সস্তা ঋণ দিয়ে অস্ত্র ব্যবসায় ভারতী কৌশল
বিশ্বের অস্ত্র বাজারে প্রতিযোগিতার ঢেউ চলছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত এখন নতুন এক কৌশল নিয়ে অস্ত্র ব্যবসার দিকে নজর দিয়েছে। আর সেই কৌশল হল—সস্তা ঋণ দিয়ে দেশের প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির উৎপাদন বাড়ানো এবং বিশ্বে অস্ত্র বিক্রি ত্বরান্বিত করা।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের লক্ষ্য, ভারতীয় প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে বিশ্বের অস্ত্র বাজারে প্রতিযোগী হওয়ার। এই উদ্যোগের মূল কথা, সস্তা ঋণ প্রদান করা এবং একাধিক দেশকে সেই ঋণ দিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র কেনার জন্য উৎসাহিত করা। ভারতের তৈরি অস্ত্র তুলনামূলক সস্তা হওয়ায়, বিভিন্ন দেশের আগ্রহ এতে বাড়বে, এমনটাই ভাবছে সরকার।
প্রতিবেদনের সূত্র অনুযায়ী, ভারত সরকার ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি দেশকে সস্তা ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। এই ঋণের মাধ্যমে এই দেশগুলোকে বাধ্য করা হবে কেবল ভারতের তৈরি অস্ত্র কেনার জন্য। এতে একদিকে যেমন অস্ত্র নির্মাণকারী সংস্থাগুলির বরাত বাড়বে, তেমনই ঋণের সুদ থেকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য মোটা আয় হবে।
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমদানিকারী দেশ হিসেবে ইউক্রেন উঠে এসেছে। ভারত দ্বিতীয় স্থানে। ভারতের লক্ষ্য হল, অস্ত্র উৎপাদনে আত্মনির্ভরতা বৃদ্ধি করে, এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠে প্রতিরক্ষা রফতানি বাড়ানো। ভারতীয় অস্ত্রের প্রতি চাহিদা বাড়ানোর জন্য প্রধানত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকা এবং আফ্রিকায় কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
ভারত এবং রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের চাহিদা বাড়ছে। ইতিমধ্যেই ফিলিপিন্স এই মারণাস্ত্র কিনেছে। ভারতের কাছে এই ধরনের আধুনিক অস্ত্র তৈরির প্রযুক্তি রয়েছে, যা বিশ্বে অনেক দেশই চাইছে। উদাহরণ হিসেবে দেখা যেতে পারে, আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র, যা ইতিমধ্যেই আর্মেনিয়াকে সরবরাহ করেছে ভারত।
এছাড়া, বিভিন্ন দেশ যেমন ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, নাইজেরিয়া, ফিলিপিন্স এবং অস্ট্রেলিয়া ভারতের তৈরি তেজস যুদ্ধবিমান এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে। বিশেষ করে, ইউরোপীয় দেশগুলোও ভারতের অস্ত্রের দিকে মনোযোগী হয়ে উঠেছে।
তবে, অস্ত্র ব্যবসা কেবল রফতানি বাড়ানোর লক্ষ্যে নয়, ভারত সরকার চাইছে আন্তর্জাতিক স্তরে আরও আধুনিক ও শক্তিশালী অস্ত্র তৈরি করতে। বিশেষ করে, এ ধরনের অস্ত্র তৈরি করতে রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি উদ্যোগের সহযোগিতা প্রয়োজন। সরকারের এই উদ্যোগে আদানি ডিফেন্স এবং এসএএসএস ডিফেন্সের মতো বেসরকারি সংস্থাগুলিও অংশীদার হতে শুরু করেছে।
বিশ্বের সেরা অস্ত্র নির্মাণকারী দেশগুলোর মতো ভারতের অস্ত্রের মান এবং সক্ষমতা আরও বাড়ানো উচিত, এমন মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। আগামী দিনে কেন্দ্র এই চ্যালেঞ্জ কতটা সফলভাবে মোকাবেলা করতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ক্যাস্টর অয়েল চুলের জন্য চমৎকার, তবে কীভাবে ব্যবহার করবেন? জানুন ৫ সহজ উপায়

