Monday, December 1, 2025

সীমান্তে কিমের সেনা, জড়িয়ে পড়ছে ইরান, চিনও! রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরিণত?

Share

সীমান্তে কিমের সেনা

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করলেও, সংঘাতের উত্তাপ এখনো থামেনি। দিনদিন পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে, বিশেষত যখন রাশিয়া তাদের ‘নিউক্লিয়ার ডক্ট্রিন’ বদলে প্রথমবারের মতো আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ইউক্রেন এবং তার মিত্র দেশগুলির জন্য এক কঠোর সতর্কবার্তা, যা এই সংঘাতকে একটি আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছানোর ঝুঁকি বাড়িয়েছে।

রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপগুলো স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, তারা এই যুদ্ধে আরও বড় শক্তি ও অস্ত্রের ব্যবহার করতে প্রস্তুত। গত কয়েকদিনে, রাশিয়া ইউক্রেনে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, যা সংঘাতের মাত্রা এবং বর্বরতা আরও বৃদ্ধি করেছে বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মন্তব্য করেছেন। এই হামলার পর থেকেই ইউক্রেনের শীর্ষ নেতারা এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা চিন্তিত যে, এই যুদ্ধ অতি দ্রুত একটি বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হতে পারে।

ইউক্রেনের প্রাক্তন সামরিক প্রধান ভ্যালেরি জালুঝনি দাবি করেছেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। তাঁর মতে, রাশিয়া এবং তার মিত্র দেশগুলি—বিশেষত উত্তর কোরিয়া এবং ইরান—যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ায় এটি বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তিনি আরও জানান, উত্তর কোরিয়ার সেনারা ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের সীমান্তে উপস্থিত এবং ইরান তাদের ড্রোন ও অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার পক্ষে সরাসরি সহায়তা করছে। এমনকি, চিনও তাদের অস্ত্র পাঠিয়ে সংঘাতে যুক্ত হয়েছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আঞ্চলিক পরিসরের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা যে দ্রুতই বাস্তবতা হতে পারে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সতর্কতা প্রকাশ করেছেন। যুদ্ধের এই নতুন পর্যায়ে, পশ্চিমা দেশগুলোর সরাসরি জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাশিয়ার উপর পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।

রাশিয়া এই পদক্ষেপগুলোকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের শক্তির প্রদর্শন হিসেবেও দেখতে পারে, তবে এটি কেবল ইউক্রেনের পক্ষে নয়, বরং বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তার জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত, যখন জানা যায় যে, কেবল রাশিয়া নয়, উত্তর কোরিয়া ও ইরানও সরাসরি ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠিয়ে সহায়তা করছে, তখন এই সংঘাতের পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এখন, রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপের পর ইউক্রেনের শীর্ষ নেতারা আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মতে, এটি শুধুমাত্র ইউক্রেনের জন্য নয়, বরং বিশ্বের শান্তির জন্যও একটি সংকটজনক মুহূর্ত। এই যুদ্ধ যদি আরও বিস্তৃত হয়, তবে তা একটি বৃহৎ যুদ্ধের জন্ম দিতে পারে যা বিশ্বব্যাপী বিপর্যয় ডেকে আনবে।

বিশ্বব্যাপী কূটনীতিকরা এখন এই যুদ্ধের পরিণতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। বিশেষত, যদি এই সংঘাত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হয়, তবে তা কেবল ইউরোপের জন্য নয়, পৃথিবীর প্রতিটি দেশ ও জনগণের জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

Read more

Local News