Monday, December 1, 2025

“হাজার বার বলব!”— কলেজকাণ্ডে মন্তব্য ঘিরে তৃণমূলের সঙ্গে প্রকাশ্য সংঘাতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়

Share

কলেজকাণ্ডে মন্তব্য ঘিরে তৃণমূলের সঙ্গে প্রকাশ্য সংঘাতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়

কসবার আইন কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে এসে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সহপাঠীর হাতে সহপাঠিনী আক্রান্ত হলে নিরাপত্তা দেবে কে— এমন মন্তব্যের জেরে দলীয় অবস্থান থেকে প্রকাশ্যেই তাঁকে বিচ্ছিন্ন করে দিল তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু থেমে থাকেননি কল্যাণ। বরং তৃণমূলের প্রকাশ্য বিবৃতি ঘিরে রীতিমতো পাল্টা হুঙ্কার দিয়ে জানালেন— “এই কথা আমি হাজার বার বলব।”

শুক্রবার বিতর্কের সূত্রপাত। গণধর্ষণ প্রসঙ্গে কল্যাণ মন্তব্য করেন, “সহপাঠী যদি সহপাঠিনীকে ধর্ষণ করেন, তা হলে নিরাপত্তা দেবে কে?” তাঁর এই মন্তব্যকে দলের অবস্থান থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে তৃণমূল শনিবার এক্স-এ জানায়, “এই বক্তব্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একান্ত ব্যক্তিগত। দলের সঙ্গে কোনওভাবে এর যোগ নেই।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “মহিলাদের উপর যে কোনও অপরাধের ক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”

তৃণমূলের এই অবস্থান সামনে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই পাল্টা পোস্টে কল্যাণ লিখলেন, “আমি দলের বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছি। ধর্ষকদের যারা আড়াল করছেন, তাঁরা কি পরোক্ষে নেতাদের রক্ষা করতে চাইছেন? এমন মুহূর্তে নিছক বিবৃতি নয়, কড়া পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”

এই মন্তব্যের পরেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু— তবে কি তৃণমূলের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে গেলেন প্রবীণ সাংসদ? আনন্দবাজার ডট কমকে কল্যাণ বলেন, “আমি বলেছি, একজন সহকর্মী যদি সহকর্মিনীকে সম্মান না দেন, তাহলে সমাজ লজ্জায় ডুবে যায়। নিরাপত্তার কথা বললে বুঝতে হবে, রক্ষকই যদি ভক্ষক হন, সেখানে আর ভরসা কোথায়?”

জাতীয় অপরাধ পরিসংখ্যান তুলে কল্যাণ জানান, দেশে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ যৌন হিংসার ঘটনা ঘটে বাড়ির মধ্যেই। “সেখানে নিরাপত্তা কে দেবে?”— প্রশ্ন তাঁর। কল্যাণের দাবি, এই ধরনের অপরাধের সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা ২০১১ সালের পরে রাজনীতিতে এসেছে। আন্দোলন-সংগ্রামের পরিশ্রমে নয়, এসেছে অন্য পথে।

শনিবারই আরও একটি বিতর্ক উস্কে দেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি বলেন, “মেয়েটি যদি কাউকে বলে যেত, বা বান্ধবীদের সঙ্গে যেত, তবে হয়তো ঘটনাটা ঠেকানো যেত।” এই মন্তব্যেরও কড়া সমালোচনা করে তৃণমূল জানায়, মদনের কথাও দলের নয়, তাঁর ব্যক্তিগত।

দুই নেতার এমন অবস্থানের ফলে চাপে তৃণমূল নেতৃত্ব। কল্যাণ প্রকাশ্যেই দলের বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করে জোর দিয়ে বলেন, “আমি যা বলেছি, তা-ই বলব, বারবার বলব।” এই অবস্থায় এখন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা-ই দেখার। দলের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কি কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়, নাকি সংঘাত আরও গভীর হয়— সে দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

উইম্বলডনে হ্যাটট্রিকের লক্ষ্যে আলকারাজ়, জোকোভিচের প্রতিপক্ষ মুলার, তাপপ্রবাহে চিন্তায় আয়োজকরা

Read more

Local News