গুকেশকে পাঁচ কোটির পুরস্কার !
ভারতের দাবা জগতে আরেকটি স্বর্ণযুগের সূচনা। মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন ডি গুকেশ। বিশ্বনাথন আনন্দের পর তিনিই দ্বিতীয় ভারতীয় দাবাড়ু, যিনি এই বিরল সম্মান অর্জন করলেন। ক্লাসিকাল দাবার ১৮তম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে গুকেশ নিজের প্রতিভা ও অধ্যবসায়ের এক অনন্য নজির গড়েছেন। তাঁর এই অনন্য সাফল্যকে স্বীকৃতি জানিয়ে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম. কে. স্ট্যালিন ঘোষণা করেছেন পাঁচ কোটি টাকার আর্থিক পুরস্কার।
গুকেশের প্রতি স্ট্যালিনের প্রশংসা
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে লেখেন, “কনিষ্ঠতম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন গুকেশের এই অসাধারণ কৃতিত্ব তামিলনাড়ু তথা গোটা দেশের গর্ব। তাঁর জন্য পাঁচ কোটির আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। গুকেশ আমাদের জাতীয় গৌরব বাড়িয়েছে। আশা করি তিনি ভবিষ্যতে আরও সাফল্য অর্জন করবেন।” পাশাপাশি তিনি তামিলনাড়ুর ক্রীড়ামন্ত্রককেও ধন্যবাদ জানান তরুণ প্রতিভাদের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য।
জয়ের মঞ্চ: রুদ্ধশ্বাস ফাইনাল
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার যাত্রায় গুকেশের ফাইনাল ম্যাচটি ছিল নাটকীয়। চীনের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ডিং লিরেনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম ১৩টি গেম শেষে দুজনের পয়েন্ট ছিল সমান, ৬.৫। ১৪তম গেমে ডিং লিরেন সাদা ঘুঁটি নিয়ে খেলছিলেন এবং ড্রয়ের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছিল। কিন্তু ৫৩তম চালে ডিং এমন একটি ভুল করেন, যা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। গুকেশ সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে জয় নিশ্চিত করেন। ফলাফল দাঁড়ায় ৭.৫-৬.৫, যা তাঁকে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের শিরোপা এনে দেয়।
গুকেশ: নতুন প্রজন্মের মুখ
বিশ্বনাথন আনন্দের দেখানো পথেই হাঁটছেন গুকেশ। তরুণ বয়স থেকেই দাবার প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা ও দক্ষতা তাঁকে এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর গুকেশ শুধু ভারত নয়, আন্তর্জাতিক দাবার জগতে এক পরিচিত নাম হয়ে উঠেছেন। তাঁর প্রতিভা নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করবে এবং ভারতের দাবা সংস্কৃতিকে আরও শক্তিশালী করবে।
পুরস্কার ও ভবিষ্যৎ
গুকেশের জন্য স্ট্যালিনের পাঁচ কোটির আর্থিক পুরস্কার শুধু একটি স্বীকৃতি নয়, বরং তরুণ প্রতিভাদের পাশে থাকার বার্তা। এই পুরস্কার তাঁর আগামী দিনের প্রস্তুতিতে বড় ভূমিকা রাখবে। গুকেশের সাফল্য প্রমাণ করে, কঠোর পরিশ্রম ও প্রতিভা একসঙ্গে থাকলে সাফল্য অপ্রতিরোধ্য।
ডি গুকেশ আজ শুধু একজন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নন, তিনি ভারতের ক্রীড়াজগতের নতুন উদাহরণ। তাঁর সাফল্যের পথ আরও তরুণ প্রতিভাদের স্বপ্ন দেখাবে। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে তিনি আরও বহু আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের পতাকা উড়িয়ে দেবেন।