Monday, December 1, 2025

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান বন্ধের সিদ্ধান্তে আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের পরাজয়

Share

বন্ধের সিদ্ধান্তে আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের পরাজয়

আমেরিকার অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য বরাদ্দ বিপুল অর্থের অনুদান বন্ধের সিদ্ধান্তে বড় ধাক্কা খেল ট্রাম্প প্রশাসন। বুধবার মার্কিন ফেডেরাল আদালতের বিচারক স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ অবৈধ এবং প্রশাসনকে অবিলম্বে সংশোধনমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।

আদালতের মন্তব্য

বিচারক অ্যালিশন বারোস জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান বন্ধের সিদ্ধান্ত সরাসরি প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ও গবেষণার মানের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। প্রশাসন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ম পরিবর্তন না করার জন্য প্রতিশোধমূলক মনোভাব দেখিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই নির্দেশ প্রত্যাহার করে হার্ভার্ডকে পুনরায় আর্থিক সহায়তা দিতে হবে।

ঘটনার পটভূমি

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ ছিল, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইহুদি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক আচরণ হচ্ছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই প্রথমে ২ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ২০০ কোটি ডলারের বেশি) গবেষণা অনুদান বন্ধ করা হয়। এর পর আরও ৪৫ কোটি ডলারের অনুদান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষ রোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ এই শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানায়। এর ফলেই এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তাদের দাবি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বশাসন ও গবেষণার স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য সরকারের শর্তগুলি মানা সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, সরকারের এই পদক্ষেপ কেবল গবেষণার গতিকে বাধাগ্রস্ত করবে না, বরং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা এবং মুক্তচিন্তার পরিবেশকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

আদালতের রায়

বিচারক বারোস প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর এই ধরনের আর্থিক চাপ সৃষ্টি করা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। প্রশাসনের উচিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা ও শিক্ষার মান রক্ষায় সহযোগিতা করা, প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া নয়।

আগের সংঘাত

এটি ট্রাম্প প্রশাসন ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম সংঘর্ষ নয়। এর আগে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি সংক্রান্ত নীতির ক্ষেত্রে আদালতে পরাজিত হয়েছিল প্রশাসন। তখনও আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তির পক্ষেই রায় দিয়েছিল।

সারসংক্ষেপ

হার্ভার্ডের গবেষণা খাতে অনুদান বন্ধের এই সিদ্ধান্তে আদালতের হস্তক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য বড় ধাক্কা। বিচারকের স্পষ্ট মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করে নীতি চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা গণতন্ত্রের মূল মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ফলে অনুদান পুনরায় চালু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা হার্ভার্ডের গবেষণা ও শিক্ষাক্ষেত্রকে নতুন প্রাণ দেবে।

ওড়িশায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডির তল্লাশি, ১৩৯৬ কোটির প্রতারণা মামলায় উদ্ধার কোটি টাকার সম্পদ

Read more

Local News