Monday, April 14, 2025

হায়দরাবাদের সবুজ হৃদয় ছিঁড়ে ‘উন্নয়ন’, ধ্বংসের মুখে শহরের ফুসফুস!

Share

হায়দরাবাদের সবুজ হৃদয় ছিঁড়ে ‘উন্নয়ন’!

হায়দরাবাদ শহরের প্রাণকেন্দ্রে ৪০০ একর সবুজ বনভূমি। হাজারো গাছ, শত শত প্রাণী, পরিযায়ী পাখির আনাগোনা—এই অরণ্য শুধু প্রকৃতির আশীর্বাদ নয়, বরং শহরের শ্বাসপ্রশ্বাসের আধার। আর সেই অরণ্যই আজ উন্নয়নের দোহাইয়ে বিলুপ্তির পথে!

তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডির সরকার পরিকল্পনা নিয়েছে এই সবুজ জমিতে আইটি পার্ক তৈরি করার। কাঞ্চি গাচ্চিবওলির এই এলাকাকে উন্নয়নের ‘সোনার খনি’ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই কয়েক একর বনভূমি বুলডোজার চালিয়ে খালি করে ফেলা হয়েছে। গাছ পড়ে যাচ্ছে একের পর এক, বনবাসী ময়ূর, হরিণ, সাপ, পাখিরা দিশেহারা। তাদের আর্তনাদ যেন কান পেতে শোনার কেউ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন এই জমি অধিগ্রহণে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন পড়ুয়ারা। পুলিশ ও ছাত্রদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবাদে সরব হয়েছে ছাত্র সংগঠন থেকে পরিবেশকর্মীরা। নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে গাছ কাটা ও প্রাণী নিধনের মর্মান্তিক ছবি—মৃত হরিণছানা, পালাতে থাকা ময়ূর, খোলা জমিতে দাঁড়িয়ে অসহায় পাখির ঝাঁক।

এই পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, আপাতত ৪০০ একর জমিতে কোনও গাছ কাটা যাবে না। এমনকি সেখানে সরকারি কোনও নির্মাণকাজও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, হরিণ ও ময়ূরের উপস্থিতি প্রমাণ করে—এটা শুধুই ‘খালি জমি’ নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্রের আবাস।

এই জমির ইতিহাসও কম নাটকীয় নয়। ২০০৩ সালে বিতর্কিতভাবে এটি তুলে দেওয়া হয়েছিল একটি বেসরকারি সংস্থার হাতে, যারা পরবর্তীতে জালিয়াতির অভিযোগে ফাঁস হয়। ২০২৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়—এই জমি তেলঙ্গানা সরকারের মালিকানাধীন। কিন্তু সেই আইনি মালিকানার দোহাই দিয়ে কি প্রকৃতি নিধন বৈধ হয়ে যায়?

এই বনাঞ্চলে ৭০০-রও বেশি প্রজাতির গাছ আছে, ২৩৭ প্রজাতির পাখির আবাস, রয়েছে হরিণ, বুনো শুয়োর, কাছিম, সাপ-সহ বহু বন্যপ্রাণী। এখানকার ‘পিকক লেক’ ও ‘বাফেলো লেক’ স্থানীয়দের জলের উৎসও বটে। অথচ সরকারের যুক্তি, শহরে তো অনেক জায়গাতেই ময়ূর বা সাপ দেখা যায়—তাতে কি সব জায়গাকে বনভূমি বলা যায়?

সরকার অবশ্য বলছে, জমি নিলাম করলে ৫০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে, তৈরি হবে ৫ লক্ষ চাকরি। কাঞ্চি গাচ্চিবওলি হায়দরাবাদের সবচেয়ে দামি এলাকা, তাই এই সিদ্ধান্ত অর্থনীতির পক্ষে আশীর্বাদ।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—এই অর্থনৈতিক উন্নয়ন কি প্রাণহীন সবুজ শূন্য শহরকে বাঁচাতে পারবে? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও খুঁজছে হায়দরাবাদ, খুঁজছে গোটা দেশ। কারণ শহরের উন্নয়ন যদি

রুই-কাতলার একঘেয়েমিতে বিরাম! স্বাদ বদল আনতে রান্না করুন ট্যাংরা মাছের ঝালঝালে তেল-ঝাল

Read more

Local News