Monday, December 1, 2025

২১ জুলাই শহর অচল হবে না! কলকাতা পুলিশের কাঁধে দায়িত্ব, নির্দেশ হাইকোর্টের

Share

২১ জুলাই শহর অচল হবে না!

২১ জুলাই, শহরের রাজনৈতিক ক্যালেন্ডারে এক ঐতিহাসিক দিন। প্রতি বছর তৃণমূল কংগ্রেস এই দিনটিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালন করে, লক্ষ লক্ষ সমর্থক আসেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। কলকাতার রাস্তায় নামে মানুষের ঢল, ব্যাহত হয় স্বাভাবিক জনজীবন। তবে এ বছর কলকাতাবাসীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে এবার হস্তক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট।

বুধবার (১৭ জুলাই) হাইকোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল, শহরের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে ২১ জুলাইয়ের দিনেও। কলকাতা পুলিশকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আদালত জানিয়ে দিয়েছে, মিছিল কিংবা জমায়েত শহরের বাকি বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাহত করতে পারবে না।

কী বলেছে আদালত?

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, শহিদ দিবস হোক বা অন্য কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি, আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়া মানা যায় না। বিচারপতি শম্পা সরকার বলেন, “রাজনৈতিক সভা হতেই পারে, কিন্তু তাতে শহরের সাধারণ মানুষের যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটানো উচিত নয়। কলকাতা পুলিশের দায়িত্ব হবে বিকল্প ব্যবস্থা করে ট্রাফিক স্বাভাবিক রাখা।”

কীভাবে সামলাবে কলকাতা পুলিশ?

পুলিশ ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, ২১ জুলাই-কে সামনে রেখে তারা বিশেষ ট্রাফিক প্ল্যান তৈরি করেছে। শহরের একাধিক প্রধান রাস্তায় বিকল্প রুট নির্ধারণ, অতিরিক্ত ট্রাফিক গার্ড মোতায়েন, গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে নজরদারি এবং অ্যাম্বুল্যান্স ও জরুরি পরিষেবার জন্য পৃথক লেন রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, এসপ্লানেড-সহ সংবেদনশীল এলাকায় বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করা হবে। প্রয়োজনে ড্রোন ও সার্ভেইলেন্স ক্যামেরা ব্যবহার করেও পরিস্থিতি নজরে রাখা হবে।

কেন আদালতের এই নির্দেশ?

পিটিশনকারীর দাবি ছিল, প্রতি বছর ২১ জুলাই কলকাতায় প্রবল যানজট হয়, যা অফিসযাত্রী, ছাত্রছাত্রী, রোগী ও সাধারণ মানুষের পক্ষে চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শহরের একাংশ কার্যত অচল হয়ে যায়। সেই কারণেই হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল যাতে এই বছরে জনজীবন ব্যাহত না হয়।

আদালত এই বক্তব্য মেনে নিয়েই পুলিশের কাছে বিস্তারিত পরিকল্পনা চেয়েছিল, এবং পরবর্তীতে পুলিশকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই নির্দেশ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস যদিও বলেছে, তারা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সভা করবেন, যাতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা না হয়। অন্যদিকে বিরোধীরা বলছে, এই পদক্ষেপ শহরবাসীর স্বার্থে জরুরি এবং তা কার্যকর হওয়া দরকার।

শেষ কথা

২১ জুলাই শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, কলকাতার জন্য একটি পরীক্ষাও বটে—কীভাবে জনসমাবেশ ও জনজীবনকে একসঙ্গে সামলানো যায়। এবার হাইকোর্টের নির্দেশে প্রশাসনের কাঁধে সেই ভার। শহরবাসীর চোখ এখন ২১ জুলাইয়ের সকালে—এই বছর সত্যিই কি চলবে শহর? নাকি আবারও অচল হবে মহানগর? উত্তর দেবে সময়।

বিশ্বে তেলের দাম আকাশছোঁয়া, রাশিয়া থেকে কিনে ভারতে স্থিতিশীলতা!

Read more

Local News