স্মৃতি ধরে রাখার জাদু: মস্তিষ্কে অ্যাসিটোকোলিন সচল রাখতে রোজকার অভ্যেসে আনুন এই পাঁচ পরিবর্তন!
ব্যস্ত জীবনের চাপে যখন মনোযোগ শূন্যের কোঠায়, তখন সহজেই আমরা ভুলে যাই দরকারি জিনিস। কখনও নাম মনে পড়ে না, কখনও দরকারি তারিখ বা কাজ উধাও হয়ে যায় মন থেকে। কিন্তু আপনি জানেন কি, মস্তিষ্কে একটি বিশেষ রাসায়নিক থাকে যার নাম অ্যাসিটোকোলিন, সেটাই আমাদের স্মৃতি ও একাগ্রতার রাশ টানে? এই নিউরোট্রান্সমিটারই মস্তিষ্কের সঙ্গে স্মৃতির সরাসরি সংযোগ তৈরি করে। আশার কথা, কয়েকটি সহজ পরিবর্তনের মাধ্যমেই আমরা অ্যাসিটোকোলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে স্মৃতিশক্তিকে আগের থেকেও প্রখর করে তুলতে পারি।
আজকের প্রযুক্তিনির্ভর দুনিয়ায় আমাদের মস্তিষ্কে আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি তথ্য ঢুকছে প্রতি মুহূর্তে। ফলে মস্তিষ্ক বিশ্রাম পাচ্ছে না, স্মৃতি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে দ্রুত। অনেকেই ভোগেন ভুলে যাওয়ার সমস্যায়—যা কিনা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আরও বাড়ে। তবে এই সমস্যার একটা কার্যকর সমাধান রয়েছে, আর তা শুরু হয় অ্যাসিটোকোলিনকে সুস্থ রাখার মাধ্যমেই।
এই নিউরোট্রান্সমিটারটি মস্তিষ্কে স্মৃতি, মনোযোগ, শেখার ক্ষমতা ও উদ্দীপনা বজায় রাখতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, অ্যাসিটোকোলিনের ঘাটতি থাকলে অ্যালঝাইমার্স বা স্মৃতিভ্রংশ হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। অথচ খুব সাধারণ পাঁচটি উপায় মেনে চললেই অ্যাসিটোকোলিনের গুণাগুণ কাজে লাগিয়ে মস্তিষ্ককে আরও সক্রিয় রাখা সম্ভব।
প্রথমত, পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। রাতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে শরীর যেমন ক্লান্ত থাকে, তেমনই মস্তিষ্কের মধ্যকার অ্যাসিটোকোলিন ক্ষরণও কমে যায়। সেইসঙ্গে মস্তিষ্কের ব্যায়াম দরকার—শুধু শরীর নয়, মস্তিষ্ককেও চর্চার প্রয়োজন। বই পড়া, ধাঁধা সমাধান করা, দাবা খেলা কিংবা নতুন কিছু শেখা অ্যাসিটোকোলিনের সক্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করে।
তৃতীয়ত, মানসিক চাপ ও অবসাদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। মানসিক চাপ অ্যাসিটোকোলিনের ক্ষরণে বাঁধা সৃষ্টি করে। তাই প্রতিদিন কিছুটা সময় যোগা, ধ্যান কিংবা হালকা ব্যায়ামের জন্য বরাদ্দ রাখুন। এতে মস্তিষ্ক শান্ত থাকবে এবং নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যক্ষমতা বজায় থাকবে।
চতুর্থত, সঠিক পুষ্টিগুণযুক্ত খাবার খাওয়া দরকার। ‘কোলিন’ নামক একটি পুষ্টি উপাদান অ্যাসিটোকোলিন তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা নেয়। ডিম, বাদাম, পালং শাক, চর্বিযুক্ত মাছের মতো খাবারে কোলিনের মাত্রা বেশি থাকে। নিয়মিত এই খাবার খেলে আপনার মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়বে।
শেষে, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ত্যাগ করাও জরুরি। বিশেষ করে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার, প্রসেসড ফুড এবং মদ্যপান—এসব অ্যাসিটোকোলিন উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটায়। এই সব অভ্যাস যত দ্রুত ত্যাগ করা যায়, ততই ভালো।
সবশেষে বলাই যায়, প্রযুক্তি যখন আমাদের মনোযোগ কেড়ে নেয়, তখন এই ছোট্ট পাঁচটি অভ্যেসই হতে পারে মস্তিষ্ককে বাঁচিয়ে রাখার প্রধান অস্ত্র।
“দেশের সম্মান আগে”— পাকিস্তানি অভিনেত্রীর সঙ্গে দিলজিতের কাজ নিয়ে মুখ খুললেন মিকা সিং

