পথ দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য জরুরি পরামর্শ!
প্রতি মিনিটে ভারতে ঘটে চলেছে বহু পথ দুর্ঘটনা, যার মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সময়মতো চিকিৎসার অভাবে গুরুতর আহত ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটে। তবে, সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নিলে এই পরিস্থিতি বদলানো সম্ভব। এইচপি ঘোষ হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট নিউরোসার্জন ডা. গোপাল আচারির মতে, দুর্ঘটনার পরে প্রথম এক ঘণ্টা, যা ‘গোল্ডেন আওয়ার’ নামে পরিচিত, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে চিকিৎসা শুরু করা গেলে রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যায়।
দুর্ঘটনার পর কী করবেন?
যদি কোনও দুর্ঘটনার সাক্ষী হন বা এর শিকার হন, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ অনুসরণ করা উচিত:
- শান্ত থাকুন এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিন: আতঙ্কিত না হয়ে প্রথমেই অ্যাম্বুলেন্স বা নিকটস্থ হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
- গুরুতর আঘাত শনাক্ত করুন: মাথায় আঘাত পেলে রোগীর অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, ঘন ঘন বমি বা মাথা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এ ধরনের উপসর্গ দেখলে দ্রুত নিউরোসার্জনের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- প্রাথমিক চিকিৎসা দিন: রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে চেপে ধরুন এবং রোগীকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন।
কেন মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল বেছে নেবেন?
ডা. আচারির মতে, পথ দুর্ঘটনায় আহত রোগীকে মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সর্বোত্তম বিকল্প। এখানে প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা এক ছাদের নিচে পাওয়া যায়। নিউরোসার্জারি, অর্থোপেডিকস, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট সহ আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকায় রোগী দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা পেতে পারেন।
ব্রেন ইঞ্জুরি এবং ট্রমাটিক ব্রেন ইঞ্জুরি
পথ দুর্ঘটনায় ব্রেন ইঞ্জুরি বা ট্রমাটিক ব্রেন ইঞ্জুরি (TBI) একটি সাধারণ ঘটনা। এর ফলে স্মৃতিভ্রংশ, মানসিক অস্থিরতা, কিংবা পক্ষাঘাতের মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে।
কী লক্ষণ দেখা দিতে পারে?
- মাথা ঘোরা
- বমি ভাব বা বমি
- স্মৃতি বিভ্রাট
- ঝাপসা দৃষ্টি
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
যদি এই লক্ষণগুলি দেখা যায়, অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করা অত্যন্ত জরুরি।
দুর্ঘটনা প্রতিরোধের কিছু সহজ উপায়
- সতর্কতা অবলম্বন করুন: সর্বদা ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলুন।
- সিটবেল্ট ও হেলমেট ব্যবহার করুন: দুই ও চার চাকার গাড়ি চালানোর সময় হেলমেট ও সিটবেল্ট বাধ্যতামূলকভাবে পরিধান করুন।
- মোবাইল ফোন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন: গাড়ি চালানোর সময় ফোনে কথা বলা বা মেসেজ করা থেকে বিরত থাকুন।
- মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না: নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো প্রাণঘাতী হতে পারে।
শেষ কথা
সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা পেলে দুর্ঘটনায় আহত রোগীর জীবন রক্ষা করা সম্ভব। পাশাপাশি, আমাদের সকলেরই উচিত ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলা এবং সচেতন থাকা, যাতে দুর্ঘটনা কমানো যায়। সচেতনতা এবং দ্রুত সিদ্ধান্তই পারে অনেক প্রাণ বাঁচাতে।
নিরাপদ থাকুন, সুস্থ থাকুন।

