মহিলা প্রার্থীদের জন্য ৩৩% সংরক্ষণের ভাবনা!
২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বড় রাজনৈতিক রদবদলের পথে হাঁটতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্রের দাবি, এবার সংসদে মহিলা প্রতিনিধিত্ব আরও বাড়াতে মহিলা প্রার্থীদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সরকারি স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই বিষয়ে একটি আইনি কাঠামোর খসড়া প্রস্তুত হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়েছিল ‘নারী সংরক্ষণ বিল’। সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে এই বিল আইনে পরিণত হলেও, কার্যকর হওয়ার দিনক্ষণ নির্দিষ্ট হয়নি। এখন ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই এই সংরক্ষণ কার্যকর করতে চায় কেন্দ্র।
কী বলছে সংবিধান সংশোধনী?
২০২৩ সালের ‘১২৮তম সংবিধান সংশোধনী বিল’ অনুযায়ী, লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভাগুলিতে মোট আসনের এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৩৩ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তবে কার্যকর হওয়ার আগে জরুরি কয়েকটি পদক্ষেপ বাকি। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আসন পুনর্বিন্যাস বা ডিলিমিটেশন। সংবিধান অনুযায়ী, এই ডিলিমিটেশন শুরু হবে ২০২৬ সালের পরে। সেই ভিত্তিতে আসন পুনর্বিন্যাস করে তবেই সংরক্ষণ বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে।
২০২৯-এই কি প্রথম মহিলা সংরক্ষিত লোকসভা?
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা জানিয়েছেন, “সরকার এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে, যাতে ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা যায় এবং ২০২৯-এর নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা আসনে ভোট নেওয়া সম্ভব হয়।” ওই কর্তার দাবি, এক বার এই সংরক্ষণ চালু হলে, পরবর্তী তিন সাধারণ নির্বাচনে তা কার্যকর থাকবে।
তবে এখনই ঠিক হয়নি, কোন রাজ্যে কতগুলি আসন সংরক্ষিত হবে। এই সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে ওই রাজ্যের জনসংখ্যা এবং মহিলা ভোটারদের অনুপাতে। কেন্দ্রের তরফে শীঘ্রই একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে, যারা এই সংরক্ষণের রূপরেখা তৈরি করবে।
রাজনৈতিক মহলের প্রতিক্রিয়া
এই খবর সামনে আসতেই রাজনৈতিক মহলে নড়েচড়ে বসেছে সব পক্ষ। বিজেপি দাবি করেছে, মোদী সরকারের নয়া যুগে মহিলা ক্ষমতায়নের আরেকটি অধ্যায় এটি। অন্যদিকে বিরোধীরা বলছে, “বিল পাশের পর এত সময় গিয়েছে, এখনও কার্যকর হল না কেন?”
তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলিও ইতিবাচকভাবে এই সংরক্ষণকে স্বাগত জানিয়েছে, তবে অনেকেই চাইছেন, দ্রুত এই সিদ্ধান্ত বাস্তবে কার্যকর হোক। অনেক মহিলা নেত্রী এই বিলকে যুগান্তকারী বলে অভিহিত করলেও, বাস্তবায়নের জন্য দেরি হওয়ায় তারা অসন্তুষ্ট।
উপসংহার
দেশের রাজনীতিতে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো যে সময়ের দাবি, তা মানছে সব পক্ষই। এবার দেখার, কেন্দ্র কত দ্রুত ডিলিমিটেশন সম্পন্ন করে ২০২৯ সালের নির্বাচনের আগে মহিলাদের জন্য এই সংরক্ষণ কার্যকর করতে পারে।

