সিন্ধুর বুকে সোনার খনি!
দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের জন্য আশার আলো দেখা যাচ্ছে সিন্ধু নদীতে! সম্প্রতি দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, সিন্ধুর জলে পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ সোনার মজুদ। আনুমানিক ৮০ হাজার কোটি টাকার এই স্বর্ণভাণ্ডার সত্যিই যদি উদ্ধার করা যায়, তবে তা পাকিস্তানের অর্থনীতির চেহারাই বদলে দিতে পারে।
স্বর্ণভাণ্ডারের সন্ধান
পাকিস্তানের সরকারি সংস্থা ‘ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস পাকিস্তান’ এবং পাঞ্জাবের খনি ও খনিজ বিভাগের যৌথ গবেষণায় সিন্ধু নদীর অন্তত ৩২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে স্বর্ণের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। ‘দ্য ডন’ সংবাদপত্রের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঞ্জাব প্রদেশের অ্যাটক জেলায় চালানো জরিপের মাধ্যমে ১২৭টি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে স্বর্ণের সম্ভাব্য মজুদ রয়েছে।
আর্থিক সঙ্কটে স্বস্তি দেবে এই সোনা?
বর্তমানে পাকিস্তানের অর্থনীতি সংকটের মধ্যে রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি এবং কর ঘাটতির চাপ দেশটির অর্থনীতিকে আরও দুর্বল করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিন্ধু নদীর তলদেশ থেকে যদি সফলভাবে এই সোনা উত্তোলন করা যায়, তবে তা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করবে এবং পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সোনা সংরক্ষণকারী দেশগুলোর তালিকায় উপরের দিকে উঠে আসবে।
নতুন কর্মসংস্থানের আশা
পাকিস্তান সরকার ইতোমধ্যেই সিন্ধু নদীর স্বর্ণখনি উন্নয়নের জন্য নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করার পরিকল্পনা করছে। আটকের ৩২ কিলোমিটার এলাকাকে নয়টি ব্লকে ভাগ করে ধাপে ধাপে খনন কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়, তবে এতে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। পাশাপাশি, দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদের আরও ব্যবহারের পথ সুগম হবে।
অতীতের অভিজ্ঞতা কি বলছে?
পাকিস্তানে এর আগেও বহুবার খনিজ তেল ও গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার দাবি করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘোষণা করেছিলেন যে পাকিস্তানে বিপুল পরিমাণ তেল ও গ্যাসের ভাণ্ডার রয়েছে। তবে সেই খনন কাজ পরবর্তীতে ব্যর্থ হয়। ফলে বর্তমান স্বর্ণভাণ্ডারের সন্ধানকেও অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখছেন।
সত্যিই কি ভাগ্য বদলাবে?
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এবং সরকারের পক্ষ থেকে সিন্ধুর স্বর্ণভাণ্ডার নিয়ে আশার কথা বলা হলেও, এই সোনা উত্তোলনের কাজ কতটা বাস্তবসম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। খনন ও প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি, পরিবেশগত প্রভাব এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ এই প্রকল্পের সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।
এই স্বর্ণখনি পাকিস্তানের অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে কতটা ভূমিকা রাখবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে আপাতত এই খবর পাকিস্তানের জন্য এক টুকরো আশার আলো হয়ে উঠেছে।
ভারতের উপর পাল্টা শুল্ক চাপাচ্ছেন ট্রাম্প! ঘোষণা করলেন নির্দিষ্ট তারিখও