Saturday, February 1, 2025

সূরজের দাপটেও স্বপ্নভঙ্গ! ইনিংসে জিতেও কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারল না বাংলা, ইডেনে শেষ ম্যাচ খেলেই অবসর নিলেন ঋদ্ধিমান

Share

সূরজের দাপটেও স্বপ্নভঙ্গ অবসর নিলেন ঋদ্ধিমান!

ইডেন গার্ডেন্সে এক আবেগঘন বিদায় নিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। ভারতের প্রাক্তন টেস্ট উইকেটরক্ষক, যিনি দীর্ঘদিন বাংলার হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন, অবশেষে বিদায় জানালেন পেশাদার ক্রিকেটকে। রঞ্জি ট্রফিতে শেষ ম্যাচ খেলেই ঘোষণা করলেন অবসর।

শনিবার পঞ্জাবকে ইনিংস ও ১৩ রানে হারিয়েও বাংলার রঞ্জি ট্রফির অভিযান শেষ হয়ে গেল। গ্রুপের শীর্ষ দুইয়ে থাকতে না পারায় কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা পেল না অনুষ্টুপ মজুমদারের দল। একদিকে ঋদ্ধিমানের অবসর, অন্যদিকে দলের বিদায়—বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য যেন এক দ্বৈত আবেগের মুহূর্ত হয়ে থাকল এই ম্যাচ।

সূরজের দাপটে দারুণ জয়, তবুও ছিটকে গেল বাংলা

বাংলার জয়ের নায়ক সূরজ সিন্ধু জয়সওয়াল। ব্যাট হাতে ১৮৫ বলে ১১১ রান করা এই অলরাউন্ডার বল হাতে ছিলেন আরও বিধ্বংসী। ম্যাচের দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮টি উইকেট তুলে নেন তিনি, যার জোরেই ইনিংস ব্যবধানে পঞ্জাবকে হারায় বাংলা।

এই জয়ে বাংলা সাত পয়েন্ট পেল ঠিকই, কিন্তু তাতে লাভ কিছুই হলো না। গ্রুপ পর্বের সাত ম্যাচ থেকে বাংলার সংগ্রহ মোট ২১ পয়েন্ট, যেখানে কেরল ২৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে এবং হরিয়ানা ২৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। হরিয়ানার একটি ম্যাচ তখনও চলছিল, তাই বাংলা আর প্রথম দুইয়ে উঠে আসার সম্ভাবনাই হারিয়ে ফেলেছিল। অর্থাৎ, গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হলো বাংলা দলকে।

ইডেনে শেষ ম্যাচ, সংবর্ধনা পেলেন ঋদ্ধি

এই ম্যাচ ছিল বাংলার হয়ে ঋদ্ধিমান সাহার শেষ ম্যাচ। আগেই ঘোষণা করেছিলেন, এই রঞ্জি ট্রফির পর অবসর নেবেন তিনি। ইডেনে বাংলার ক্রিকেট সংস্থা তাঁকে বিশেষ সম্মাননা জানায়। সতীর্থরা তাঁর জন্য বাংলার জার্সিতে স্বাক্ষর করে উপহার দেন।

৪০টি টেস্ট খেলা এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার জাতীয় দলের হয়ে বহু স্মরণীয় মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন। বাংলার হয়েও তিনি একাধিক মরসুমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। যদিও শেষ ইনিংসে শূন্য রানে আউট হন, তবু বাংলার ক্রিকেটে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

কোথায় পিছিয়ে গেল বাংলা?

এই মৌসুমে বাংলার পারফরম্যান্স মাঝারি মানেরই ছিল। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে (টি-টোয়েন্টি) এবং বিজয় হজারে ট্রফিতে (এক দিনের প্রতিযোগিতা) নকআউটে উঠলেও ট্রফির লড়াইয়ে থাকতে পারেনি বাংলা। আর রঞ্জি ট্রফিতে তো গ্রুপ পর্ব পার করাই সম্ভব হলো না।

বাংলার এই ব্যর্থতার অন্যতম কারণ হলো ধারাবাহিকতা ও ব্যাটিং ব্যর্থতা। এই ম্যাচেও তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে।

ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ

প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে পঞ্জাব ১৯১ রান তোলে। বাংলার হয়ে সূরজ ৪ উইকেট নেন, অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা সুমিত মোহান্তাও ৪ উইকেট শিকার করেন। পঞ্জাবের হয়ে শতরান করেন অনমল মলহোত্র, যাঁর ব্যাটেই দল কিছুটা লড়াইয়ের জায়গায় পৌঁছেছিল।

বাংলার ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি। ওপেনার অঙ্কিত চট্টোপাধ্যায় (১১) ও সুদীপ চট্টোপাধ্যায় (১৭) ব্যর্থ হন। অধিনায়ক অনুষ্টুপ (৩২) এবং সুমন্ত গুপ্ত (৫৫) কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। কিন্তু মূল চালকের আসনে বসান নৈশপ্রহরী হিসেবে নামা সূরজ সিন্ধু। তিনি দুর্দান্ত শতরান করেন। অভিষেক পোড়েলও ৫২ রান করেন। সব মিলিয়ে বাংলা ৩৪৩ রান তোলে, যা পঞ্জাবকে প্রবল চাপে ফেলে দেয়।

দ্বিতীয় ইনিংসে পঞ্জাব মাত্র ১৩৯ রানেই গুটিয়ে যায়। সূরজ এখানেও ৪টি উইকেট নেন, সুমিত ৩টি ও কইফ ২টি উইকেট নেন। ফলে ইনিংস ও ১৩ রানে বিশাল জয় পায় বাংলা।

নতুন সূর্যোদয়ের অপেক্ষায় বাংলা ক্রিকেট

বাংলার জন্য এই মৌসুম শেষ হয়ে গেলেও ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে দলকে। অভিষেক পোড়েল, সূরজ সিন্ধুর মতো তরুণরা আশা দেখাচ্ছেন। তবে বাংলা ক্রিকেটের কাঠামোগত উন্নয়ন, ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা ও মিডল-অর্ডারের শক্তি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা এবার আরও স্পষ্ট হয়ে গেল।

অন্যদিকে, ঋদ্ধিমান সাহার বিদায় এক যুগের সমাপ্তি ঘটাল। তবে তিনি বাংলার ক্রিকেটের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত থাকবেন, এটাই সকলের প্রত্যাশা। বাংলা ক্রিকেট এবার নতুন সূর্যের অপেক্ষায়.

মধ্যবিত্তদের জন্য সুখবর! ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে আর কোনও আয়কর নয়

Read more

Local News