হোয়াইট হাউসের কাছে গুলির ভয়াবহতা!
হোয়াইট হাউসের কাছেই দিনের আলোয় ঘটে গেল মর্মান্তিক গুলির ঘটনা। মঙ্গলবার (স্থানীয় সময় অনুসারে বুধবার) দুপুরে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্যকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এক বন্দুকবাজ। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল দু’জনকেই। তবে শেষরক্ষা হল না মহিলা রক্ষী সারা বেকস্টর্মের। বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যুর খবর জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্য রক্ষী অ্যান্ড্রু ওল্ফের অবস্থাও এখনও সঙ্কটজনক।
🔴 কোথায়, কীভাবে এই হামলা?
বুধবার দুপুর ২টো ১৫ মিনিট নাগাদ হোয়াইট হাউসের উত্তর-পশ্চিমে মাত্র দু’টি ব্লক দূরে তীব্র গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়ায়। কাছেই ফারাগাট মেট্রো স্টেশন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান—
👉 ন্যাশনাল গার্ডের রক্ষীরা টহলে ছিলেন।
👉 আচমকাই এক যুবক তাঁদের দিকে দ্রুত এগিয়ে আসে।
👉 মুহূর্তের মধ্যেই কোমর থেকে বন্দুক বার করে পরপর গুলি চালাতে শুরু করে।
বন্দুকবাজ সরাসরি নিশানা করেন সারা বেকস্টর্মকে। তাঁর বুকে ও মাথায় গুলি লাগে। একই হামলায় গুরুতর আহত হন রক্ষী অ্যান্ড্রু ওল্ফ। এরপর অপর এক রক্ষীর পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় হামলাকারীর।
🔴 হামলাকারী কে?
ঘটনাস্থলে নিহত বন্দুকবাজের পরিচয় মিলেছে—
👤 রহমানুল্লা লাকানওয়াল
🏳 আফগানিস্তানের নাগরিক
🛫 ২০২১ সালে আমেরিকায় পৌঁছেছিলেন
📌 ওয়াশিংটনের বেলিংহামে থাকতেন
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালিবান দখলের পর আমেরিকার উদ্যোগে ‘অপারেশন অ্যালাইস ওয়েলকাম’ কর্মসূচিতে প্রায় ২০ হাজার আফগানকে উদ্ধার করে আমেরিকায় আনা হয়। রহমানুল্লা তাদের মধ্যেই ছিলেন।
🔴 সারা বেকস্টর্ম— একজন সাহসী রক্ষীর শেষ অধ্যায়
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে সারার মৃত্যুসংবাদ জানিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন—
👉 “ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার সারা বেকস্টর্ম ছিলেন সম্মানিত, সাহসী এবং অসাধারণ মানুষ। কিছুক্ষণ আগেই তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আমরা তাঁকে হারালাম।”
তিনি আরও জানান, অ্যান্ড্রু ওল্ফ এখনও সংকটজনক অবস্থায় জীবনযুদ্ধ লড়ছেন।
সারা ছিলেন আমেরিকার ন্যাশনাল গার্ডের একজন দক্ষ রক্ষী। কর্তব্যরত অবস্থায় এমন বর্বর হামলায় তাঁর মৃত্যু গোটা আমেরিকাকেই হতবাক করেছে।
🔴 কেন এই হামলা? এখনও স্পষ্ট নয়
এফবিআই, মেট্রোপলিটন পুলিশ, ও অন্যান্য সংস্থা যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে।
এখনও পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি—
❓ রহমানুল্লার উদ্দেশ্য কী ছিল
❓ তিনি কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না
❓ ন্যাশনাল গার্ডকে টার্গেট করার বিশেষ কারণ ছিল কি না
তবে এটুকু নিশ্চিত— এটি একটি পরিকল্পিত হামলা। এমনটাই জানিয়েছেন ওয়াশিংটনের মেয়র মুরিয়েল বাউসার।
🔴 আমেরিকার নিরাপত্তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন
হোয়াইট হাউসের মতো সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত এলাকায় এই হামলা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে—
➡ রাজধানীর নিরাপত্তা কতটা সুরক্ষিত?
➡ ‘অপারেশন অ্যালাইস ওয়েলকাম’-এ আশ্রয় পাওয়া ব্যক্তিদের ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই কতটা যথাযথ ছিল?
➡ ন্যাশনাল গার্ডের টহল ব্যবস্থায় কোনও ফাঁক ছিল কি?
ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করেছে। অতিরিক্ত ৫০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে ওয়াশিংটনে।
🔴 শেষকথা
হোয়াইট হাউসের অনতিদূরে এমন রক্তাক্ত হামলা শুধু আমেরিকার নিরাপত্তা নয়, রাজনৈতিক পরিবেশকেও উত্তপ্ত করে তুলেছে। সারার মৃত্যু, অ্যান্ড্রুর সংকটজনক অবস্থা এবং হামলাকারীর পরিচয়— সবকিছু মিলিয়ে তদন্তে আরও বহু জট খুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

