৯০ বছরের প্রেম চোপড়ার হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে উদ্বেগ!
বলিউডের এক সময়ের কিংবদন্তি খলনায়ক প্রেম চোপড়া— যার সংলাপ “প্রেম নাম হ্যায় মেরা… প্রেম চোপড়া” আজও দর্শকের মনে রয়ে গেছে। বয়সের ভারে এখন আর আগের মতো চঞ্চল নন তিনি, তবে চওড়া হাসি আর কোমল ব্যবহার এখনও তাঁকে আলাদা করে রাখে। সেই মানুষটিই সোমবার অসুস্থ হয়ে পড়ায় মুম্বইয়ের একটি প্রথম সারির বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর বয়স এখন ৯০।
পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর জামাতা ও অভিনেতা বিকাশ ভল্লা সংবাদমাধ্যমকে তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট জানান,
“চিন্তার কোনও কারণ নেই। বয়সজনিত কিছু সমস্যা রয়েছে। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসার জন্যই হাসপাতালে রাখা হয়েছে।”
অর্থাৎ, পরিস্থিতি আপাতত স্থিতিশীল। চিকিৎসকেরা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন, কয়েক দিন পরেই হয়তো তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে তাঁর ভক্ত ও বলিউড পরিবার স্বভাবতই উদ্বিগ্ন।
এক প্রজন্মের ‘খলনায়ক’, অন্য প্রজন্মের ‘নরম হৃদয়’
ষাট, সত্তর ও আশির দশকে বলিউডে খলনায়কের সংজ্ঞা বদলে দিয়েছিলেন প্রেম চোপড়া। তাঁর মধুর হাসি এবং শীতল চোখের প্রকাশ— এক অন্যরকম ভিলেনির ছাপ এনে দিয়েছিল হিন্দি ছবিতে।
নায়কদের সঙ্গে নয়, অনেকসময় দর্শকের মনেই ভয় ধরিয়ে দিতে পারতেন তিনি। তাঁর কণ্ঠের সুর আর ধীরস্থির ভঙ্গি তাঁকে বলিউডের সবচেয়ে স্মরণীয় এবং ‘স্টাইলিশ’ ভিলেনদের একজন করেছে।
ক্যারিয়ারে ৩৮০টিরও বেশি ছবি—
যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- ববি
- দো রাস্তে
- কাশ্মীর কি কালি
- কাতি পতঙ্গ
- দো অনজানে
- এজেন্ট বিনোদ
- কর্মা
তিনি ছিলেন একদিকে ভয়ের প্রতীক, অন্যদিকে পর্দার বাইরে অতি সরল ও হাসিখুশি মানুষ। সহকর্মীরা বলতে ভালোবাসতেন—
“যেই মুহূর্তে ক্যামেরা বন্ধ, প্রেমজি সবচেয়ে মিষ্টি মানুষ।”
প্রেম চোপড়ার অসুস্থতার খবর যখন এল, তখনই উদ্বিগ্ন বলিউড
এর আগে ধর্মেন্দ্র-কে ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়েছিল, সেই খবরেই বলিউডে উদ্বেগ ছড়ায়। তাঁর পরেই প্রেম চোপড়াকে হাসপাতালে নেওয়ার খবর, ফলে মায়ানগরী যেন আর একবার আতঙ্কে কেঁপে উঠেছে।
প্রেম চোপড়ার বয়স ৯০। বার্ধক্য স্বাভাবিকভাবেই কিছু সমস্যা নিয়ে আসে। চিকিৎসকের বক্তব্য—
“নিয়মিত বিশ্রাম এবং মৃদু চিকিৎসাই যথেষ্ট। আপাতত ঝুঁকি নেই।”
বিকাশ ভল্লার ভাষায়—
“ভক্তরা উদ্বিগ্ন হতেই পারেন। তবে আমরা তাঁদের আশ্বস্ত করছি— তিনি ভালো আছেন এবং শিগগিরই বাড়ি ফিরবেন।”
দর্শকের অনুভব
যে মানুষটি এক সময় পর্দার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর চরিত্রে অভিনয় করলেও দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন— তাঁর অসুস্থতার খবর স্বাভাবিকভাবে আবেগ জাগায়।
সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই লিখছেন—
- “শুধু সিনেমার খলনায়ক ছিলেন, জীবনভর আসলে ছিলেন এক ভালোমানুষ।”
- “শীঘ্র সুস্থ হোন, প্রেমজি। আপনার হাসি আবার দেখতে চাই।”
শেষ কথা
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নায়ক নায়িকার জনপ্রিয়তা পাল্টে যায়, কিন্তু কিছু অভিনেতা সময়-ইতিহাস-কালের সীমানা পেরিয়ে জীবন্ত স্মৃতি হয়ে ওঠেন।
প্রেম চোপড়া তাঁদেরই একজন।
আজ তাঁর পাশে কোটি কোটি দর্শক কেবল একটাই প্রার্থনা করছেন—
“দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন প্রেমজি। মিষ্টি হাসিটা আবার দেখতে চাই।”
স্বাস্থ্য স্থিতিশীল। আশা, খুব তাড়াতাড়ি তিনি নিজের বাড়িতে ফিরবেন— যেমন তিনি ফিরেছেন দর্শকের মনে বহু দশক ধরে।

