কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরামর্শদাতা শ্রীরাম!
ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী জানুয়ারিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। তার আগেই তিনি নিজের প্রশাসনকে সাজানোর প্রস্তুতি শুরু করেছেন। এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নীতি নির্ধারণের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ নির্বাচন করেছেন—তিনি শ্রীরাম কৃষ্ণন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত একজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।
শ্রীরামের যাত্রা: চেন্নাই থেকে হোয়াইট হাউস
চেন্নাইয়ে জন্মগ্রহণ করা শ্রীরাম কৃষ্ণন এর আগে মাইক্রোসফ্ট, ইয়াহু, ফেসবুক এবং এক্স (সাবেক টুইটার)-এর মতো বড় বড় সংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং বিশেষ দক্ষতাই তাঁকে ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে প্রিয় করে তুলেছে। এবার তিনি হোয়াইট হাউসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নীতি নির্ধারণে সিনিয়র অ্যাডভাইজ়র হিসেবে কাজ করতে পারেন।
ট্রাম্পের প্রশংসা এবং শ্রীরামের প্রতিক্রিয়া
ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্টের মাধ্যমে এই ঘোষণা দিয়েছেন। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় আমেরিকার নেতৃত্ব দিতে শ্রীরামের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের জন্য শ্রীরাম ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং দায়িত্ব পালনে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন।
ডেভিড স্যাক্সের সঙ্গে কাজ করবেন শ্রীরাম
শ্রীরাম হোয়াইট হাউসে ডেভিড স্যাক্সের সঙ্গে কাজ করবেন। ডেভিড স্যাক্সও ট্রাম্প প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকবেন। তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি সংক্রান্ত নীতিগুলো নির্ধারণে নেতৃত্ব দেবেন। দুই জন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের অভিজ্ঞতা আমেরিকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের প্রশাসনে আরও চমক
শ্রীরামের পাশাপাশি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে আরও বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য নাম দেখা যাবে। যেমন, এক্স-এর কর্ণধার ইলন মাস্ককেও এবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যেতে পারে। নির্বাচনের সময় থেকেই ট্রাম্পের হয়ে প্রচার চালাতে দেখা গেছে মাস্ককে। এমনকি, সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপের সময়ও মাস্ক তাঁর বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন।
শ্রীরাম এবং মাস্কের মধ্যেও বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ২০২২ সালে মাস্ক যখন এক্স কিনে নেন, তখন সেটিকে নতুন করে সাজাতে শ্রীরামের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্পর্কের কারণেই ট্রাম্প প্রশাসনে তাঁদের একসঙ্গে কাজ করার সম্ভাবনা আরও মজবুত হয়েছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় শ্রীরামের সম্ভাব্য ভূমিকা
বর্তমান বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। এআই-এর ব্যবহার এখন শুধু প্রযুক্তি নয়, বরং নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, এবং অর্থনীতির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। হোয়াইট হাউসের নীতিতে এআই-কে সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে একজন দক্ষ পরামর্শদাতার প্রয়োজন। শ্রীরামের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা তাঁকে এই দায়িত্ব পালনের জন্য উপযুক্ত প্রার্থী করে তুলেছে।
ভারতীয়দের জন্য গর্বের মুহূর্ত
শ্রীরাম কৃষ্ণনের এই নিয়োগ ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের জন্য একটি বিশেষ গর্বের মুহূর্ত। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতীয়দের অবদান দিন দিন আরও বেশি স্বীকৃতি পাচ্ছে। শ্রীরামের মতো প্রতিভা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং তাঁদের কাজ প্রমাণ করছে যে দক্ষতা ও পরিশ্রম দিয়ে বিশ্বের যেকোনো উচ্চতায় পৌঁছানো সম্ভব।
শেষ কথা
যদিও ট্রাম্প প্রশাসনে শ্রীরামের ভূমিকা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হয়নি, তবে সম্ভাব্য দায়িত্ব ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। নতুন প্রশাসনে শ্রীরাম কীভাবে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করবেন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নীতিকে কীভাবে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন, তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বিশ্ব।