুম্বইয়ের দল গঠন একেবারেই নতুন করে সাজানো হয়েছে। কুইন্টন ডি’কক, ঈশান কিশন, টিম ডেভিড, জফ্রা আর্চারের মত কিছু খেলোয়াড় ছেড়ে দিয়ে দলে আনা হয়েছে রায়ান রিকেলটন, উইল জ্যাকস, ট্রেন্ট বোল্ট, দীপক চহরদের মতো বোলিং স্পেশালিস্টদের। হার্দিকের পরিকল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে বোলিং আক্রমণ। নতুন বলে বোল্ট ও চহর, মাঝের ওভারে স্যান্টনার, কর্ণ শর্মা ও জ্যাকসের স্পিন, আর ডেথ ওভারে জসপ্রীত বুমরাহ। এই শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের সামনে ভেঙে পড়েছে বহু ব্যাটিং লাইন-আপ।

তবুও, সাফল্যের পথ সহজ ছিল না। প্রথম পাঁচ ম্যাচে মুম্বই মাত্র একটাই জিততে পেরেছিল। সবার মনে হয়েছিল আবার ব্যর্থতার দায় পড়বে হার্দিকের উপর। কিন্তু হার্দিক ভেঙে পড়েননি, নিজের কৌশল থেকে সরে আসেননি। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, দলের শেষ সিদ্ধান্ত তাঁর। এমনকি পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক রোহিত শর্মাকেও বোলিং থেকে সরিয়ে দিয়ে ব্যাটিংয়েই সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রোহিত নিজেও স্বীকার করেছেন, বোলিং পরিকল্পনায় তাঁর নাম ছিল না।

হার্দিকের সাহসিকতা দলের জন্য রূপান্তরকরী প্রমাণিত হয়েছে। তিনি দলকে ভয়-ভীতি ভুলে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার বার্তা দিয়েছেন। মাত্র ৯টি ইনিংসে ১৬১ রান করেছেন হার্দিক, গড় ২৩ এবং স্ট্রাইক রেট ১৬১। যদিও ব্যাটিং থেকে বেশি দৃষ্টিগোচর হননি, কিন্তু তার আক্রমণাত্মক মনোভাব দলের উত্থানে মূখ্য ভূমিকা নিয়েছে।

শেষ পর্যন্ত, ৩৬৯ দিন আগের সেই হতাশা আজ পেছনে ফেলে হার্দিক পাণ্ড্যে ফিরে এলেন সাফল্যের শিখরে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম গর্জে উঠল তাঁর বিজয়গাথায়, আর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের টানা চার বছর পর প্লে-অফে উঠার স্বপ্ন পূরণ হলো। এখন অপেক্ষা শুধু ট্রফি হাতে নেওয়ার, আর হার্দিকের নেতৃত্বে নতুন অধ্যায় শুরু করার।

কান চলচ্চিত্র উৎসবে ঘোমটা ঢাকা জাহ্নবী! লাল গালিচায় মা শ্রীদেবীর ছায়া যেন ফিরল মেয়ে রূপে

Read more

Local News