Saturday, May 10, 2025

সিন্ধু চুক্তি কি বাতিলের পথে? পহেলগাঁওর জবাবে ভারত যদি জল টানে, কেমন ধাক্কা খাবে পাকিস্তান!

Share

সিন্ধু চুক্তি কি বাতিলের পথে?

পহেলগাঁও সন্ত্রাসের রেশ কাটেনি এখনও। আর এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের সাম্প্রতিক অবস্থান ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে—৬৫ বছরের পুরনো ভারত-পাকিস্তান সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি কি এবার বাতিল হতে চলেছে? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকার আপাতত চুক্তি ‘স্থগিত’ রাখার কথা জানালেও, কূটনৈতিক মহল বলছে—এই পদক্ষেপ আসলে এক গভীর জলযুদ্ধের শুরু হতে পারে।

৬৫ বছরের পুরনো চুক্তির পেছনের কাহিনি

১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। টানা ৯ বছরের আলোচনার পরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আয়ুব খানের মধ্যে বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয়েছিল সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু, ঝিলম ও চেনাব নদীর উপর অধিকার পায় পাকিস্তান। ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকে বিয়াস, শতদ্রু ও রাভি। এই ভাগাভাগির ফলে পাকিস্তান পায় মোট জলপ্রবাহের প্রায় ৮০ শতাংশ, ভারতের ভাগ মাত্র ২০ শতাংশ!

জলচুক্তির ফাটল এবং সন্ত্রাসের ছায়া

২০১৬ সালে পাকিস্তান অভিযোগ তোলে যে, ভারত কিষেণগঙ্গা ও রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে চুক্তি লঙ্ঘন করছে। যদিও পরবর্তী সময়ে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকেরা জানিয়ে দেন—ভারত নিজের প্রয়োজনে প্রকল্প করেছে, পাকিস্তানের জল আটকানোর উদ্দেশ্যে নয়। এর মাঝে, নয়াদিল্লি ইসলামাবাদকে চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের চিঠিও পাঠায়। তারপরই প্রশ্ন ওঠে—এটা কি চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তুতি?

পহেলগাঁও: জলরাজনীতিতে নতুন মোড়?

পহেলগাঁওর ঘটনার পরে ভারত দ্বিতীয় বার নোটিস পাঠায় পাকিস্তানকে। সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসের জবাবে এই পদক্ষেপ কি কাকতালীয়? অনেকেই বলছেন, এ বার মোদী সরকার চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে পাকিস্তানকে জলের দিক থেকে কোণঠাসা করতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের জল আটকে দেওয়া মানেই পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে সেচব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, সরাসরি ধাক্কা খাবে কৃষি উৎপাদন। আর দেশের ৮০ শতাংশ কৃষি যখন সিন্ধু নদীর জলের উপর নির্ভরশীল, তখন এই ধাক্কা পাকিস্তানের অস্তিত্বকেই নাড়িয়ে দিতে পারে

এক নতুন কূটনৈতিক খেলা?

সিন্ধু চুক্তি শুধু এক জলবণ্টন চুক্তি নয়—এটা ভারত-পাক সম্পর্কের একটি স্থিতিশীল স্তম্ভ ছিল এতদিন। কিন্তু সীমান্তে চলতে থাকা জঙ্গি হামলা, সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক উত্তেজনার আবহে ভারতের ধৈর্যের বাঁধ এবার ভেঙে যাচ্ছে বলেই মত আন্তর্জাতিক কূটনৈতিকদের।

উপসংহার: এবার কি সত্যিই জলযুদ্ধ?

১৯৪৭-৪৮ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের পেছনেও ছিল সিন্ধু নদীর জল দখলের লড়াই। ইতিহাস বলছে, তখনও কাশ্মীর আক্রমণের পেছনে ছিল জিন্নাহ সরকারের জল-লালসা। এ বার পহেলগাঁও হামলার প্রেক্ষিতে ভারত কি সেই পুরনো জবাবটাই দিতে চলেছে—জল থামিয়ে? একটি সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক মানচিত্র। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

দেশ ছেড়ে কাতারে সংসার? সইফ-করিনার নতুন জীবন শুরু হতে চলেছে!

Read more

Local News