Monday, December 1, 2025

সুপ্রিম কোর্টের রায়: বকেয়া ডিএ পরিশোধে রাজ্যের কাঁধে ১০ হাজার কোটির বোঝা, কোথা থেকে আসবে অর্থ?

Share

সুপ্রিম কোর্টের রায়!

সুপ্রিম কোর্টের এক ঐতিহাসিক নির্দেশে বড়সড় চাপে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘভাতা বা ডিএ-র ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে বলেই শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং সন্দীপ মেহতার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এই নির্দেশ মানতে হলে রাজ্য সরকারকে সংস্থান করতে হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ। এমনিতেই রাজ্যের আর্থিক অবস্থার হাল বেহাল। তার উপর এই নতুন দায় যেন গোদের উপর বিষফোড়া।

এত বড় অঙ্কের টাকা কোথা থেকে আসবে? প্রশাসনের অন্দরে চলছে জোর আলোচনা। কেউ কেউ বলছেন, জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের বাজেট কাটছাঁট করেই ওই অর্থ সংগ্রহ করতে হতে পারে। আবার অনেকে মনে করছেন, সুপ্রিম কোর্টের এই অন্তর্বর্তী নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করার মতো সুযোগ বা শক্তি রাজ্যের হাতে নেই বললেই চলে।

রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ একাধিক কর্মকর্তা ও মন্ত্রীর মতে, এখন দু’টি রাস্তা খোলা রয়েছে—
১. নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের অন্য বেঞ্চে যাওয়া,
২. জনমুখী প্রকল্পগুলোর খাতে বরাদ্দ কমিয়ে অর্থ সংস্থান।

কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে লক্ষ্মীর ভান্ডার বা ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পে বরাদ্দ কমানো রাজনৈতিক ভাবে আত্মঘাতী হতে পারে বলেই মনে করছেন তৃণমূলের অনেকেই।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বলা হয়নি, কত দিনের মধ্যে বকেয়া ডিএ-র ওই অংশ মেটাতে হবে। ফলে আইনজীবীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে— কেউ বলছেন ৪ সপ্তাহ সময় আছে, কেউ মনে করছেন পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত (আগস্ট) সময় পাওয়া যেতে পারে। তবে যে করেই হোক, বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ যে পরিশোধ করতেই হবে, তা নিশ্চিত।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২০ মে কলকাতা হাই কোর্ট কেন্দ্রের হারে (৩১%) ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। রাজ্য সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায়। কিন্তু শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, হাই কোর্টের রায়ে কোনও ভুল ছিল না। এখন রাজ্য সরকারি কর্মীরা পান ১৮ শতাংশ হারে ডিএ, অর্থাৎ এখনও কেন্দ্রের চেয়ে প্রায় ৩৭ শতাংশ কম।

রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এমনিতেই শোচনীয়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের শেষে রাজ্যের ঋণের বোঝা জিডিপি-র ৩৮ শতাংশ ছুঁতে পারে। এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ দেশের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে বলেছেন, কেন্দ্র রাজ্যের বহু টাকা আটকে রেখেছে, যার জেরে আবাস যোজনা থেকে শুরু করে ১০০ দিনের কাজ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলো চালাতে হচ্ছে রাজ্যকেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, “কোন খাত থেকে কাটছাঁট করে ডিএ-র অর্থ জোগানো যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। প্রয়োজনে ড. অমিত মিত্রের পরামর্শও নেওয়া হবে।” তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি। অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “এ বিষয়ে আমি এখন কিছু বলব না।”

জেনিভার নিলামে ঝলসে উঠল ‘মেডিটেরেনিয়ান ব্লু’, ১০ ক্যারাটের হিরের দাম ১৮৪ কোটি!

Read more

Local News