পরিবহণ দফতর
রাজ্যে সরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য তৎপর হয়েছে পরিবহণ দফতর। বিশেষত কলকাতার মতো জনবহুল শহরে যাত্রীদের বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই সরকার রাস্তায় বাসের সংখ্যা এবং ট্রিপ বাড়ানোর জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। আজ, সোমবার থেকে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহন সরেজমিনে বিভিন্ন রুটে বাসের উপস্থিতি পরীক্ষা করবেন।
কলকাতায় সারা দিনে সব সরকারি পরিবহণ নিগম মিলিয়ে প্রায় ৫৫০টি বাস পথে নামে। তবে, এই সংখ্যাটি অনেক সময় যাত্রীদের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট হয় না। বিভিন্ন রুটে বাসের উপস্থিতি কেমন এবং কোথায় কতক্ষণ অন্তর বাস পাওয়া যাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে পরিবহণ দফতরের পদক্ষেপ। বিশেষত বিমানবন্দর, নবান্ন, সেক্টর ফাইভ, ই এম বাইপাস, গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালগুলির রুটে বাসের সংখ্যা বাড়ানোর দিকে জোর দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর প্রশাসনিক উদ্যোগ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত দিনগুলিতে সড়ক পরিবহণের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। বিশেষত, বিমানবন্দর, নবান্ন, সেক্টর ফাইভ, সিটি সেন্টার এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রুটে বাসের সংখ্যার ঘাটতি নিয়ে নানা অভিযোগ উঠে আসে। এতে পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হয়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই পরিবহণ দফতর দ্রুত বাসের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিভিন্ন রুটে যাত্রীদের চাহিদা বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং সকাল ও বিকেলের ব্যস্ত সময়ে বাসের ট্রিপ সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চালক এবং কন্ডাক্টরের অভাব। সরকারি বাসের চালক ও কন্ডাক্টরের একটি বড় অংশ অবসর নিয়েছেন, এবং এই শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। এই অভাব পূরণের জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
বাড়ানো হয়েছে ট্রিপ সংখ্যা এবং নতুন বাসের সংখ্যা
কলকাতার বিভিন্ন রুটে বাসের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, সারা দিনে ৫৫০টি বাসের পাশাপাশি আরও ৮৯৮টি ট্রিপ বাড়ানো হয়েছে, ফলে মোট ট্রিপের সংখ্যা প্রায় ৪২০০টি হয়ে উঠেছে। এই ট্রিপগুলো প্রতিদিন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রুটে চলাচল করছে।
বিশেষ করে রাসবিহারী, গড়িয়াহাট, কালীঘাট, রবীন্দ্র সদন মোড়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ রুটে চক্রাকার বাস চালানো হচ্ছে। এসব বাস দিনে ২৪টি ট্রিপ সম্পূর্ণ করছে। এছাড়াও, ২৬টি রুটে ১৫৬টি নতুন ট্রিপ যোগ করা হয়েছে। এই রুটগুলির মধ্যে হাতিশালা, শাপুরজি, উল্টোডাঙা, করুণাময়ী, বেহালা, বারাসত, কামালগাজি—সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রুট অন্তর্ভুক্ত।
পরবর্তী পরিকল্পনা এবং লক্ষ্যমাত্রা
পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে সরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ানো এবং যাত্রীদের সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। তবে, সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য পরিবহণ দফতর কাজ করছে। এর পাশাপাশি, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাসের সংখ্যা এবং ট্রিপও বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়া, নবান্ন কেন্দ্রিক রুটে বাসের ট্রিপ সংখ্যা পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ১০টি করা হয়েছে। এই সমস্ত পদক্ষেপের উদ্দেশ্য একটাই—যাত্রীদের জন্য আরও ভালো পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। এর ফলে, সরকারি বাসে যাতায়াত করা মানুষের জন্য আরও সাশ্রয়ী এবং সুবিধাজনক হবে।
এইচএমপিভি কোনও নতুন ভাইরাস নয়, দেশবাসীকে আশ্বস্ত করলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী
