হুয়াওয়ের কিরিন ৯০২০ চিপসেট
এই মাসের শুরুর দিকে, হুয়াওয়ে তাদের মেট ৭০ সিরিজ ঘোষণা করেছে এবং যা আগে থেকেই জানা ছিল, তা নিশ্চিত করেছে— তারা তাদের নতুন চিপসেট কিরিন ৯০২০ নিয়ে এসেছে। এটি পুড়া ৭০ সিরিজে ব্যবহৃত কিরিন ৯০১০-এর উত্তরসূরি। প্রথম দিকে কিছু লিক প্রকাশিত হয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল হুয়াওয়ের সিলিকন ৬ন্যানোমিটার প্রক্রিয়াতে তৈরি হচ্ছে, কিন্তু পরবর্তী বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, হুয়াওয়ের প্রধান ফাউন্ড্রি পার্টনার এসএমআইসি এখনও ৭ন্যানোমিটার প্রক্রিয়াতে থাকলেও তা আরও উন্নত করতে পারেনি। এর মানে হল যে হুয়াওয়ে কিরিন ৯০২০ তৈরির জন্য ১২ন্যানোমিটার প্রক্রিয়া ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এসএমআইসি’র ৭ন্যানোমিটার প্রযুক্তির ব্যবহার
হুয়াওয়ে তার নতুন কিরিন ৯০২০ চিপসেটটি তৈরি করতে এসএমআইসি’র ৭ন্যানোমিটার প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে, যেটি “এন+২” নামে পরিচিত। যদিও হুয়াওয়ে এবং এসএমআইসি ৫ন্যানোমিটার নোড তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল, তবে এটি একটি বাণিজ্যিক মাত্রায় উৎপাদন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর ফলে, যদি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিরিন ৯০২০ তৈরি করা হয়, তবে তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। তাই হুয়াওয়ে বাধ্য হয়ে ৭ন্যানোমিটার প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যা তুলনামূলকভাবে পুরনো এবং কম কার্যকরী।
হুয়াওয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ
বিশ্ব বাজারে হুয়াওয়ের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। মার্কিন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কারণে, হুয়াওয়ে টিএসএমসি কিংবা স্যামসাংয়ের মতো উন্নত প্রযুক্তি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলির চিপসেট ব্যবহার করতে পারছে না। এর ফলে, হুয়াওয়ে এসএমআইসি-এর ৭ন্যানোমিটার প্রযুক্তির উপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে, এটি হুয়াওয়ের জন্য একটি বড় প্রতিবন্ধকতা, বিশেষ করে তাদের চিপসেট উৎপাদন এবং উদ্ভাবন ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার দিকে।
কিরিন ৯০২০ এর ডিজাইন এবং পারফরম্যান্স
কিরিন ৯০২০ চিপসেটটি পূর্ববর্তী কিরিন ৯০০০এস এবং কিরিন ৯০১০-এর মতো পুরনো ডিজাইনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। এটি একটি ১৫% বড় ডাই সাইজে তৈরি করা হয়েছে, যা কিশোরী ক্যাশ মেমরি বাড়ানোর সুযোগ দেয়, যার ফলে পারফরম্যান্সে কিছুটা উন্নতি হতে পারে। তবে, প্রযুক্তিগত দিক থেকে এটি এখনও পুরনো টেকনোলজির অংশ এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় চিপসেট প্রস্তুতকারকদের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা এবং চিপসেট প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ
এসএমআইসি’র ৭ন্যানোমিটার প্রযুক্তির ভবিষ্যত যথেষ্ট অনিশ্চিত। যদিও এটি কিছু সময়ের জন্য উৎপাদন চালিয়ে যেতে সক্ষম, ২০২৬ সাল পর্যন্ত এটি আরও উন্নত ৭ন্যানোমিটার চিপসেট উৎপাদন করতে পারবে না। এই সময়ে অ্যাপল এবং কোয়ালকম-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলি ২ন্যানোমিটার প্রযুক্তি দিয়ে চিপসেট উৎপাদন করবে, যা হুয়াওয়ের জন্য আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। ফলস্বরূপ, হুয়াওয়ে চিপসেট প্রযুক্তির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে এবং তাদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ক্ষুণ্ন হতে থাকবে।
হুয়াওয়ের জন্য দৃষ্টিকোণ পরিবর্তন
এখন হুয়াওয়ের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ তারা প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছে। চিপসেট প্রযুক্তির উন্নতিতে তাদের সীমাবদ্ধতা শুধু ব্যবসায়িক দিক থেকেই নয়, পুরো শিল্প ক্ষেত্রের কাজকর্মের ধরনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ফলে, হুয়াওয়ের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অনেকটাই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পড়েছে এবং তারা বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
এভাবে, এসএমআইসি’র ৭ন্যানোমিটার প্রযুক্তি হুয়াওয়ের জন্য একটি অস্থায়ী সমাধান হলেও, দীর্ঘমেয়াদে এটি তাদের প্রযুক্তিগত সীমানা এবং বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।