সৌদি সফরে জ়েলেনস্কি!
আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবে সফরে যাচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, তিনি সেখানে মার্কিন কর্তাদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করবেন না। বরং তাঁর প্রতিনিধিদের পাঠিয়ে দেবেন, যারা আমেরিকার সঙ্গে ‘শান্তি আলোচনা’য় অংশ নেবে। এই সিদ্ধান্ত ইউক্রেন-আমেরিকা সম্পর্কের ক্ষেত্রে কী বার্তা দিচ্ছে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা।
সৌদি সফর, তবে মার্কিন কর্তাদের সঙ্গে দেখা নয়!
জ়েলেনস্কি বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ভাষণে জানিয়েছেন, সৌদি আরবের রাজা সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তিনি নিজে সেখানে যাবেন। তবে তাঁর প্রতিনিধি দল সেখানে থেকে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ইউক্রেন সবসময় শান্তিতে বিশ্বাসী। আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও জানিয়ে দিয়েছি যে দ্রুত ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সর্বদা কাজ করতে প্রস্তুত।”
ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকে বসেছিলেন জ়েলেনস্কি। তবে সেই বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। ট্রাম্প স্পষ্ট জানান যে, জ়েলেনস্কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে রাজনীতি করছেন এবং প্রকৃত অর্থে শান্তি চান না। পাল্টা জ়েলেনস্কি জানিয়ে দেন, রাশিয়ার সঙ্গে আপসের কোনো সুযোগ নেই। ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে তিনি কখনও সমঝোতা করবেন না। এছাড়া তিনি আমেরিকার কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তাও চান। এই বৈঠকের পরপরই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গেও জ়েলেনস্কির বিতর্ক হয়, যা বিশ্বমঞ্চে বেশ আলোচিত হয়।
এই বিতর্কের জেরে জ়েলেনস্কি মধ্যাহ্নভোজ না করেই হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন। পাশাপাশি, ইউক্রেন ও আমেরিকার মধ্যে পরিকল্পিত খনিজ সম্পদ চুক্তিও বাতিল হয়ে যায়।
ইউরোপের সমর্থন ও সামরিক সাহায্য
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের পর জ়েলেনস্কি সরাসরি ব্রিটেনে চলে যান। সেখানে তিনি ব্রিটেন ও ফ্রান্সের কাছ থেকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাতে বিশেষ ঋণ ও সামরিক সহায়তা পান। ইউক্রেনে সেনা সরবরাহ এবং আর্থিক সহায়তার জন্য ব্রিটেন-ফ্রান্স একযোগে কাজ করছে। এই ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে, ইউক্রেন ইউরোপীয় শক্তিগুলোর কাছ থেকে সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছে।
আমেরিকার প্রয়োজন স্বীকার করলেন জ়েলেনস্কি
তবে সবকিছু সত্ত্বেও জ়েলেনস্কি স্বীকার করেছেন যে, ইউক্রেনের জন্য আমেরিকার সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করা সম্ভব এবং দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
সৌদি আরবে মার্কিন কর্তাদের সঙ্গে ইউক্রেনের আলোচনাও সেই উদ্যোগের অংশ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই বৈঠক প্রকৃতপক্ষে ইউক্রেন ও আমেরিকার মধ্যে শান্তি ও সহযোগিতার নতুন পথ খুলে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে জ়েলেনস্কির এই কৌশল ভবিষ্যতে কতটা কার্যকর হবে, তা দেখার বিষয়।
ভারতের উপর পাল্টা শুল্ক চাপাচ্ছেন ট্রাম্প! ঘোষণা করলেন নির্দিষ্ট তারিখও

