সরকারি কর্মীদের জন্য বড় ঘোষণা! ৪% ডিএ বৃদ্ধি!
রাজ্যের সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর! মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) আরও ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বুধবার বাজেট পেশের সময় অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এই ঘোষণা করেন। নতুন হারে ডিএ কার্যকর হবে ১ এপ্রিল ২০২৫ থেকে, ফলে সরকারি কর্মীদের বেতনে বাড়তি টাকা যোগ হবে।
ডিএ বাড়ল, কিন্তু কেন্দ্রের সঙ্গে ফারাক কি কমল?
রাজ্য সরকারের এই ঘোষণার পর বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীরা ১৮% হারে ডিএ পাবেন, যা আগে ছিল ১৪%। তবে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা বর্তমানে ৫৩% হারে ডিএ পাচ্ছেন। অর্থাৎ, রাজ্যের কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের ৩৫% পার্থক্য এখনও রয়ে গেল।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে ডিএ বৃদ্ধি, ভোটের হিসাব নিকাশ?
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সরকারি কর্মচারীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে চেয়েছে রাজ্য সরকার। সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ডিএ বাড়ানোর, কারণ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের তুলনায় তাঁদের বেতন ও সুবিধা অনেকটাই কম।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া
ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি কর্মীরা শুধু বর্ধিত ডিএ-ই পাবেন না, পাশাপাশি পে কমিশনের টাকা-সহ অন্যান্য সুবিধাও পাবেন। ফলে তাঁদের মোট আয় অনেকটাই বাড়বে।”
ডিএ বাড়ানোর পেছনে কারণ কী?
🔹 কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি – রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বেশ কয়েক বছর ধরেই ডিএ বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন।
🔹 বিরোধীদের চাপ – বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি নেতারা ডিএ ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
🔹 বিধানসভা নির্বাচন – ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে, যেখানে সরকারি কর্মচারীদের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
🔹 কেন্দ্রের নতুন পে কমিশন ঘোষণা – সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অষ্টম পে কমিশন ঘোষণা করেছেন, যা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বেতন আরও বাড়িয়ে দেবে। তাই রাজ্য সরকারের উপর ডিএ বাড়ানোর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছিল।
কতটা উপকৃত হবেন সরকারি কর্মচারীরা?
রাজ্যের বর্ধিত ৪% ডিএ যুক্ত হলে সরকারি কর্মীদের বেতনে একটা বড় পরিবর্তন আসবে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের তুলনায় পার্থক্য এখনো অনেক বেশি, তবে কিছুটা হলেও অর্থনৈতিক স্বস্তি পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা।
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, “৪% ডিএ বৃদ্ধি আসলে কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণা। কেন্দ্রীয় কর্মচারীরা যেখানে ৫৩% ডিএ পাচ্ছেন, সেখানে মাত্র ১৮% হারে ডিএ দিয়ে কী হবে?”
অন্যদিকে, অর্থনীতিবিদদের মতে, রাজ্যের আর্থিক সংকটের মধ্যেও সরকার ডিএ বৃদ্ধি করেছে, যা সরকারি কর্মচারীদের মন জয় করার একটা কৌশল হতে পারে।
শেষ কথা
সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৪% ডিএ বৃদ্ধি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। তবে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের তুলনায় রাজ্যের কর্মচারীরা এখনও অনেকটাই পিছিয়ে। তাই ভবিষ্যতে রাজ্য সরকার আরও ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করে কি না, সেটাই দেখার বিষয়। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই পদক্ষেপ মমতা সরকারের জন্য কতটা লাভজনক হয়, সেটাই এখন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের নজরে।
“রাজ্যের বাজেট দিশাহীন!”— এক সুরে আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু, নওশাদ ও বাম-কংগ্রেস