Tuesday, February 11, 2025

১৩ মাসে ৩৫৮ মাওবাদী নিহত, আরও কঠোর অভিযান ছত্তীসগঢ়ে! ২০২৬-এর মধ্যে ‘মাওবাদীমুক্ত ভারত’-এর লক্ষ্য

Share

১৩ মাসে ৩৫৮ মাওবাদী নিহত!

মাওবাদী দমন অভিযান আরও তীব্র করছে ভারত সরকার। গত ১৩ মাসে ৩৫৮ জন মাওবাদী নিহত, ১১৭৭ জন গ্রেফতার এবং ৯৮৫ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। এই সাফল্যের পর এবার ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে দেশকে সম্পূর্ণ মাওবাদীমুক্ত করার লক্ষ্যে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে বাহিনী। ছত্তীসগঢ়ের বস্তারের গভীর জঙ্গলে চলছে এই অভিযান।


🔴 কেন বাড়ছে এই অভিযান?

👉 কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই ঘোষণা করেছিলেন— ২০২৬ সালের মধ্যে মাওবাদীদের সম্পূর্ণ নির্মূল করা হবে।
👉 ২০২৩ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাই বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন।
👉 নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি ও আধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ানো হয়েছে।
👉 শুধু গত দুই মাসেই ৭০ জনের বেশি মাওবাদী নিহত হয়েছেন বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে।

নিরাপত্তা বাহিনীর মতে, এবার আর শুধু ‘প্রতিরক্ষামূলক’ অভিযান নয়, বরং মাওবাদী সংগঠনকে সম্পূর্ণ নির্মূল করাই মূল লক্ষ্য।


⚔️ কেমন চলছে অভিযান?

📌 গত রবিবারই বস্তারের জঙ্গলে ৬০০ জন প্রশিক্ষিত কমান্ডোর একটি দল অভিযান চালায়।
📌 সেই অভিযানে ৩১ জন মাওবাদী নিহত হন, শহিদ হন ২ জওয়ান।
📌 এ বছর এখনও পর্যন্ত ৮১ জন মাওবাদী নিহত হয়েছেন, যা আগের বছরের তুলনায় বেশি।
📌 ২০২৪ সালে ২১৯ জন মাওবাদী মারা যান সংঘর্ষে, যা গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।


🛑 মাওবাদী সমস্যার মূল কারণ কী?

মাওবাদী আন্দোলনের মূল কারণ বহু বছর ধরে আদিবাসী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অসন্তোষ, অবহেলা এবং উন্নয়নের অভাব।
✔️ তারা দাবি করে যে, সরকার আদিবাসীদের জমি দখল করছে, বনজীবী সম্প্রদায়ের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।
✔️ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের অভাবে, পুলিশি নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে মাওবাদীরা অস্ত্র হাতে তুলেছে।
✔️ ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, মহারাষ্ট্রের কিছু অঞ্চলে মাওবাদীরা নিজেদের ‘আত্মরক্ষা বাহিনী’ তৈরি করে রেখেছে।
✔️ কিছু জায়গায় প্রশাসনের দুর্বল উপস্থিতি ও নিরাপত্তার অভাবের সুযোগ নিয়ে মাওবাদীরা নিজেদের ক্ষমতা বাড়িয়েছে।

তবে সাম্প্রতিক অভিযানের ফলে মাওবাদীদের গোপন ঘাঁটি একের পর এক ধ্বংস হচ্ছে, তাদের অস্ত্রভাণ্ডার নষ্ট করা হচ্ছে।


🛡️ বাহিনীর কৌশল কী?

সশস্ত্র বাহিনী ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
নতুন রাস্তা তৈরি করে বাহিনীর প্রবেশাধিকারের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
বায়ুসেনার সাহায্যে মাওবাদী ঘাঁটিগুলোতে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ করা হচ্ছে।
স্থানীয় মানুষকে সরকারের পক্ষে নিয়ে এসে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো হচ্ছে।
আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।


🔥 সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

➡️ আগামী ১৪ মাসে আরও বড় অভিযান চালানো হবে।
➡️ বস্তার, দান্তেওয়াড়া, নারায়ণপুরের গভীর জঙ্গলে সেনার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
➡️ মাওবাদীদের শেষ ঘাঁটিগুলোকে নিশানা করা হবে।
➡️ আদিবাসী ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্প বাড়িয়ে বিদ্রোহীদের মূল সাপোর্ট সিস্টেম ধ্বংস করা হবে।


❓ মাওবাদীরা কি শেষ হয়ে যাবে?

মাওবাদী বিদ্রোহ ভারতের দীর্ঘদিনের সমস্যা। ২০০৬ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং একে ভারতের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংকট বলে উল্লেখ করেছিলেন। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাওবাদীদের শক্তি অনেকটাই কমেছে, তবুও কিছু অঞ্চল এখনো তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সরকার যদি একদিকে কঠোর অভিযান চালিয়ে মাওবাদীদের ধ্বংস করে, অন্যদিকে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে, তাহলে এই সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধান হতে পারে।

আগামী বছরগুলোতে মাওবাদী সমস্যা পুরোপুরি নির্মূল হয় কি না, সেটা সময়ই বলবে!

৩০০ কিলোমিটার যানজটে অচল কুম্ভযাত্রা! ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে পুণ্যার্থীরা, বন্ধ রেলস্টেশনও

Read more

Local News