Monday, December 1, 2025

২০২৬ ভোটের প্রস্তুতিতে তৃণমূলের নতুন কৌশল: প্রশাসন আর সংগঠন হাত ধরাধরি করে চলবে একসাথে

Share

২০২৬ ভোটের প্রস্তুতিতে তৃণমূলের নতুন কৌশল!

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে আগেভাগেই মাঠে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে এবার আর শুধুমাত্র সংগঠনের ভরসায় নয়—একসাথে প্রশাসনিক পরিকাঠামো এবং দলীয় সংগঠন, দুই দিকেই সমানভাবে জোর দিতে চাইছে শাসক দল। সেই লক্ষ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে পরিকল্পনা, বৈঠক এবং রণকৌশল নির্ধারণের কাজ।

জেলা সফর থেকেই শুরু রূপরেখা

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একের পর এক জেলা সফর শুধু প্রশাসনিক বৈঠকের জন্যই নয়, রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্রশাসনের কাজে কোথায় গাফিলতি আছে, কোথায় উন্নয়নের গতি শ্লথ, তা যেমন খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তেমনই দলীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে ভোটমুখী বার্তা দিতেও ভোলেননি নেত্রী।

উদাহরণস্বরূপ, কোচবিহার সফরে প্রশাসনিক বৈঠকের ফাঁকে দলের ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। দলীয় সূত্রের খবর, তিনি সরাসরি বলেন—“সংগঠন আর প্রশাসন আলাদা নয়, মানুষ দুটোকেই একসঙ্গে দেখে। তাই কাজ করতে হবে একে অপরের পরিপূরক হয়ে।”

যুব তৃণমূল থেকে পুরসভা—সবাইকে এক সুরে চলার বার্তা

দলের অন্দরে একটি বার্তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে: বুথ স্তর থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত সংগঠনের সঙ্গে প্রশাসনিক প্রতিনিধিদের সমন্বয় রাখতে হবে। পুরসভা, পঞ্চায়েত, ব্লক অফিস—যেখানে দলের জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, তাঁদের স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে।

যুব তৃণমূল, মহিলা তৃণমূল ও অন্যান্য শাখা সংগঠনগুলোকেও জোর দেওয়া হচ্ছে নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং জনসংযোগ বৃদ্ধির কাজে। মূলত এক ধরনের ‘প্যারালাল গভার্নেন্স’ চালানোর চেষ্টা হচ্ছে, যেখানে প্রশাসনের কাজ আর দলের সাংগঠনিক দিক একসঙ্গে চলবে।

অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন ও দুর্বলতা চিহ্নিতকরণে নজর

২০২৪ লোকসভা ভোটে যেসব কেন্দ্রে তৃণমূল প্রত্যাশা মতো ফল করতে পারেনি, সেগুলি চিহ্নিত করে সেখানে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে দলীয় জনপ্রতিনিধি এবং সংগঠনের প্রতিনিধিদের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে। কিছু জায়গায় রদবদলের কথাও উঠেছে।

দলের এক নেতার কথায়, “আমরা চাই ২০২৬-এ আর কোনও ফাঁক না থাকে। উন্নয়নের বার্তা এবং সংগঠনের মজবুত ভিত্তি—দুটোই একসাথে নিয়ে এগোতে হবে।”

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যজুড়ে যে প্রশাসনিক বৈঠক করছেন, তা আরও বিস্তৃত হতে চলেছে। পাশাপাশি, প্রতিটি জেলা ও ব্লকে সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের একটি সময়সীমার মধ্যে কাজের রূপরেখা জমা দিতে বলা হয়েছে।

এই সমন্বয়কেই তৃণমূলের ‘ডুয়াল স্ট্র্যাটেজি’ বলা হচ্ছে—যেখানে প্রশাসন এবং সংগঠন একসঙ্গে হাত ধরে চলবে উন্নয়নের পাশাপাশি জনসংযোগে মন জয় করতে।

এই কৌশল কতটা কার্যকর হয়, তা অবশ্য বোঝা যাবে আগামী নির্বাচনের ময়দানে। তবে তৃণমূল যে এবার প্রস্তুতির খাতায় কোনও খামতি রাখতে চাইছে না, তা স্পষ্ট।

খেলাধুলা বিল ঘিরে বড় রদবদলের মুখে বিসিসিআই! পরিবর্তনের হাওয়া ভারতের ক্রিকেট প্রশাসনে

Read more

Local News