হু-হু করে জনপ্রিয়তা কমছে ‘টকেটিভ’ ট্রাম্পের!
বিশ্বের জনপ্রিয় রাষ্ট্রনেতাদের নিয়ে সম্প্রতি একটি তালিকা প্রকাশ করেছে মার্কিন ব্যবসায়িক গোয়েন্দা সংস্থা ‘মর্নিং কনসাল্ট’। ৪ থেকে ১০ জুলাইয়ের মধ্যে নেওয়া জনমত জরিপের ভিত্তিতে তৈরি এই তালিকায় সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য—ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বিপুল হারে কমেছে, আর নরেন্দ্র মোদী এক নম্বরে নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন।
এই সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এখনও দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষের পছন্দের নেতা। মাত্র ১৮ শতাংশ বিরোধিতা করেন তাঁকে, আর ৭ শতাংশ নিরপেক্ষ। অন্য দিকে, সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি ৫০ শতাংশ আমেরিকান অসন্তুষ্ট। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় দফায় শপথ নেওয়ার পর মাত্র সাত মাসের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা ৪৪ শতাংশে নেমে এসেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই হ্রাসের পেছনে রয়েছে একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও বিদেশনীতি।
ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি, যা বিশেষজ্ঞদের মতে, বেজিংয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়েছে, তা মার্কিন বাজারে ধস নামিয়েছে। এর ফলে মূল্যবৃদ্ধি ও আমদানির সংকট দেখা দিয়েছে। পরবর্তী সময়ে চীনের সঙ্গে তড়িঘড়ি করা বাণিজ্য চুক্তিও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অনেকেই এটিকে আমেরিকার এক ধরনের পিছু হটা বলে মনে করছেন।
তাঁর ‘বড় ও সুন্দর বিল’-এর ফলে অভ্যন্তরীণ কর ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে, যা নিয়ে মার্কিন প্রযুক্তি খাতে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। বিদেশি কর্মীদের উপার্জনের উপর কর আরোপের ফলে সিলিকন ভ্যালির চাকরি হারানোর আশঙ্কাও বেড়েছে, যার জেরে ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের আগ্রহ কমছে।
বিদেশনীতির দিক থেকেও ট্রাম্পকে অনেকটাই ব্যর্থ মনে করছেন সাধারণ মার্কিন নাগরিক। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েও কোনও সাফল্য দেখাতে পারেননি তিনি। উল্টোভাবে কিয়েভকে অস্ত্র সরবরাহের সিদ্ধান্ত তাঁর অবস্থানকে আরও দুর্বল করেছে। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের মধ্যস্থতা করতে চাইলেও নয়াদিল্লি ট্রাম্পের ভূমিকাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে, যার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পড়েছে দুই দেশের সম্পর্কে।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং, তাঁর জনপ্রিয়তা ৫৯ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে আছেন আর্জেন্টিনার জাভিয়ের মাইলি। চতুর্থ স্থানে আছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্টনিও অ্যালবানিজ ও মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শিনবাউম পারডো।
রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের শি জিনপিং এই তালিকার প্রথম দশে জায়গা পাননি। এমনকি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাকরঁ এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারও নেই শীর্ষ ২০-এ।
সব মিলিয়ে, বিশ্ব রাজনীতির জনপ্রিয়তা মানচিত্রে বড় রদবদল দেখা যাচ্ছে। যেখানে মোদী নিজের স্থান আরও মজবুত করছেন, সেখানে ট্রাম্পের সামনে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের পাহাড় ক্রমেই উঁচু হচ্ছে।
করিশ্মার কঠিন সময়ে করিনার নীরব শক্তি: কিভাবে দিদিকে পাশে দাঁড়ালেন বেবো?

